০১১. সমুদ্র-মন্থন-স্থানে মহাদেবের আগমন

পার্ব্বতীর কটুভাষ,                শুনি ক্রোধে দিগ্ বাস,
টানিয়া বান্ধিল ব্যাঘ্র-বাস।
বাসুকি-নাগের দড়ি,                 কাঁকালে বান্ধিল বেড়ি,
করে তুলি নিল মৃগ-বাস।।
কপালেতে শশীকলা,                 গলে শোভে হাড়মালা,
করযুগে কঞ্চুক-কঙ্কণ।
ভানু বৃহদ্ভানু শশী,                 ত্রিবিধ প্রকারে ভূষি,
ক্রোধে যেন প্রলয়-কিরণ।।
যেন গিরি হেমকূটে,                 আকাশে লহরী উঠে,
ভ্রমে গঙ্গা মধ্যে জটাজূটে।
রজতাগরির আভা,                 কোটিচন্দ্র মুখশোভা,
ফণি-মণি বিরাজে মুকুটে।।
গলে দোলে কাল সাপ,                 টঙ্কারি পিনাক-চাপ,
ত্রিশূল খট্টাঙ্গ নিলা করে।
সাজিল শিবের সেনা,                 যক্ষ রক্ষ অগণনা,
ভূত প্রেত ভূচর খেচরে।।
আগে ধায় যত দানা,                 কান্ধেতে আয়ুধ নানা,
মুখরবে মহা কোলাহল।
ডমরুর ডিমি ডিমি,                 আকাশ-পাতাল-ভূমি,
কম্পান্বিত ত্রৈলোক্য-মণ্ডল।।
বৃষভ সাজায়ে বেগে,                 আনি নন্দী দিল আগে,
নানা রত্নে করিয়া ভূষণ।
ক্রোধে কাঁপে ভূতনাথ,                 যেন কদলীর পাত,
অতি শীঘ্র কৈল আরোহণ।।
আগুদলে সেনাপতি,                 ময়ূর বাহনে গতি,
শক্তি করে দেব ষড়ানন।
গণেশ চড়িয়া মূষ,                 করে ধরি পাশাঙ্কুশ,
দক্ষিণ ভাগেতে ক্রোধ মন।।
বামে নন্দী মহাকাল,                 করে শূল সুবিশাল,
পাশে ভৃঙ্গী ধায় তিন পাদে।
চলিলেন দেবরাজ,                 দেখিয়া শিবের সাজ,
তিন লোক গণিল প্রমাদে।।
ক্ষণেকে ক্ষীরোদ-কূলে,                 উত্তরিলা দলবলে,
যথা ছিল সবে সুরাসুর।
কহে কাশীদাস দেবে,                 দ্রুততর-গতি সবে,
প্রণময়ে দেখিয়া ঠাকুর।।