৩৭. শেষ অধ্যায় – উনিশ বছর পর

শেষ অধ্যায়. উনিশ বছর পর 

সেবছর হেমন্ত যেন হঠাৎ করেই এল। সেপ্টেম্বরের প্রথম দিনটি যেন কড়কড়ে সোনালী আপেলের মত। একটি ছোট পরিবার ঝুঁকে পড়ে রাস্তা পার হচ্ছে ওপাশের পুরোনো ঝুলকালিতে মাখা স্টেশনটার দিকে যাবার জন্য। গাড়ির ধোয়া আর রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে চলা লোকদের নিঃশ্বাস ঠাণ্ডা বাতাসের মধ্যে যেন মাকড়শার জালের মত ছড়িয়ে পড়ছে। মালামাল ঠেলে নেয়ার ট্রলির উপর বড় দুটি পাখির খাঁচা, ঘরঘর শব্দে পরিবারের বাবা আর মা ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে। পেঁচাগুলো খাচার ভেতর রাগ হয়ে গুমগুম করে ডাকছে। একটি লাল চুলের মেয়ে বাবার হাত ধরে কাঁদতে কাঁদতে ভাইদের অনুসরণ করছে। 

আর বেশি সময় বাকি নাই, তুমিও ওদের মত সেখানে যাবে, হ্যারি বলল।

লিলি নাক টেনে বলল, আরো দুবছর, আমি এখন যেতে চাই! 

স্টেশনের নিয়মিত যাত্রীরা উৎসুক হয়ে পেঁচাগুলোকে দেখছে। পরিবারটি নয় নাম্বার এবং দশ নাম্বার প্লাটফর্মের প্রতিবন্ধকতার দিকে আগাচ্ছে। হৈচৈ এর ভেতর থেকে অ্যালবাসের গলার শব্দ হ্যারির কানে এসে পৌঁছল। তার ছেলেরা আবার গাড়ির ভেতর করতে থাকা সেই তর্ক জুড়ে দিয়েছে। 

আমার হবে না, স্লিথারিনে আমার জায়গা হবে না!

জেমস, একটু ক্ষান্ত দেবে? মা জিনি বলল। 

আমি শুধু বলেছি তার হয়তোবা সেখানে, জেমস বলল। সে ছোট ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে হাসল। এতে তো দোষের কিছু নেই। সে হয়তোবা স্লিথার 

জেমস হঠাৎ মায়ের চোখের দিকে তাকিয়েই থেমে গেল। পাঁচ পটার এক সঙ্গে প্রতিবন্ধকতার দিকে আগালো। ঘাড় ফিরিয়ে ছোট ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে জেমস মায়ের কাছ থেকে ট্রলিটা নিল। এবং দৌড় শুরু করল। এক মুহূর্ত পরেই সে অদৃশ্য হয়ে গেল। 

তোমরা আমাকে চিঠি লিখবে, লিখবে না? অ্যালবাস তার ভাইকে একটু সময়ের জন্য অনুপস্থিত দেখে সেই সুযোগে বাবা-মাকে বলল। 

তুমি চাইলে প্রতিদিন লিখব, জিনি বলল।

প্রতিদিন না, অ্যালবাস বলল। জেমস বলেছে অধিকাংশ ছাত্ৰই নাকি তাদের বাড়ি থেকে মাসে একটি চিঠি পায়। 

জিনি বলল, গত বছর আমরা জেমসের কাছে প্রতি সপ্তাহে তিনটি করে চিঠি দিয়েছি। 

এবং তুমি হগোয়ার্টে তোমার ভাইয়ের সব কথা বিশ্বাস করবে না, হ্যারি মাঝখান থেকে বলল। তোমার ভাই সব সময় হাসি তামাশা পছন্দ করে। 

