০৯. স্বামীর সেক্রেটারির প্রতি কী ধরনের ব্যবহার করবেন

০৯. স্বামীর সেক্রেটারির প্রতি কী ধরনের ব্যবহার করবেন

কোনো পুরুষের সময়বিশেষ প্রিয়তম বন্ধু হল তার সেক্রেটারী। একজন সত্যিকার যোগ্য সেক্রেটারীর সাহায্যে কোনো পুরুষ তার দৈনন্দিন কাজের সমাধান চমৎকার আর সুচারুভাবেই করে ফেলতে পারেন। জীবন অগ্রগামী হওয়ার ক্ষেত্রে সেক্রেটারীর সাহায্য একান্ত অপরিহার্য। এখন প্রশ্ন হল একজন বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন স্ত্রী এর কী রকম অর্থ করতে পারেন?

সেক্রেটারী আর স্ত্রী এই দুজনেরই উদ্দেশ্য কিন্তু এক-আসল মানুষটির জীবনের অগ্রগতি বজায় রাখা। এই ব্যক্তিটির কাজকর্মের শেষ ফল লাভের মধ্যে স্ত্রী আর সেক্রেটারী দুজনেরই একটা সীমা নির্দেশক স্থান থাকে। যেহেতু এই দুজনেরই কাজের মূল সুরটি এক, তাই এটাই হওয়া প্রয়োজন যে তারা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে হবেন পরস্পরের পরিপূরক।

বহু ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে, দুজন স্ত্রীলোক সম্পূর্ণ বিপরীত মনোভাব নিয়েই হাজির হন। একে অপরের প্রতিপত্তিতে বিদ্বেষ পোষণ করে চলতে থাকেন। কিন্তু আমার বিশ্বাস দুজনের সুসংহত সম্পর্ক গড়ে তোলার কাজে স্ত্রীর ভূমিকাই হয় সব থেকে জরুরি। আমার মনে হয় সামান্য কয়েকটা নিয়ম মেনে চললেই স্ত্রী হিসেবে প্রত্যেকেই স্বামীর সেক্রেটারী সম্পর্কে বিদ্বেষ ভাব থেকে মুক্ত হয়ে চমৎকার এক সম্পর্ক আর সহযোগিতার বাতাবরণ গড়ে তুলতে পরেন। এখন আমারা নিম্নে কয়েকটি নিয়মের উল্লেখ করব :

১। স্বামীর সেক্রেটারীর প্রতি স্ত্রী কি বিদ্বেষ পোষণ না করে পারেন? সুশ্রী সুন্দরী সেক্রেটারী প্রায় প্রত্যেকেই চেয়ে থাকেন, কেননা প্রতিষ্ঠানে একজন সুন্দরী ফিটফাট চেহারার সেক্রেটারী অফিসারকে শ্রীমণ্ডিত করে তোলে। বহু স্ত্রীই আছেন যারা সেক্রেটারী যদি মহিলা হন তবে তার প্রতি ঈর্ষা পোষণ করে থাকেন। তারা ধারণা করেন যে, সেক্রেটারীরা শুধু তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে আর পুরুষদের কাছে প্রিয় পাত্রী হওয়ার জন্যই মোটা মাইনে আর সুযোগ লাভ করে থাকে।

কিন্তু সেক্রেটারীর চাকরি সহজলভ্য নয়। একজন ভালো জাতের অফিস সেক্রেটারীকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় ঠিক যেমনটি গৃহিণী করে থাকেন অথচ পুরস্কার পাওয়া তেমন কুসুমাস্তীর্ণ নয়।

সেই কারণে সেক্রেটারীদের বেশ প্রফুল্লতা বজায় রেখে কাজ করতে হয়। স্ত্রীরাও যদি এই কথাটা চিন্তা করে দেখেন তাহলে ভালোই হয়। তাই স্ত্রীদের উচিত সেক্রেটারীদের প্রতি বিদ্বেষ ভাবটি মুছে ফেলা

২। কোনো সেক্রেটারীকে দিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করানো উচিত নয় : এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে লক্ষ্য করা যায় যে, অফিসের যিনি কর্তাব্যক্তি তিনি তার বহু ব্যক্তিগত কাজ সেক্রেটারীকে দিয়ে করাতে চান। এই ধরনের কাজ খুবই অন্যায়। আর সেক্রেটারীর পক্ষেও অফিসের কর্তাব্যক্তির মুখের ওপর কিছু বলা কঠিন হয়ে ওঠে। সেক্রেটারীরা যখন কাজে যোগ দেন তখন তারা ধরেই নেন যে, তাদের অফিস বসের বহু ব্যক্তিগত কাজই করে দিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় যে বসের পারিবারিক অনুষ্ঠানেও যোগদান করে অতিথি আপ্যায়নের কাজটিও করে দিতে হয়, অথচ এই সব বাড়তি কাজের জন্য কখনোই পুরস্কার পাওয়া যায় না।

৩। অতিরিক্ত কাজের জন্য মুল্য দেওয়া উচিত : একটা প্রচলিত সত্য যে মানুষ তার যোগ্য কাজের মূল্য চায়, সে তার প্রাপ্য প্রশংসা চায়। কোনো কোনো সময় সেক্রেটারি এমন অনেক কাজ বসের জন্য করে যা অনেক ক্ষেত্রেই তার স্ত্রীরও উপকারে লাগে। যদিও অনুরোধ স্ত্রীর কাছ থেকে আসে না তবুও স্ত্রীরা যেভাবেই হোক উপকৃত হয়ে থাকেন। সেক্রেটারীরা সবসময় কাজের মূল্য পেতে আগ্রহী।

যে সব স্ত্রীদের স্বামী খুব বড় প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত থাকেন, তাদের কখনোই স্বামীর সেক্রেটারীর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের খুব একটা সাক্ষাৎ ঘটে না। কিন্তু সাধারণ মানুষের এটা ঘটে না। পারস্পরিক যোগাযোগ তাদের পক্ষে অনেক সহজ। এক্ষেত্রে তাই উচিত সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলা।

নিচের কয়েকটি নিয়ম যদি আমরা মেনে চলি তাহলে আমরা উপকৃত হতে পারবো :

১। যে কোনো রকম সন্দেহের ভাব ত্যাগ করুন।

২। ঈর্ষার ভাব পোষণ করা উচিত নয়।

৩। সেক্রেটারীকে কখনও ব্যক্তিগত কাজে লাগানো উচিত নয়।

৪। সেক্রেটারীকে কখনও সহানুভূতি বা তিরস্কার করা উচিত নয়।

৫। যখনই সম্ভব হবে সেক্রেটারীকে কাজের মূল্য দেওয়া উচিত।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *