লোকটা ভাবে

সবাই ঘুমিয়ে আছে সে সাধের
বিছানায় শেষ রাতে। এখন লোকটা ভাবে বসে-
কাগজ কলম কালি নিয়ে
কাটিয়ে দিয়েছি কতকাল। শত শত
পাতা সাজিয়েছি দিনরাত অনুরাগে,
কখনো কখনো
একটি শব্দের জন্যে উড়িয়ে ধৈর্যের পাল বসে
রয়েছি বিমর্ষ পাটাতনে। শব্দগুলি উঁকিঝুঁকি
দিয়ে দ্রুত শূন্যে লুটোপুটি খেয়ে ছুটে
পালিয়েছে কৌতুকের ঠাটে।

এখন লোকটা ভাবে বাইরে তাকিয়ে-
দূরের আকাশ আর কাছের প্রান্তর, স্তব্ধ নিশুত রাতের
পথঘাট, বসন্তের অস্থির কোকিল, হেমন্তের
নির্ভেজাল শিশির, বাঁশের ঝাড় রেখেছি খাতার
পাতায় কত যে তার হিশেব কে রাখে? আর গৌরী
বারবার সহজেই দাঁড়িয়েছি, বসেছে, রয়েছে

শুয়ে নম্র গোধূলি বেলায়
কলমের নিবিড় ছোঁয়ায়
এখানে কাগজ জুড়ে। কখনো অনেক মানুষের
কলরব রাজপথসহ কী প্রবল ঢুকে পড়ে
খাতার নির্জনতায়। একটি তারা কি খসে গেল
পতনের ঝোঁকে? এমনও তো হয়েছে কখনো
পরি উড়ে এসে খুব নিরালা জ্যোৎস্নায়
অক্ষরের রূপ নিয়ে বেড়িয়েছে সফেদ পাতায়।

রাত্তিরে লোকটা ভাবে টেবিলে বিশ্রান্ত মাথা রেখে-
এই যে অক্ষর সারি সারি
ছড়ানো গড়ানো ডানে বামে,
এ নিয়ে পারি না আর, বমন উদ্রেক করে শুধু।

পরদিন ভোরবেলা লোকটা আবার
কাগজ কলম হাতে অক্ষরের প্রতিমা বানায়।