পাশাপাশি দাঁড়িয়ে তারা দ্বিতীয় ট্রলিটি সামনে ঠেলে আগাতে থাকল। এরপর গতি বাড়িয়ে দিল। ওরা ব্যারিয়ারের কাছে যেতেই অ্যালবাস একটু ককিয়ে উঠল। কিন্তু কোনো বাধার সৃষ্টি হল না। বরং ওরা গোটা পরিবার পৌনে দশ প্লাটফর্মে গিয়ে উপস্থিত হল। স্টেশনটিতে রংচঙে হগোয়ার্টস এক্সপ্রেসের সাদা বাষ্পে অনেকটা কুয়াশার মত অস্পষ্ট হয়ে আছে। অস্পষ্ট শরীরগুলো কুয়াশার ভেতর দিয়ে ছুটে যাচ্ছে। জেমসের শরীরটাও ইতিমধ্যেই অস্পষ্ট হয়ে গেছে। 

ওরা কোথায়? অ্যালবাস উদ্বেগের সঙ্গে মাকে জিজ্ঞেস করল। সে আবছায়া মত দেখা যায় এমন শরীরগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে। ওরা পাটফর্মের দিকে নেমে যাচ্ছে। 

আমরা ওদের খুঁজে বের করব, জিনি আশ্বস্ত করে বলল।

কিন্তু ইঞ্জিনের সাদা বাষ্প আরো ঘন হয়ে এসেছে। এখন আর কারো মুখ চেনা যায় না। ওদের গলার শব্দ এখন অস্বাভাবিক রকমের উঁচু শোনাচ্ছে। হ্যারি ভাবল পার্সি হয়তো ব্রুমস্টিক রেজুলেশন নিয়ে উচ্চস্বরে আলোচনায় মেতে উঠেছে। সে খুশি মনে ব্যাখ্যা দিয়ে যাচ্ছে এমনকি কাউকে হ্যালো না বলে… 

জিনি হঠাৎ বলে উঠল, আমার মনে হয় ওরা আসছে। 

কুয়াশার ভেতর চারজনের একটি দল এসে শেষ কোচটির পাশে দাঁড়ালো। হ্যারি, জিনি, অ্যালবাস এবং লিলি ওদের কাছে যেতেই চেহারাগুলো চেনা গেল। 

হাই, অ্যালবাস বলল। তার কণ্ঠে একটি স্বস্তির সুর। 

রোজ ইতিমধ্যেই তার নতুন চকচকে হগোয়ার্টের গাউন পরেছে। সে অ্যালবাসের দিকে ঝুকল। 

তাহলে ঠিকমতো পার্ক করতে পেরেছ? রন হ্যারিকে জিজ্ঞেস করল। আমি পেরেছি, হারমিয়ন বিশ্বাস করতো যে আমি মাগল ড্রাইভিং টেস্ট পার করতে পারতাম, তুমি বিশ্বাস করতে? তার ধারণা আমি বুঝি ড্রাইভিং পরিক্ষককে হত্যাশা করবো। 

না, আমি তা ভাবিনি, হারমিয়ন বলল। তোমার উপর আমার পুরোপুরি আস্থা আছে। 

আসল কথা হল সত্যিই আমি তাকে হতাশ করেছিলাম, রন ফিসফিস করে হ্যারিকে বলল। ওরা কথা বলতে বলতে অ্যালবাসের ট্রাঙ্ক আর পেঁচার খাচা ট্রেনে তুলে দিল। আমি শুধু ভুলে গিয়েছিলাম পাশের আয়নাটির দিকে দেখতে, দেখা যাক কি হয়। আমি এজন্য সুপারসেনসরি চার্ম ব্যবহার করতে পারি। 

প্লাটফর্মে ফিরে এসে ওরা লিলি এবং রোজের ছোট ভাই হুগোকে দেখতে পেল। ওরা আলোচনা করছে হগগায়ার্টসে পৌঁছে কোন হাউসে বাছাই হতে পারে তা নিয়ে। 

যদি তুমি গ্রিফিনডোরে চান্স না পাও তাহলে আমরা তোমাকে ফিরিয়ে আনতে পারি, রন বলল। কিন্তু কোনো চাপ দিয়ে না। 

রন!

