৪৪. শমীবৃক্ষতলে অর্জ্জুনের পূর্ব্ববেশ ধারণ

তবে শমীবৃক্ষতলে গেলেন অর্জ্জুন।
পূর্ব্ববৎ বান্ধি রাখে সব ধনুর্গুণ।।
দুই করে শঙ্খ দিয়া শ্রবণে কুণ্ডল।
কিরীট রাখিয়া বেণী করেন কুন্তল।।
হনূমন্ত-ধ্বজ গেল আকাশেতে চলি।
সারথি হইয়া পার্থ নিল কড়িয়ালী।।
উত্তরে চাহিয়া তবে বলে ধনঞ্জয়।
তব সভামধ্যে পঞ্চ পাণ্ডব আছয়।।
লোকে যেন নাহি জানে, এ সব বচন।
পিতার অগ্রেতে এই কহিবে কথন।।
বাহুবলে জিনিলাম সব কুরুগণ।
ভীষ্ম দ্রোণ কৃপ কর্ণ সহ দুর্য্যোধন।।
পিতার সম্মান হবে, লোকেতে পৌরুষ।
রাজ্যে যত লোক তব ঘুষিবেক যশ।।
উত্তর বলিল, ইহা কিমতে হইবে।
কহিলে কি লোকে ইহা প্রত্যয় করিবে।।
যে কর্ম্ম করিলে তুমি আজকার রণে।
তোমা বিনা করে হেন নাহি ত্রিভুবনে।।
আমি করিলাম, ইহা কহিব স্বমুখে।
পশ্চাতে হইলে ব্যক্ত হাসিবেক লোকে।।
প্রকার করিয়া আমি কহিব পিতারে।
প্রকাশ পর্য্যন্ত কেহ না জানে তোমারে।।
তবে পার্থ কহিলেন, যাব সন্ধ্যাকালে।
জয়বার্ত্তা দেহ এক পাঠায়ে গোপালে।
রণজয় বার্ত্তা তব দিবে অন্তুঃপুরে।
তব হেতু আছে সবে চিন্তিত অন্তরে।।
উত্তর দূতেরে তবে করেন প্রেরণ।
দ্রুতগতি দূত পুরে চলিল তখন।।
মহাভারতের কথা বর্ণিতে কে পারে।
যেন ভেলা বান্ধি চাহে সিন্ধু তরিবারে।।
শ্রুত মাত্র কহি আমি রচিয়া পয়ার।
সাধুজন চরণেতে বিনয় আমার।।
সাধুলোক গুণকথা সর্ব্বলোকে কয়।
গুণ বিনা অপগুণ সাধু নাহি লয়।
অতএব করি আশা, মোরে সাধুজনে।
মূর্খ জন জানি ক্ষমা দিবে নিজগুণে।।
কাশীরাম দাস কহে সাধুজন পায়।
পাইব পরম পদ যাঁহার কৃপায়।।