একটি কবিতা লিখত গিয়ে

একটি কি দু’টি শব্দ মেদুর বিকেলে সাদা চুলে
আঙুল বুলিয়ে দেয়, গুঞ্জরণ তোলে;
বহুদিন পর খাতা খুলে
বসে যাই নিরিবিলি, হট্ররোলে
মেতে আছে রাস্তা, থাক। পরুর খাটাল থেকে আসে
প্রসূতি গাভীর ডাক মাঝে-মাঝে কয়েকটি কাক
গোধূলি আমার আগে নিস্তব্ধ আকাশে
স্বরের আঁচড় কেটে দিতে চায়। ঐতো উন্মুক্ত বইয়ের তাক
আমাকে অভয় বাণী শোনায় নিঃশব্দে কল্যাণের; খোলা খাতার পাতায়
কলম চালাই দ্রুত, একটি কবিতা লিখে ফেলে
আগুনের আঁচ থেকে শান্ত শুভ্রতায়
বিলীন হবার আকঙ্খায়। তাল কাটে, বলপেন ঠেলে ঠেলে
ক্লান্ত হই, তবু কিছুতেই
বাকবিভূতির ছটা কাগজের বুকে নৃত্যপর
নয়, সুন্দরের কংকালেরও দেখা নেই;
যুদ্ধাহত সৈনিকের মতো পড়ে থাকে কিছু বেখাপ্পা অক্ষর।

ঘর্মাক্ত চেয়ার ছেড়ে শীর্ণ বারান্দায় যাই, ঘরে
পায়চারি করি, চোখ রাখি আসমানে, অস্থিরতা
সত্তায় ফোটায় আলপিন, আমি ব্যর্থতার চরে
ব্যথিত প্রেতের মতো একা-একা ঘুরি, বিষলতা
ভীষণ জড়িয়ে ধরে, পথ চলা দায়
ব্যেপে-আসা কুয়াশায়, ঠোঁটে এ কেমন অহিফেন?
খাতায় এ কার ছায়া কাঁপে? ক্ষণে ক্ষণে কান্না পায়,
সস্নেহে রবীন্দ্রনাথ আমার চোখের জল মুছিয়ে দিলেন।
২৯।৪।৯১