অভয়াশ্রমের দিকে

তোমার নিকট থেকে দূরে চলে গিয়ে আরো বেশি
কাছে চলে এসেছি সুপ্রিয়া। আজ এইখানে এই
সরাইখানায় বড় একা-একা সংগীতবিহীন শুয়ে থাকি,
ব’সে ভাবি, পায়চারি করি রাজবন্দীর ধরনে।

শোনা যায় কোলাহল আর বন্য পশুর হুঙ্কার,
মাঝে মাঝে আর্তরব। অসহায় তাকাই দেয়ালে,
যেখানে সম্পূর্ণ তুমি প্রস্ফুটিত; কাছে গিয়ে মুখ
প্রগাঢ় চুম্বন করি, স্তনে রাখি হাত। মনে হয়
স্বপ্নের গভীর নাভিমূলে স্থাপিত আমার ওষ্ঠ।
তবে কি এখন শুধু স্বপ্নের সঙ্গেই সহবাস?

যখন আঁধার ব্যেপে আসে কংক্রিটের মহারণ্যে,
হতাশা পাতালে ঠেলে দেয় আমাকে হ্যাঁচকা টানে;
লালনের মতো কেউ উদাসী হাওয়ার গান গেয়ে
জপান তোমারই নাম পরবাসে। ছলছল করে
স্বচ্ছ জল হৃদয়ের কানায় কানায়। ইন্তেজারি
প্রহরে প্রহরে; আমরা তো সব স্বপ্নেরই সন্তান।

স্বপ্নের চাতাল চুরমার হয়ে গেলে ঝাঁপ দিই
জ্যোৎস্নাচমকিত সরোবরে, শরীরে পানির ফোঁটা
নিয়ে খুব আস্তে সুস্থে ওপারে মসৃণ উঠে পড়ি,
সর্বব্যাপী প্রেমহীনতায় তোমার সোনালী হাত
ধ’রে এক অভয়াশ্রমের দিকে স্বপ্নের ভেতরে
হাঁটি, যাকে লোকে ভালোবাসা ব’লে সুখ্যাত করেছে।