চেয়ে আছে আকাশের পানে জোছনায় আঁচলটি পেতে , যত আলো ছিল সে চাঁদের সব যেন পড়েছে মুখেতে । মুখে যেন গলে পড়ে চাঁদ , চোখে যেন পড়িছে ঘুমিয়ে , সুকোমল শিথিল আঁচলে পড়ে আছে আরামে চুমিয়ে । একটি মৃণাল-করে মাথা , আরেকটি পড়ে আছে বুকে , বাতাসটি বহে গিয়ে গায় শিহরি উঠিছে অতি সুখে । হেলে হেলে নুয়ে নুয়ে লতা বাতাসেতে পায়ে এসে পড়ে , বিস্ময়ে মুখের পানে চেয়ে ফুলগুলি দুলে দুলে নড়ে । অতি দূরে বাজে ধীরে বাঁশি , অতি সুখে পরান উদাসী , অধরেতে স্খলিতচরণা মদিরহিল্লোলময়ী হাসি । কে যেন রে চুমো খেয়ে তারে চলে গেছে এই কিছু আগে ; চুমোটিরে বাঁধি ফুলহারে অধরেতে হাসির মাঝারে , চুমোতে চাঁদের চুমো দিয়ে রেখেছে রে যতনে সোহাগে । তাই সেই চুমোটিরে ঘিরে হাসিগুলি সারা রাত জাগে । কে যেন রে বসে তার কাছে গুন গুন করে বলে গেছে মধুমাখা বাণী কানে কানে । পরানের কুসুমকারায় কথাগুলি উড়িয়ে বেড়ায় , বাহিরিতে পথ নাহি জানে । অতি দূর বাঁশরির গানে সে বাণী জড়িয়ে যেন গেছে , অবিরত স্বপনের মতো ঘুরিয়ে বেড়ায় কাছে কাছে । মুখে নিয়ে সেই কথা কটি খেলা করে উলটি , পালটি , আপনি আপন বাণী শুনে শরমে সুখেতে হয় সারা । কার মুখ পড়ে তার মনে , কার হাসি লাগিছে নয়নে , স্মৃতির মধুর ফুলবনে কোথায় হয়েছে পথহারা! চেয়ে তাই সুনীল আকাশে মুখেতে চাঁদের আলো ভাসে , অবসান-গান আশেপাশে ভ্রমে যেন ভ্রমরের পারা ।
Leave a Reply