১৩২. দ্রোণ কর্তৃক কৌরবশিষ্যগণকে অস্ত্রশিক্ষাদান, অর্জুনের শিক্ষা-উৎকর্ষ

১৩২. দ্রোণ কর্তৃক কৌরবশিষ্যগণকে অস্ত্রশিক্ষাদান, অর্জুনের শিক্ষা-উৎকর্ষ

দ্বাত্রিংশদধিকশততম অধ্যায়।

বৈশম্পায়ন কহিলেন,-মহারাজ! অনন্তর দ্রোণাচাৰ্য, মহানুভব ভীষ্ম কর্তক সংকৃত হইয়া পরম সমাদরে কুরুগৃহে বিশ্রাম করিতে লাগিলেন। তিনি বিশ্রান্ত হইলে ভীষ্মদেব প্রীত ও প্রসন্ন হইয়া প্রচুর অর্থের সহিত পৌত্রদিগকে শিষ্যরূপে তাঁহার হস্তে সমর্পন করিলেন এবং তাহার বাসের নিমিত্ত পরিচ্ছন্ন ও ধনধান্যসম্পন্ন এক গৃহ নির্দেশ করিয়া দিলেন। তৎপরে কৌরব, পাণ্ডব ও ধার্তরাষ্ট্রের আচাৰ্য দ্রোণকে অভিবাদন করিলে তিনি সন্তুষ্টচিত্তে তাঁহাদিগকে অন্তেবাসী বলিয়া স্বীকার করিয়া নির্জনে কহিলেন, হে শিষ্যগণ! আমি উত্তমরূপে অস্ত্রশিক্ষা প্রদান করিব, কিন্তু পরিশেষে তোমাদিগকে আমার একটি অভিলষিত সম্পাদন করিতে হইবে,এক্ষণে তাহা অঙ্গীকার কর। তাহা শুনিয়া দুৰ্য্যোধন প্রভৃতি কুরুনন্দন সকলেই মৌনভাব অবলম্বন করিয়া রহিলেন, কেবল অর্জুন তাঁহার বাক্য স্বীকার করিয়া কহিলেন,-মহাশয়! আপনি যাহা আদেশ করিবেন, আমি তাহা পালন করিব, সন্দেহ নাই। আচাৰ্য দ্রোণ অর্জুনের অঙ্গীকার বাক্য শ্রবণ করিয়া প্রীতিপ্ৰফুল্লমনে তাহাকে আলিঙ্গন ও বারংবার তাহার মস্তক আঘ্রাণ করিতে লাগিলেন। তৎকালে তাঁহার নয়নযুগল হইতে অবিরল আনন্দাশ্রু নির্গত হইতে লাগিল।

