পর্যটন

যাবেন তো ঠিক’ বললে মৃদুল
কণ্ঠের তারে রস্রাজি ছড় টেনে।
কলকাতা থেমে মুখ ফেরালাম,
প্রাতরাশ সেরে চাপলাম দ্রুত ট্রেনে।

বলাবলি হয় বৃক্ষের কথা,
শ্যামা পাখি গায়, নাচে হৃদয়ের ক্ষতে,
কখন যে মৃদু দুপুরের রোদে
পৌঁছে গেলাম তোমার বাড়ির পথে।
বললেন হেসে দেয়ালে টাঙানো
সেই কবেকার তোমার মায়ের ছবি-
‘কেমন অতিথি এনেছিস খোকা
এতকাল পরে? কবির উঠোনে কবি?’

মেহগনি কাঠে তৈরি খাটের
সুজ্‌নিতে বসি ঈষৎ পদ্মাসনে;
কিছু দূরে যেন মন্দিরা বাজে,
করি খণ্ডিত সঙ্গীত মনে মনে।

মৃদুল তোমার পিতার কথায়
পিছুটান আর অতীত বলার ঝোঁক।
এক লহমায় হয়ে যান তিনি
সেই কবেকার যোগী নগরের লোক।

দিনেমারদের গির্জা অথবা
গঙ্গার তীরে দেখিনি চন্দ্রলেখা।
আরেকটি দিন থেকে গেলে মানি
ইতিহাসময় কত কিছু যেত দেখা।

আমার এমন পর্যটনেই
ফুল চন্দন পড়ে খুব অগোচরে।
আমি তো পঞ্চ ব্যঞ্জন পেয়ে
সোজা চলে গেছি তোমার রান্নাঘরে।

বিদায় জ্ঞাপনে অনিচ্ছা বাজে,
সিক্ত হৃদয় ভাসে বেহাগের সুরে;
পাখির বিলাপ ধুলায় গড়ায়
কেরি সাহেবের, তোমার শ্রীরামপুরে।