১৮৩. পাণ্ডব-পৌরোহিত্যে ধৌম্যের বরণ

১৮৩. পাণ্ডব-পৌরোহিত্যে ধৌম্যের বরণ

ত্র্যশীত্যধিকশততম অধ্যায়।

অর্জুন কহিলেন, হে গন্ধর্বরাজ! সকলই তোমার বিদিত আছে, অতএব বল দেখি, কোন্ ব্যক্তি আমাদিগের পুরোহিত হইবার উপযুক্ত পাত্র। গন্ধর্ব কহিলেন, দেবলের যবিষ্ঠ ভ্রাতা ধৌম্য উৎকোচক নামক তীর্থে তপস্যা করিতেছেন, যদি ইচ্ছা হয় তাহাকে পৌরোহিত্য কাৰ্য্যে বরণ কর। অর্জুন গন্ধর্বের প্রতি প্রীত হইয়া তাহাকে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদানপূর্বক কহিলেন, হে গন্ধর্বসত্তম! তোমার মঙ্গল হউক, ঘোটক সকল তোমারই নিকট থাকুক, প্রয়োজন উপস্থিত হইলে গ্রহণ করিব। এই বলিয়া পরস্পর সম্মানবিনিময় পূর্বক রমণীয় ভাগীরথীতীর হইতে নিজ নিজ অভীষ্টএদেশে প্রস্থান করিলেন।

অনন্তর পাণ্ডবেরা উৎকোচক তীর্থে ধৌম্যাশ্রমে উপনীত হইয়া তাহাকে পৌরোহিত্যে বরণ করিলেন। বেদবিত্তম ধৌম্য বন্য ফলমুল প্রদান ও পৌরোহিত্য স্বীকারদ্বারা পাণ্ডবদিগের সংকার করিলেন। পাণ্ডবেরা মনে মনে আশাকরিতে লাগিলেন যে, তাঁহাকে পুরস্কৃত করিয়া স্বয়ম্বরে দ্রৌপদী, রাজ্যলক্ষী ও সাম্রাজ্য প্রাপ্ত হইতে পারিবেন। তাহারা এতদিন অসহায় হইয়াছিলেন, অধুনা পুরোহিত ধৌম্যের সহিত সঙ্গত হইয়া আপনাদিগকে নাথবা মনে করিলেন। পাণ্ডবেরা সেই উদারধী বেদার্থতত্ত্বজ্ঞ পুরোহিতের অনুকম্পায় যাগপ্রিয় ও সর্বধর্মের মর্মজ্ঞ হইয়া উঠিলেন। পুরোহিত ধৌম্য পাণ্ডবগণের অবিচলিত উৎসাহ, অপ্রতিহত বলবীৰ্য, মহীয়সী বুদ্ধিবৃত্তি ও ধর্মপ্রবৃত্তি সন্দর্শনে মনে মনে স্থির করিলেন, তাঁহারা অচিরাৎ রাজ্যাধিকার প্রাপ্ত হইবেন। অনন্তর পাণ্ডবগণ পুরোহিত কর্তৃক কৃতস্বস্ত্যয়ন হইয়া দ্রৌপদী স্বয়ম্বর সমাজারোহণে মানস করিলেন।

চৈত্ররথ পর্বাধ্যায় সমাপ্ত।