স্বপ্নের খোয়ারি

এভাবে ফিরিয়ে দেবে যদি তবে কেন ডেকেছিলে
সবুজ পাতার কাছে, লাল পথে, ধু-ধু মাঠে, ঝিলে?
মোহন ইঙ্গিতে নৈসর্গিক রেস্তোরাঁয়, নদীতীরে
কেন নিয়ে গেলে বাসস্টপে, পশু-পাখিদের ভিড়ে?
হাতে তুলে দিয়ে পাত্র পানীয় ধুলায় দিলে ফেলে,
বলো এ কেমন আতিথেয়তা তোমার চিরকেলে?
দিয়েছ আসন পেতে মেঘে মেঘে বারংবার,
ঘুরেছি দু’জন একসঙ্গে নিরিবিলি বনে আর
মধ্যাহ্নে গাছের নিচে তোমার দু’চোখে নিমজ্জিত
খেলেছি স্বপ্নের ঘরে এক্কাদোক্কা। ঝিল গেছে বেঁকে
বহু দূরে, বুঝি বনস্থলীর সহিত আছে তার
কিছু কথা; স্বপ্নস্থিত কারুকাজে এ বন-বাদাড়

জলের নিচের পুরী, শ্বেত প্রজাপতি, পাখিগুলি
ধাতুর সামগ্রী হয়। অবচেতনার ঘুলঘুলি
চোখ মেলে, পুষ্প গর্ভে অকস্মাৎ অত্যন্ত শানদার
দৃশ্যাবলি, পরক্ষণে সব কিছু কেমন আন্ধার
এবং নিজেকে একা ভীষণ বুরবক লাগে, ভাবি-
এই অবেলায় আমি কোথায় জানাব কোন দাবি?
তাহলে ফিরেই যাব? নাকি এই অদ্ভুত শহরে
কেবলি তোমার খোঁজে হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হবো, ঘরে
ফিরব না যথারীতি। যত্রতত্র চালচুলোহীন
থাকব একাকী খুব আর রৌদ্রবিহারের দিন
কোথায় লুকাল মুখ বলে মধ্যরাতে মাঝে-মাঝে
জীর্ণ জব্দ গাড়ি করব মেরামত স্বপ্নের গ্যারাজে।
এই তো ঘুরছে চাকা, কত পাখপাখালি সমেত,
ঘুরছে আমার হাত, ফসল নিবিড় শস্যক্ষেত,
পথের গায়ক আর ফুটপাত। মেট্রোপলিটন
শহরের চৌরাস্তায় একটি অসুস্থ ঘোড়া কোন
স্বপ্নের খোয়ারি নিয়ে থমকে দাঁড়ায় অকস্মাৎ?
স্টেডিয়াম, পার্ক, পথ, সবই তোমার সোনালি হাত।