লিলি এবং হুগো হাসল। কিন্তু অ্যালবাস এবং রোজ চুপ হয়ে আছে। 

সে আসলে এটা সত্যি করে বলেনি, হারমিয়ন এবং জিনি বলর। কিন্তু রনের সেদিকে খেয়াল নেই। হ্যারির চোখ অনুসরণ করে সে পঞ্চাশ গজ দূরের দিকে তাকিয়ে মাথা দোলালে। কুয়াশা একটু সময়ের জন্য পাতলা হয়ে এসেছে এবং স্পষ্টভাবে তিনজনকে দাঁড়ানো দেখা গেল। 

দেখ ওরা কারা। 

ড্র্যাকো ম্যালফয় তার স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার কালো কোটের বোতামগুলো গলা পর্যন্ত উঠে গেছে। তার চুলগুলো আরো কমে এসেছে এবং সে কারণে খোতমাটা আরো সরু মনে হচ্ছে। নতুন প্রজন্মের ছেলেটির চেহারা অনেকটাই ড্র্যাকোর মতই, ঠিক হ্যারির ছেলে অ্যালবাসের যেমন হ্যারির মত। ড্র্যাকো দেখল হ্যারি, রন, জিনি এবং হারমিয়ন তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে সামান্য একটু মাথা দুলিয়ে অন্য দিকে ফিরল। 

তাহলে এই হচ্ছে ছোট স্করপিয়াস, রন বলল। রোজি, তোমার ওকে প্রত্যেক পরীক্ষায় হারানো চাই। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে তুমি তোমার মায়ের মাথা পেয়েছ। 

রন, দোহাই লাগে, হারমিয়ন বলল। কিছুটা দৃঢ়তা এবং কিছুটা বিস্ময়ের সঙ্গে। স্কুল শুরুর আগেই তাদেরকে একজনের পেছনে আরেকজনকে লাগতে শিখিও না! 

তোমার কথা ঠিক, সরি, রন বলল। কিন্তু নিজে কোনো যুক্তি খুঁজে পেল না। বলল, তারপরও ওর সঙ্গে খুব বন্ধুত্বের দরকার নেই রোজি। গ্র্যানডাড উইসলি কখনো তোমাকে ক্ষমা করবে না যদি তুমি কোনো পিওর ব্লাডকে বিয়ে কর। 

হেই! 

জেমস এসে উপস্থিত হল। সে তার ট্রাঙ্ক, ট্রলি এবং পেঁচা রেখে চলে এসেছে। নতুন সংবাদ নিয়ে সে উল্লসিত হয়ে উঠেছে। 

টেডি চলে এসেছে! সে হাত দিয়ে পেছনের দিকে বাষ্পের কুয়াশার দিকে দেখিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ করে বলল। এইমাত্র তাকে দেখলাম। চিন্তা করো তো সে কি করছে? সে ভিক্টোরেকে চুমু খাচ্ছে! 

সে বড়দের দিকে তাকালো। স্পষ্টতই কারো ভেতর কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখে হতাশ হল। 

আমাদের টেডি! টেডি লুপিন! চুমু খাচ্ছে আমাদের ভিক্টোরেকে! আমাদের কাজিন! এবং আমি টেডিকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি কী করছ-

তুমি ওদেরকে বাধা দিয়েছ? জিনি বলল। তুমি আসলেই অনেকটা রনের মত 

-এবং সে বলল যে ওকে সে বিদায় জানাতে এসেছে। তারপর সে আমাকে দূরে সরে যেতে বলল। সে তাকে চুমু খাচ্ছে! জেমস আবারো বলল। যেন সে উদ্বিগ্ন। কিছুতেই নিজের কাছে পরিস্কার হতে পারছে না।

ওহ খুবই ভালো হবে যদি ওরা বিয়ে করে! ফিসফিস করে লিলি আনন্দের সঙ্গে বলল। টেডি তাহলে পরিবারের একটা অংশ হয়ে যাবে। 

সে ইতিমধ্যেই সপ্তাহে চারবার ডিনারে যোগ দিয়েছে, হ্যারি বলল। তাহলে কেন আমরা তাকে আমাদের সঙ্গে বাস করতে বলছি না?

