কয়েকটি রঙিন নুড়ি

কয়েকটি রঙিন নুড়ি এক হাত থেকে আরেক হাতে
নাচাতে নাচাতে আমার সারাদিনমান যায়।
কেউ কেউ তাকিয়ে থাকে অনেকক্ষণ, হঠাৎ কারও
প্রশ্ন আমাকে সরিয়ে আনে নুড়ির নৃত্য থেকে-
এ কেমন খেলা খেলছো হে যে খেলায়
কোনো বিপক্ষ নেই, নেই হারজিত?

এ-খেলায় আমি নিজেই আমার বিপক্ষ;
কখনও আমি হারি, কখনও বা জিতে যাই।
হার-জিতের মতো কোনো চাঞ্চল্যকর কিছু না ঘটলেও
বাস্তবিক আমার কিছু এসে যায় না বলে আমি
কয়েকটি রঙিন নুড়ি এক হাত থেকে আরেক হাতে নাচাতে থাকি।

কয়েকটি রঙিন নুড়ি এক হাত থেকে আরেক হাতে
নাচাতে নাচাতে আমার সারাদিনমান যায়।
কেউ কৌতূহলী পথচারী, কেউ পণ্ডিত, কেউবা দার্শনিক,
এক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীকেও আমি দেখছি; তাঁরা অনেকেই
আমার চতুষ্পার্শ্বে প্রজ্ঞার আভা ছড়িয়ে
থমকে দাঁড়ান ক্ষণিকের জন্যে। তাঁদেরই একজন
বললেন, ওহে, তুমি বলতে পারো
জন্মমৃত্যুর রহস্য? বলতে পারো কাকে বলে
আদর্শ রাষ্ট্রনীতি? কিংবা মানবের পক্ষে কী কল্যাণকর
তোমার বিবেচনায়?
প্রশ্নের জালে বিপন্ন আমি কিছুক্ষণ
নিরুত্তর থেকে বলি, এই প্রশ্নাবলি আমাকে
বিমুখ করেছে বারংবার, আমার জানা নেই কোনো সদুত্তর
আমি শুধু এই নুড়িদের কথা কিছু জানি।

বলতে পারি এদের কে কতটা মসৃণ, বলতে পারি
সকাবেলার আলোয় এদের কত সুন্দর দেখায়।
অন্ধকারে কী করে এরা ঘুমায় কিংবা জেগে থাকে
উষ্ণ-কোমল প্রাণীর মতো একে অন্যের গা ঘেঁষে
অথবা বিচ্ছিন্নতায়, আমি আপনাদের জানাতে পারি।
বলতে পারি কী করে আমার হাতের উষ্ণতা
সঞ্চারিত হয় ওদের মধ্যে
আর কী করে আমার রক্ত জ্বলে ওঠে ওদের রঙ।
দেখুন, এই নুড়িগুলি কেমন রঙিন নাচছে আমার হাতের মঞ্চে।