বুঝিয়ে বলা

ও শ্যামাদাস! আয় ত দেখি ব’স্ তো দেখি এখেনে,
সেই কথাটা বুঝিয়ে দেব পাঁচ মিনিটে দেখে নে।
জ্বর হয়েছে? মিথ্যে কথা! ওসব তোদের চালাকি-
এই যে বাবা চেঁচাচ্ছিলে, শুনতে পাইনি? কালা কি?
মামার ব্যামো? বদ্যি ডাকবি? ডাকিস না হয় বিকেলে;
না হয় আমি বা’লে দেব বাঁচ্‌বে মামা কি খেলে।
আজকে তোকে সেই কথাটা বোঝাবই বোঝাব-
না বুঝবি ত মগজে তোর গজাল মেরে গোঁজাব।
কোন্ কথাটা? তাও ভুলেছিস্? ছেড়ে দিছিস্ হাওয়াতে?
কি বলছিলেম পরশু রাতে বিষ্টু বোসের দাওয়াতে?
ভুলিস্‌নি ত বেশ করেছিস, আবার শুনলে ক্ষেতি কি?
বড় যে তুই পালিয়ে বেড়াস্, মাড়াসনে যে এদিক্ই!
বলছি দাঁড়া, ব্যস্ত কেন? বোস্ তাহলে নিচুতেই-
আজকালের এই ছোক্‌রা গুলোর তর্ সয় না কিছুতেই।
আবার দেখ! বসলি কেন? বই গুলো আন্ নামিয়ে-
তুই থাক্‌তে মুটের বোঝা বইতে যাব আমি এ?
সাবধানে আন, রছি দাড়া- আমাকেই ঘামালি-
এই খেয়েছে! কোন্ আক্কেলে শব্দকোষটা নামালি?
ঢের হয়েছে! আয় দেখি তুই বোস্ ত দেখি এদিকে-
ওরে গোপাল, গোটা কয়েক পান দিতে বল্ খেঁদিকে।
বলছিলাম কি, বস্তুপিন্ড সূক্ষ্ম হতে স্থূলেতে,
অর্থাৎ কিনা লাগছে ঠেলা পঞ্চভূতের মূলেতে-
গোড়ায় তবে দেখ্তে হবে কোত্থেকে আর কি ক’রে,
রস জমে এই প্রপঞ্চময় বিশ্বতরুর শিকড়ে।
অর্থাৎ কিনা, এই মনে কর্ রোদ পড়েছে ঘাসেতে,
এই মনে কর্, চাঁদের আলো পড়লো তারি পাশেতে-
আবার দেখ! এরই মধ্যে হাই তোলবার মানে কি?
আকাশ পানে তাকাস্ খালি, যাচ্ছে কথা কানে কি?
কি বল্লি তুই? এ সব শুধু আবোল তাবোল বকুনি?
বুঝতে হলে মগজ লাগে, ব’লেছিলাম তখুনি।
মগজভরা গোবর তোদের হচ্ছে ঘুঁটে শুকিয়ে,
যায় কি দেওয়া কোন কথা তার ভিতরে ঢুকিয়ে?-
ও শ্যামাদাস! উঠলি কেন? কেবল যে চাস্ পালাতে!
না শুনবি ত মিথ্যে সবাই আসিস্ কেন জ্বালাতে?
তত্ত্বকথা যায় না কানে যতই মরি চেঁচিয়ে-
ইচ্ছে করে ডান্‌পিটেদের কান মলে দি পেঁচিয়ে।