 ইয়া, জেমস আগ্রহ নিয়ে বলল। আমি আল এর সঙ্গে একসঙ্গে আমার রুম শেয়ার করতে পারি, টেডি আমার রুমটি পেতে পারে! 

না, হ্যারি দৃঢ়ভাবে বলল। তুমি এবং আল তখনই রুমটি শেয়ার করতে পারবে যখন আমি চাইব যে ঘরটি ভেঙে ফেলতে। 

সে বহু আঘাত পাওয়া হাতের ঘড়িটির দিকে তাকালো। 

এখন প্রায় ১১ টা বেজে গেছে। তুমি বরং ট্রেনে উঠে যাও। 

নেভিলকে আমাদের ভালবাসা দিতে ভুলে যেওনা, জিনি ওকে জড়িয়ে ধরে বলল। 

মাম! আমি কোনো প্রফেসরকে ভালবাসা দিতে পারি না!

কিন্তু তুমি তো নেভিলকে চেনো-

জেমস চোখদুটো নিজে নিজেই ঘোরালো।

স্কুলের বাইরে, হা, কিন্তু স্কুলের ভেতর তিনি হচ্ছেন প্রফেসর লঙবটম, তাই? আমি হেঁটে গিয়ে হারবলজিতে ঢুকে তাকে ভালবাসা জানাতে পারি না….। 

মায়ের বোকামি দেখে সে মাথা নাড়ল। সে অ্যালবাসের দিকে লাথির ভাব করে তার অনুভূতিটা প্রকাশ করল। 

তোমার সঙ্গে পরে দেখা হবে আল। থ্রেস্টালের দিকে নজর রেখ।

 আমি ভেবেছিলাম সেগুলো অদৃশ্য। তুমি তো বলেছিলে সেগুলো অদৃশ্য! 

কিন্তু জেমস কোনোক্রমে হাসল। মাকে চুমু খেতে দিল। বাবাকে দ্রুত একবার জড়িয়ে ধরল। তারপর লাফিয়ে দ্রুত ট্রেনে উঠে গেল। তারা দেখল সে হাত উঁচু করেছে, তারপর করিডোর ধরে দৌড়ে বন্ধুদের খোঁজে চলে গেল। 

জিনি অ্যালবাসকে চুমু দিল।

ক্রিসমাসের সময় তোমার সঙ্গে দেখা হবে। 

বাই, আল, হ্যারি বলল। তার ছেলে তাকে জড়িয়ে ধরল। ভুলে যেও না যে হ্যাগ্রিডরা তোমাকে পরের শুক্রবার চা খেতে দাওয়াত দিয়েছে। পিভসদের সঙ্গে মেলামেশা করো না। কারো সঙ্গে দ্বন্দ্ব করতে যেও না যে পর্যন্ত তুমি শিক্ষা না পাও কীভাবে করতে হয়। জেমসকে তোমাকে খেপাতে দিয়ো না। 

আমি স্নিথারিনে গেলে কী হবে? 