অনন্তর মহাবীৰ্য্য আচাৰ্য দ্ৰোণ পাণ্ডুপুত্রদিগকে দিব্য ও মানুষ বিবিধ অস্ত্রশস্ত্রে শিক্ষা দান করিতে লাগিলেন। এই সম্বাদ শ্রবণে অন্ধকবংশীয় রাজা ও সূতপুত্র কর্ণ এবং অনেকানেক রাজকুমার অন্ত্রশিক্ষার্থে দেশ দেশান্তর হইতে দ্রোণের নিকটে আগমন করিলেন। কর্ণ অর্জুনের সহিত স্পর্ধা করিয়া দুর্যোধনের সাহায্যে পাণ্ডবদিগকে নানপ্রকার অবমাননা করিতে লাগিলেন; কিন্তু সমাগত সমস্ত শিষ্যমণ্ডলীমধ্যে অর্জুন ভুবলে, উদ্যোগে ও ধনুর্বেদশিক্ষায় দ্রোণের সমকক্ষ হইয়া উঠিলেন। দ্রোণাচাৰ্য্য ইন্দ্রপুত্র অর্জুনকে অস্ত্রবিদ্যায় অনুরাগ, প্রয়োগ, লাঘব ও কৌশলে সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট জানিয়া সবিশেষ উপদেশ দিতে আরম্ভ করিলেন। তিনি রাজকুমারদিগের পরিতোষাৰ্থ শাণিত বাণ ও বিলম্বে জলপূর্ণ হইবে এমত এক এক ক্ষুদ্রমুখ কমণ্ডলু প্রদান করিলেন; কিন্তু অবিলম্বে জলপূর্ণ হইবে এই মানসে নিজ পুত্র অশ্বত্থামাকে বিস্তীর্ণমুখ একটি কলস দিলেন। মহামতি দ্রোণ, রাজপুত্রগণ না, আসিতে আসিতে অশ্বত্থামাকে বিশেষ বিশেষ অস্ত্র উপদেশ দিতেন। অর্জুন তাহা বুঝিতে পারিয়া বারুশাস্ত্র দ্বারা কমণ্ডলু পরিপূর্ণ করিয়র গুরুপুত্র অশ্বত্থামার সহিত সমকালে গুরুসন্নিধানে সমাগত হইতেন। সুমহান্ অস্ত্রজ্ঞ পার্থ অশ্বপ্রামার সহিত সমকালে আগমন করিতেন বলিয়া,তাঁহা অপেক্ষা কোন অংশেই ন্যূন হইলেন না। তিনি ভক্তি ও শ্রদ্ধাসহকারে গুরুর আরাধনা করিতে তৎপর ছিলেন এবং অস্ত্রশিক্ষায় সবিশেষ মনোনিবেশ করিতেন। এইরূপে অর্জুন ক্রমশঃ দ্রোণের অতিশয় প্রিয়পাত্র হইয়া উঠিলেন।

অনন্তর আচাৰ্য দ্রোণ অস্ত্রশিক্ষা বিষয়ে অর্জুনকে উৎসাহসম্পন্ন দেখি সূপকারিণীকে আহ্বানপূর্বক নির্জনে কহিলেন, হে বিজয়ে! তুমি অর্জুনকে অন্ধকারে অন্ন উপযোগ করিতে দিও না এবং আমি তোমাকে প্রতিষেধ করিলাম, ইহা কদাচ অর্জুনের নিকটে প্রকাশ করিও না। একদা অর্জুন ভোজন করিতেছেন, এই অবসরে প্রবলবেগে কাত্যা উত্থিত হইলে দীপ্যমান দীপশিখা সহসা নিৰ্বাপিত হইল। দীপ নিৰ্ব্বাণ হইলে তাহার হস্ত অভ্যাসবশতঃ আস্তদেশেই সংলগ্ন হইতে লাগিল। তখন তিনি মনে করিলেন, যাহা অভ্যাস করা যায়, তাহাই বলবৎ হইয়া উঠে। এইরূপ সিদ্ধান্ত করিয়া রাত্রিকালে ধনুর্বেদ অনুশীলন করিবার নিমিত্ত শরাসনে জ্যারোপণ করিয়া বারংবার টঙ্কার করিতে লাগিলেন। তাঁহার জ্যানির্ঘোষ শ্রবণে দ্রোণ বিস্মিত হইয়া সহসা তথায় আগমন ও তাঁহাকে আলিঙ্গন করিয়া কহিলেন, বৎস! আমি সত্য কহিতেছি, এই ধরাধামে তোমার তুল্য দ্বিতীয় ধনুধর যাহাতে প্রখ্যাত না হয়, এইরূপ বিধান করিব, এই বলিয়া দ্রোণাচাৰ্য অর্জুনকে হস্তী, অশ্ব ও রথে অরূঢ় এবং ভূতলে অবতীর্ণ হইয়া কিরূপে সংগ্রাম করিতে হয়, তদ্বিষয়ে পুনর্বার সবিশেষ শিক্ষা দান করিতে লাগিলেন এবং গদাযুদ্ধ, অসিচৰ্যা, তোমর, প্রাস ও শক্তি প্রয়োগ এবং সঙ্কীর্ণ যুদ্ধে কৌশলসম্পন্ন করিলেন। দ্রোণের” সংগ্ৰামনৈপুণ্য শ্রবণ করিয়া শত সহস্র রাজা ও রাজকুমার ধনুর্বেদ শিক্ষা করিবার নিমিত্ত দিগদিগন্ত হইতে তথায় আগমন করিতে লাগিলেন। একদা নিষাদরাজ হিরণ্যধনুর পুত্র একলব্য, দ্রোণসন্নিধানে সমাগত হইল; কিন্তু সে অন্য ম্লেচ্ছজাতি; সাধারণের সতীর্থ ও সমতুল্য হয়, ইহা নিতান্ত অনভিপ্রেত; এই বিবেচনা করিয়া দ্রোণ তাহাকে ধনুর্বেদে দীক্ষিত করিলেন না। তখন নিষাদরাজতনয় বিষাদমগ্ন হইয়া দ্রোণের পাদগ্রহণপূর্বক অরণ্যে প্রবেশ করিল এবং তথায় মৃন্ময় এক দ্রোণ নির্মাণ ও তাহাতে আচাৰ্যভাব সংস্থাপন করিয়া ব্ৰত ধারণপূর্বক অস্ত্রশিক্ষা আরম্ভ করিল। এইরূপে সে অচিরকালমধ্যে অস্ত্রের প্রয়োগ, সংহার ও সন্ধানবিষয়ে কৃতকাৰ্য্য হইয়া উঠিল।

একদা কৌরব ও পাণ্ডবগণ দ্রোণকর্তৃক অনুজ্ঞাত হইয়া রথারোহণে রাজধানী হইতে মৃগয়ার্থ নির্গত হইলেন। একজন আপনার কুকুর ও বাগুরা লইয়া যদৃচ্ছাক্রমে তাঁহাদিগের অনুগমন করিল। কৌরব ও পাণ্ডবগণ অরণ্যে প্রবেশ করিয়া ইতস্ততঃ সঞ্চরণ করিতেছেন, এই অবসরে সেই কুকুর মৃগের অনুসরণক্রমে সহসা নিষাদরাজতনয়ের সন্নিধানে সমুপস্থিত হইল। সেই কুকুর মলিনকলেবর, কৃষ্ণাজিনজটাধারী নিষাদরাজকুমার একলব্যকে নিরীক্ষণ করিয়া উচ্চৈঃস্বরে চীৎকার করিতে লাগিল। একলব্য আপনার অস্ত্র প্রয়োগের, লঘুতার পরীক্ষার্থ তাহার মুখবিকরে এককালে সাতটি শর নিক্ষেপ করিল। কুকুর অস্যিবিবরে শরপূরিত হইয়া দ্রুতগমনে পাণ্ডবসমিধান আগমন করিল। পাণ্ডবের। কুকুরের মুখমধ্যে প্রবিষ্ট সাতটি শর নিরীক্ষণ করিয়া অতিশয় বিস্ময়বিষ্ট হইলেন এবং শরের লঘুত্ব ও শব্দবেধিত্ব দর্শনে সকলেই আপনাদিগকে অপেক্ষাকৃত নিকৃষ্টবোধে লজ্জিত হইয়া প্রয়োগকর্তার প্রশংসা করিতে লাগিলেন। পরে পাণ্ডবেরা বনে বনে অনুসন্ধান করিয়া পরিশেষে বনবাসী এক মনুষ্যকে নিরবচ্ছিন্ন শরবর্ষণ করিতে দেখিলেন। পাণ্ডবেরা ঐ বিকৃতদর্শন পুরুষকে তৎকালে চিনিতে না পারিয়া জিজ্ঞাসিলেন, হে বীরবর! তুমি কে? কাহার পুত্র? একলব্য প্রত্যুত্তর করিল, আমি নিষাদাধিপতি হিরণ্যধনুর পুত্র, দ্রোণের শিষ্য, এই আশ্রমে একাকী ধনুর্বেদ অনুশীলন করিতেছি।

তখন পাণ্ডবেরা তাহার যথার্থ পরিচঝ লইয়া পুনর্বার নিজ রাজধানীতে প্রত্যাগমন করিয়া দ্রোণসন্নিধানে এই অদ্ভুত বৃত্তান্ত আদ্যোপান্ত সমুদায় নিবেদন করিলেন। তৎপরে কুন্তীনন্দন অর্জুন বিনীতবচনে নির্জনে দ্রোণকে কহিলেন,-গুরে! আপনি অঙ্গীকার করিয়াছিলেন যে, তোম। অপেক্ষা আশার অন্য কোন শিষ্যই উৎকৃষ্ট হইবে না, কিন্তু এক্ষণে তাহার অন্যথা দেখা যাইতেছে। নিষাদাধিপতির পুত্র মহাবল একলব্য আপনার এক শিষ্য, সে ধনুৰ্ব্বেদে আমা অপেক্ষাও সমধিক উৎকর্ষ লাভ করিয়াছে। তখন অর্জুনমুখে এই সংবাদ শ্রবণ করিয়া দ্রোণ মুহূর্তকাল চিন্তা করিয়া ইহার বিশেষ কারও কিছুই অনুধাবন করিতে পারিলেন না। পরিশেষে অর্জুনসমভিব্যাহারে অরণ প্রদেশে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, জটাচীরধারী,মলিনকলেবর নিষাদরাজকুমার একলব্য শরাসন আকর্ষণ করিয়া বারংবার বাণবর্ষণ করিতেছে। এই অবসরে দ্রোণ তাহার সম্মুখীন হইলেন। সে সহসা দ্রোণকে সমাগত দেখিয়া তাহার প্রত্যুদগমন ও পাদবন্দনপূর্বক আপনাকে তাঁহার শিষ্য বলিয়া পরিচয় দিল এবং বিধানানুসারে তাহার পূজা ও উপবেশনার্থ আসন প্রদান করিয়া কৃতাঞ্জলিপুটে সম্মুখে দণ্ডায়মান রহিল। তখন দ্রোণ কহিলেন,—হে বীর! যদি তুমি যথার্থই আমার শিষ্য হইয়া থাক, তবে এক্ষণে গুরুদক্ষিণা প্রদান কর। তাহা শুনিয়া একলব্য প্রীতবাক্যে কহিল, ভগবন! গুরুকে অদেয় কিছুই নাই, এক্ষণে কিরূপ দক্ষিণ আহরণ করিব, আজ্ঞা করুন। তখন দ্রোণ কহিলেন-হে বীর! যদি সম্মত হইয়া থাক, তবে দক্ষিণ হস্তের একটি অঙ্গুলি, ছেদন করিয়া দক্ষিণস্বরূপ আমাকে সম্প্রদান কর। সত্যবা একলব্য দ্রোণের এইরূপ নিদারুণ বাক্য শ্রবণ করিয়া আপনার প্রতিজ্ঞা প্রতিপালনার্থে প্রফুল্লমনে ও হৃষ্টবদনে দক্ষিণ হস্তের অঙ্গুষ্ঠ ছেদন করিয়া অসঙ্কুচিতচিত্তে তৎক্ষণাৎ গুরুদক্ষিণা প্রদান করিল। তৎপরে অপর অঙ্গুলি দ্বারা শরক্ষেপ করিয়া দেখিল, পূৰ্ব্বাপেক্ষা শরের লঘুতা হ্রাস হইয়াছে।

অর্জুন এইরূপ অদ্ভুত ব্যাপার অবলোকন করিয়া অতিশয় প্রীত ও প্রসন্ন হইলেন। তখন তাহার অপকর্ষবিষয়ক আশঙ্কা তিরোহিত হইল। এই ধরাধামে অর্জুনকে কেহই পরাভব করিতে পারিবে না, দ্রোণাচার্য্যের এই অঙ্গীকার বাক্যও রক্ষা হইল। ক্রোধপরায়ণ দুৰ্য্যোধন ও ভীম এই উভয়ে দ্রোণের নিকটে গদাযুদ্ধ অভ্যাস করিতেন। অশ্বত্থামা সর্ব রহস্যে পারদর্শী হইয়া অপেক্ষাকৃত উৎকর্ষ লাভ করিয়াছিলেন। নকুল ও সহদেব ইহার। অসিচৰ্য্যায় কুশলী হইলেন। ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির এক উৎকৃষ্ট রথী হইলেন। অর্জুন বুদ্ধিযোগ, বল ও উৎসাহে এই সসাগরা পৃথিবীমধ্যে প্রখ্যাত হইলেন, অর্জুনই আচাৰ্য দ্রোণের প্রতি অসাধারণ অনুরাগ প্রদর্শন করিতেন এবং অর্জনই সমাগত রাজকুমারদিগের মধ্যে অদ্বিতীয় ধনুর্দ্ধর হইয়া উঠিলেন। দুরাত্মা ধার্তরাষ্ট্রের। বলাধিক ভীমসেন ও কৃতবিদ্য অর্জুনকে দেখিয়া নিতান্ত ঈর্ষাপরবশ হইল।

একদা দ্রোণাচাৰ্য্য শিষ্যগণের অস্ত্রশিক্ষার পরীক্ষার্থ কুমারগণেরঅসমক্ষে শিল্পী দ্বারা একটি কৃত্রিম নীলপক্ষ পক্ষী নির্মাণ করাইয়া বৃক্ষের অগ্ৰশাখায় আরোপিত করিলেন। পরে সমবেত রাজকুমারদিগকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, হে রাজপুত্রগণ! সকলে শীঘ্র শাসনে শরসন্ধান করিয়া আমার আদেশবাক্য অপেক্ষা করিয়া থাক, আমি তোমাদিগকে একে একে নিয়োগ করিতেছি; মদীয় বাক্য অবসান না হইতেই ঐ লক্ষ্যের শিরচ্ছেদন করিয়া ভূতলে পাতিত কর। এই বলিয়া দ্ৰোণ প্রথমতঃ ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরকে আদেশ করিলেন, হে দুর্ধর্ষ! তুমি শরবন্ধান করিয়া আমার বাক্যের সমকালে বাণ ত্যাগ কর। তখন যুধিষ্ঠির দ্রোণের নির্দেশানুসারে ধনুঃগ্ৰহণ পূর্বক লক্ষ্যকে উদ্দেশ করিয়া দণ্ডায়মান রহিলেন। তৎপরে আচাৰ্য দোণ কুরুনন্দন যুধিষ্ঠিরকে মুহূর্তকাল মধ্যে কহিলেন, তুমি বৃক্ষের শিখরদেশে ঐ শকুন্তকে নিরীক্ষণ কর। যুধিষ্ঠির প্রত্যুত্তর করিলেন, হাঁ আমি দেখিতেছি। দ্রোণ পুনর্বার কহিলেন হে ধর্মনন্দন! তুমি এই বৃক্ষকে, আমাকে বা আপন ভ্রাতৃগণকে দেখিতেছ? যুধিষ্ঠির উত্তর করিলেন, ভগবন্! আমি এই বৃক্ষকে, আপনাকে, ভ্রাতৃগণকে ও বৃক্ষস্থিত পক্ষীকে বারংবার নিরীক্ষণ করিতেছি। তখন দ্রোণ অপ্রসন্নমনে যুধিষ্ঠিরকে কহিলেন, তুমি এই লক্ষ্য বিদ্ধ করিতে পারিবে না, এ স্থান হইতে অপসৃত হও। এইরূপে যুধিষ্ঠিরকে তিরস্কার করিয়া দ্রোণ ধৃতরাষ্ট্রনন্দন দুৰ্য্যোধন প্রভৃতি সকলকেই পৰ্যায়ক্রমে পূর্বোক্ত প্রকারে জিজ্ঞাসা করিলেন, কিন্তু কেহই তাঁহার মনোগত উত্তর প্রদান করিতে পারিলেন না বলিয়া সকলেই তিরস্কৃত হইলেন।