কাঠগড়ায়

শেষতক কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলো আমাকে
যদিও বুঝতে পারিনি মাথামুণ্ডু
কী আমার অপরাধ এবং কার কাছে
কাঠগড়ায় চারদিকে ঢেউয়ের ঝাপ্‌টা
নিরক্ষর চাঁদ সুরুজ আমার কৌসুলি
নক্ষত্র আর জোনাকি সাক্ষীসাবুদ
লতাগুল্ম সকল সুকণ্ঠ পাখি জানায় প্রতিবাদ
তবু টানাহ্যাঁচড়া অদৃশ্য হ্যাণ্ডকাফ

কোন মামলা দায়ের করেনি সে
আমার প্রতি বৃশ্চিক-বিরূপতা গরহাজির
বরং ওর চোখের তারায়
বুকের উদ্যানে আমার ভালোবাসার নীড়

তার গায়ে পড়া শুভার্থীরা অভিযুক্ত করেছে
আমি নাকি ওর সম্ভ্রম হানির কারণ
অথচ মাথায় কিছুতেই ঢুকছে না কী ক’রে
আঁচড় কাটলাম তার সম্ভ্রমের মসলিনে

কোন উটকো লোকজন কিংবা পাড়াপড়শীকে
জড়ো করা সম্ভব হয়নি আমার বিপক্ষে
রাগী বরাগবৎ ওরা আমার কবিতাকেই
দাঁড় করিয়ে দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে

আমার বেলেহাজ পংক্তিমালা নাকি
তার ইজ্জতে ধাব্বা লাগিয়েছে
হতচকিত আমি চিৎকার ক’রে বলতে চাই
প্রমাণ কোথায় কিন্তু কণ্ঠ আমার নুড়িঠাসা
একচোখো খুচুটে লোকগুলো বলে
তোমার হাতের ছাপ হৃদয়ের নক্ষত্রছাপ
সহজলভ্য অক্ষরবৃত্ত আর মাত্রাবৃত্তের ফাঁকফোকরে
শাস্তি-শজারু অপেক্ষমাণ

আসমানের দিকে নজর রেখে
বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে আমার উচ্চারণ
বয়সের দাঁতখিঁচুনি আমাকে নিরস্ত করেনি
বানিয়ে চলেছি শব্দের রামধনু

বসন্তোৎসব যেখানে ভাগাড়ে নিক্ষিপ্ত
পাখির নীড় যেখানে হামেশা ভস্মীভূত
বন্দনা এবং বদনামি যেখানে সমার্থ
অনিবার্য সেখানে কবির নির্বাসন
৫।৫।৯০