কথাটি ফিসফিস করে শুধু তার বাবার জন্যই। হ্যারি জানতো যে একমাত্র বিদায়ের মুহূর্তে অ্যালবাম প্রকাশ করতে পারে যে কতটা ভয় সে পাচ্ছে। হ্যারি নিচু হয়ে অ্যালবাসের মুখটি একটু উপরে রেখে বসল। হ্যারির তিন সন্তানের মধ্যে একমাত্র অ্যালবাসই তার মা লিলির মত চোখ পেয়েছে। 

অ্যালবাস সেভেরাস, হ্যারি শান্ত কণ্ঠে বলল। যাতে জিনি ছাড়া আর কেউ শুনতে না পায়। এবং জিনি কৌশলে এমন ভাব করলো যেন রোজের দিকে সে হাত নেড়ে বিদায় জানাচ্ছে। রোজ ইতিমধ্যে ট্রেনে উঠে গেছে। তোমার নাম হগোয়ার্টসের দুজন হেডমাস্টারের নামে রাখা হয়েছে। তাদের একজন শ্লিথারিনের এবং তিনি সম্ভবত আমার জানা সবচেয়ে সাহসী মানুষ। 

কিন্তু শুধু বল 

-তাহলে স্লিথারিন হাউস একজন অসাধারণ ছাত্র পাবে, তাই না? এটা আমাদের কাছে কোনো বড় বিষয় নয় আল। কিন্তু তোমার কাছে যদি এটা খুব অসুবিধার মনে হয় তাহলে তুমি স্লিথারিন রেখে গ্রিফিনডোরে যেতে পারবে। সটিং হ্যাট তোমার পছন্দটাকে বিবেচনা করবে। 

সত্যি?

আমার ক্ষেত্রে তাই করেছিল। হ্যারি বলল। 

সে এ কথাটি কখনো তার কোনো সন্তানকে বলেনি। এবং সে অ্যালবাসের মুখে বিস্ময় দেখতে পেল। কিন্তু রঙ ঝকঝকে ট্রেনটির দরোজাগুলো বন্ধ হতে শুরু করেছে। অস্পষ্টভাবে লাইন ধরে দাঁড়ানো বাবা মায়েরা এগিয়ে গেল সন্তানদের চুমু দিয়ে বিদায় জানাতে। অ্যালবাস লাফ দিয়ে বগিতে গিয়ে উঠল এবং জিনি তার পেছনের দরোজাটি বন্ধ করে দিল। ওদের কাছাকাছিই ছাত্ররা জানালা দিয়ে ঝুলে আছে। ট্রেনের ভেতরে এবং বাইরে প্রচুর সংখ্যক মুখ দেখা যাচ্ছে। সবাই মনে হল হ্যারির দিকে তাকিয়ে আছে। 

ওরা সবাই দেখছে কেন? অ্যালবাস জানতে চাইল। সে এবং রোজ ঘুরে অন্যদের দিকে তাকালো। 

এ নিয়ে তুমি ভেবো না, হ্যারি বলল। আমি সবার কাছে খুবই বিখ্যাত।

অ্যালবাস, রোজ, হুগো এবং লিলি হাসল। ট্রেনটি চলতে শুরু করেছে। হ্যারি ট্রেনের পাশাপাশি হাঁটতে থাকল। তার ছেলের পাতলা মুখটির দিকে তাকিয়ে আছে। উত্তেজনায় হ্যারির মুখটি পুড়ে যাচ্ছে। হ্যারি হাসতে থাকল, হাত নাড়তে থাকল। যদিও তার ভেতর বিয়োগ বেদনা হচ্ছে। হ্যারি দেখছে তার ছেলে তার কাছ থেকে সরে যাচ্ছে….। 

ট্রেনের শেষ বাষ্প হেমন্তের বাতাসের ভেতর মিশে আছে। ট্রেনটি একদিকে বাঁক নিল। হ্যারি হাত তখনো উঁচু করে আছে বিদায় জানাতে। 

সে ভালই থাকবে, জিনি বিড়বিড় করে বলল। 

হ্যারি তার দিকে তাকিয়ে অন্যমনস্কভাবে হাতটি নিচে নামালো। তারপর কপালের জ্বলজ্বল করা স্কারটিতে হাত দিয়ে স্পর্শ করল। 

আমি জানি সে ভালই থাকবে। 

স্কারটি গত উনিশ বছর ধরে হ্যারিকে কোনো যন্ত্রণা দেয়নি। সব কিছুই ঠিকই ছিল। 

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *