১৮৪. স্বয়ংবর পর্বাধ্যায়

১৮৪. স্বয়ংবর পর্বাধ্যায়

চতুরশীত্যধিকশততম অধ্যায়।

বৈশম্পায়ন কহিলেন, তদনন্তর নরশ্রেষ্ঠ পঞ্চপাণ্ডব দ্রৌপদীকে সন্দর্শন করিবার মানসে জননী সমভিব্যাহারে মহোৎসবময় দ্রুপদ, জনপদে গমন করিলেন। পথিমধ্যে স্বয়ম্বর দিদৃক্ষু কতিপয় ব্রাহ্মণের সহিত তাহাদিগের সাক্ষাৎ হইল। ব্রহ্মচারী ব্রাহ্মণের। পাণ্ডবদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, আপনারা কোথা হইতে আসিয়াছেন এবং কোথায়ই বা গমন করিবেন? যুধিষ্ঠির কহিলেন, মহাশয়! আমরা পঞ্চসহোদর একত্র হইয়া জননী সমভিব্যাহারে একচক্রা নগরী হইতে আসিতেছি। ব্রাহ্মণেরা কহিলেন, আপনারা অদ্যই পাঞ্চালদেশে চলুন। পাঞ্চালেশ্বরভবনে মহাসমৃদ্ধ স্বয়ম্বর হইবে। আমরা তথায় যাইবার মানসে নির্গত হইয়াছি। ভাল হইল, সকলে একসঙ্গে যাইব। অদ্য পঞ্চলিদেশে পরমাদ্ভুত মহোৎসব হইবে। মহারাজ যসেনের যজ্ঞবেদি মধ্য হইতে এক পরমাসুন্দরী দুহিতা উৎপন্ন হইয়াছে। সেই কমলনয়না দ্রোণশত্রু ধৃষ্টদ্যুম্নের ভগিনী; ধৃষ্টদ্যুম্ন খড়গ,বৰ্ম ও ধনুর্বাণ ধারণ করিয়া প্রজ্জ্বলিত হুতাশন হইতে উদ্ভূত হন। ক্রৌপদীর সর্বাব্যাপী নীলোৎপল গন্ধ এক ক্রোশ পৰ্যন্ত প্রবাহিত হয়। আমরা সেই স্বয় দ্রৌপদীকে ময়নগোচর করিবার নিমিত্ত তথায় গমন করিব এবং মহোদব সর্শনে অনির্বচনীয় আনন্দ প্রাপ্ত হইব। অদ্য তথায় নানা দিদেশ হইতে যা, ভূরিদক্ষিণ, স্বাধ্যায়সম্পন্ন,পবিত্ৰস্বভাব, মহাত্মা, যতব্রত, তরুণবয়স্ক,পরম সুন্দর, মহারথ, অস্ত্রবিদ্যায় নিপুণ কতশত রাজা ও রাজপুত্র আগমন করিবেন। তাহারা পরস্পর জিগীষা পরবশ হইয়া নানাপ্রকার দ্রব্যজাত বিবিধ ভোক্ষ্য, ভোজ্য, গোসমূহ ও ধনাদি দান করিবেন। আমরা তৎসমুদায় প্রতি গ্রহ, স্বয়ম্বর সন্দর্শন এবং মহোৎসবজনিত অনিন্দানুভব করিয়া স্বেচ্ছালারে প্রত্যাগমন করিব। তথায় সূত, মাগধ, বৈতালিক, নট, নর্তক ও নানাদেশীয় মহাবল পরাক্রান্ত যোদ্ধ বর্গ সমাগত হইয়া স্ব স্ব নৈপুণ্য প্রকাশ করিবে। আপনারাও কৌতুকাক্রান্ত চিত্তে সেই সকল কৌতুকাবহ ব্যাপার অবলোকন করিয় প্রদত্ত দ্রব্যজাত প্রতি গ্রহপূর্বক আমাদিগের সহিত প্রত্যাগমন করিবেন। আপনারা সকলে দেবতুল্য রূপবা কৃষ্ণার নয়নপথের পথিক হইলে তিনি অবশ্যই আপনাদিগের অন্যতমকে বরমাল্য প্রদান করিবেন। আপনার এই মহাভুজ দর্শনীয় ভ্রাতাকে নিয়োগ করিলে ইনি অপরিমিত বিণরাশি জয় করিতে পারিবেন। যুধিষ্ঠির কহিলেন, যে অজ্ঞ; আমরা সকলেই আপনাদিগের সমভিব্যাহারে রাজকন্যার স্বয়ম্বর ও তজ্জনিত মহোৎসব সন্দর্শনে গমন করিব।