ক্লিনিক থেকে ফেরার পথে

দূর থেকে বাড়িটাকে মনে হয় অনেক
কান্নার বাষ্পরাশি আর হাসির রৌদ্র দিয়ে তৈরি।
কখনো কখনো মনে হয়, একজন প্রত্যাশা-বৃক্ষ
তার প্রসন্ন ছায়া বিছিয়ে
দাঁড়িয়ে আছেন-সেখানে আমার মাকে
তাঁর তিরাশি বছরের রৌদ্রছায়া সমেত
রেখেছি। তাঁর হৃৎপিণ্ডে
বড় রকমের একটি ধাক্কা লেগেছে।

দু’দিন পর যখন
বেডের পাশে তাঁর হাত ধরে
বসেছিলাম, তিনি তন্দ্রাচ্ছন্নতার মধ্যেও
ঘরের ভাড়া কত জানতে চাইলেন উদ্বিগ্ন কণ্ঠে। মা আমার,
নিজের শারীরিক যন্ত্রণা এবং
পুত্রের আর্থিক সঙ্গতিকে এমন মুহূর্তেও
তুলাদণ্ডে স্থাপন করলেন দেখে
আমার বুকের ভিতর কেমন হু হু করে ওঠে।

‘কখন আমি বাড়ি যাব’ বাক্যটি
কেন যে তিনি আবৃত্তি করছেন বারবার,
কিছু বুঝেও না বোঝার ভান করি।
এই রাতে এখন আমাকে যেতে হবে তাঁকে ছেড়ে,
তাঁর সঙ্গে রাতে থাকবে আমার কোনো বোন
অথবা অন্য কোনো নারী
রোগশয্যার পাশে মেয়েদের করতে হয় রাত্রিযাপন!
এখন আমার খুলির ভেতর, শিরায়
বুলবুলি মতো নাচানাচি শুরু করেছে
একটি পঙ্‌ক্তি; ঐ তো আমার লেখা আমাকে ডাকছে।