সকালবেলা চেয়ে দেখি

একটি মেয়েলি কান্না আমাকে ছিনিয়ে
আনে অকস্মাৎ
ঘুমের প্রবালদ্বীপ থেকে। তড়িঘড়ি জানালার ধারে যাই
চোখ রগড়াতে রগড়াতে, বিরক্তির
পিঁচুটি হাতের চেটো দিয়ে
মুছে ফেলে; একটি লোককে ঘাড় ধরে
হিঁচড়ে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে ক’জন যুবক। তার,
মানে লোকটার, গা উদোম,
সমস্ত শরীরে ওর ঘুম
হাল্কা শুয়ে আছে
কুয়াশার মতো
তখনো, রাস্তায় কিছু লোক, যুবা, প্রৌঢ়,
দাঁড়ানো কেমন নির্বিকার
এবং আমিও
ফ্ল্যাট বাড়িটার জানালার ধারে পাথুরে পুরুষ,
অনীহা, আলস্যে বুঁদ।

লোকটা কে? কারা তাকে ওরকমভাবে
নিয়ে গেল? কোথায় এবং কেন? লোকটা কি অপরাধী? কার
কাছে ওর অপরাধ?
সেই যুবকেরা,
কেন একজন মানুষকে
কোরবানির পশুর মতন
ঘষটাতে ঘষটাতে পাড়ার নাকের তলা দিয়ে নিয়ে যাবে?
মনে মনে শহরকে মগের মুল্লুকে আমি অনুবাদ করে নিই।

যে মেয়েলি কান্না ভোরে আমার ঘুমের
দ্বীপটিকে ভীষণ গুঁড়িয়ে দিল তা কি লোকটার
মায়ের হৃদয় চিরে এমন ডুকরে উঠেছিল, নাকি ওর
গৃহিণীর বুক থেকে? বালবাচ্চা আছে
তার? সে কি ঘরে ফিরে আসবে কখনো?
সাত-পাঁচ ভেবে
বাথরুমে গিয়ে টুথব্রাশ দাঁত মাজতে মাজতে
বরীন্দ্রনাথের গান গুন গুন করি!