এই যে শুনুন

এই যে শুনুন, আপনি যখন ঝকমকে চামচে স্যুপ খান
চমৎকার, তখন আপনার
সাফসুতরো হাতে, ধবধবে শার্টের আস্তিনে এতটুকু
রক্তচিহ্নও চোখে পড়ে না কারো। আপনি যখন হাসির জুঁই
যত্রতত্র ঝরিয়ে দেন,
কে বলবে আপনি আতশ মেজাজ? গোস্তাকি মাফ করবেন
হুজুর নামদার, আপনাকে জালিম বলবে
এমন বেহুদা তালিম কেউ পায়নি এ তল্লাটে।

স্বদেশের জন্যে আপনার দরদের কমতি নেই,
প্রিয় দেশবাসীর প্রতি হে গরিব পরওয়ার, আপনি
হরহামেশা বে-এন্তেহা মেহেরবান
এবং নাদান আমরা তাজ্জব হয়ে দেখি, হে সাহেবে কামাল,
ঝাড়ফুঁকে আপনি দূরে, বহুদূরে হটিয়ে দিতে চান
পোড়া দেশের আলাইবালাই।

অসাধারণ আর ভয়ঙ্কর শক্তিমান
আপনি, ঝড়ক্ষুব্ধ সমুদ্রের মতো কিংবা সুন্দরবনের
রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো আপনার শক্তি
গর্জে ওঠে যখন তখন। হলফ করে বলতে পারি,
সারাদেশ অন্ধকার করে দেয়া আপনার শক্তির মেঘ
যত গর্জে ততই বর্ষে।
ইচ্ছে হলেই আপনি যে কোনো বই, পুস্তিকা
অথবা ইস্তাহার
নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন, পারেন যে কোনো
মানুষকে পাঠাতে তয়খানায়। আপনার খেয়ালের
রঙ-বেরঙের ঘোড়াগুলোর
গা মালিশ করার জন্যে করজোড়ে এক পায়ে
দাঁড়িয়ে থাকে নানা সহিস। চোখের পলক না পড়তেই
আপনার যে কোনো হুকুম তামিল হয়ে যায়।
কিন্তু হে লৌহমানব
আপনি খেয়ালখুশির খেয়া ভাসালেই
নিষিদ্ধ ঘোষিত হবে না সূর্যোদয় কিংবা পূর্ণিমা,
প্রেমিক-প্রেমিকার চুম্বন।
আপনি প্রাণভরে গার্ড অব অনার নিতে পারেন আর
একজন কবিকে দাঁড় করিয়ে দিতে পারেন
ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে,
বহ্ন্যুৎসব করতে পারেন তার গ্রন্থরাজি দিয়ে,
পারেন আপনি পারেন;
তবু তার কবিতাবলি বন্দুকের ধমককে
উপেক্ষা করে ঈগলের মতো উড়তে থাকবে,
উড়তে থাকবে, উড়তে থাকবে।