আটাশ বছরে

আটাশ বছরে

মৃত বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলে চোখে চোখে কথা শেষ হয়
তুমি কিংবা আপনি বলবো মনেও পড়ে না
জানলায় বাদুড় এসে হেসে যায় দগ্ধ ভোরবেলায়
বিবাহিত রমণীরা সিঁড়ির উপর থেকে চকিতে দাঁড়িয়ে
যেন বহু কষ্ট কেনা
মুণ্ডহীন হাসি দিয়ে চলে যায় কুল বারান্দায়,
এখন প্রত্যেক দিন দাড়ি না কামালে আর বাঁচে না সম্মান,
রক্তের সমুদ্রে এক স্বীপ আছে সেখানে স্টিমার ছাড়ে সঠিক দশটায়।

সকালে কলম দিয়ে খুঁচিয়ে ভেঙেছি একটা ভিমরুলের বাসা
বহুক্ষণ একা একা ঘুরে ঘুরে উড়ে গেল করুণ ভিমরুল
(ওদের ললাটে দেখছি শিল্পী মার্কা দুঃখের জড়ুল!র
বিশাখার জন্মদিনে সন্ধেবোলা জমবে এক বিষম তামাশা
সেখানে ভিমরুল-তত্ত্ব জানতে হবে, অথবা হাজির হবো
ছোকরা অধ্যাপকের বাড়িতে
এবং লুকিয়ে আমি সিগারেট জ্বালতে গিয়ে অতিশয় যত্নে সাবধানে
সদ্য কেনা বেডকভার নিশ্চয় পুড়িয়ে আসবো ওর, অতর্কিতে।

স্টোভের শব্দের মতো কি যেন রয়েছে অবিরল এই বুকের মাঝখানে।
তাস খেলতে কৃপা লাগে, বিরলে সময় পোড়ে সিগারেটে শুধু কিছুক্ষণ
জেতায় আনন্দ নেই, হেরে গেলে ক্ৰোধ আসবে কবে?
কুমারীরা চিঠি লেখে, আমার হৃদয়ে নেই রক্তের ক্ষরণ
বাথরুমে নগ্ন নারী হঠাৎ দেখলে আর শরীর কাঁপে না
জানলার পুরোনো শিক ভেঙে ভেঙে সুর আসে উদাস মন্ত্রের—
মৃত্যুর অতীব কাছে দিন কাটিয়েছি আমি অনেক উৎসবে।
দুমড়ানো, পায়ের নিচে পড়ে থাকে, পাণ্ডুলিপি, শিয়রে গ্রন্থের
অগোছালো স্তূপ থেকে ভেসে আসে শবের দুর্গন্ধ।

সিঁড়িতে বিষম অন্ধকার, আঃ, ঘড়ির শব্দের মতো এমন কুৎসিত
আর কিছু নেই এই পৃথিবীতে-অমিত, অমিত!
তোমার বাড়িতে আজ থাকতে দেবে? চলে যাবো কাল ভোরবেলায়
অতীশ আমল ওরা-লুকিয়েছে সংসারের রুক্ষু ঝামেলায়
পত্নীর স্তনের বেঁটা থেকে ঠোঁট তুলে এনে মধ্যরাতে এখনও অমিত
পুরনো বন্ধুর মুখ তোমারও কি দেখতে সাধ নেই?