১৮. শ্রীকৃষ্ণ ও যুধিষ্ঠিরের যুক্তি ও নমুচি দানবের উপাখ্যান

তবে জন্মেজয় রাজা জিজ্ঞাসে মুনিরে।
কহ শুনি, কি প্রসঙ্গ হৈল তদন্তরে।।
পাণ্ডবের দূত হয়ে দেব জগৎপতি।
কিরূপে বুঝাইলেন কৌরবের প্রতি।।
কৃষ্ণের বচন নাহি শুনে দুর্য্যোধন।
কিরূপে ভারতযুদ্ধ হৈল আরম্ভণ।।
কহিবে সে সব কথা করিয়া বিস্তার।
মুনি বলে, শুন পরীক্ষিতের কুমার।।
পাণ্ডব-সভায় আসিলেন নারায়ণ।
দেখি ‍আনন্দিত পঞ্চ পাণ্ডুর নন্দন।।
গোবিন্দে দেখিয়া ধর্ম্ম মহাহৃষ্ট মনে।
নিভৃতে করেন যুক্তি শ্রীকৃষ্ণের সনে।।
যুধিষ্ঠির বলিলেন, শুন নারায়ণ।
হইবে ভারত-যুদ্ধ, না হবে খণ্ডন।।
দুর্য্যোধন দুর্ম্মতি সে করিবে প্রলয়।
যুদ্ধ হেতু হইবেক জ্ঞাতিগণ ক্ষয়।।
ক্ষত্রগণ অস্ত যাবে, পৃথ্বী হহস্বামী।
সে কারণে মনে যুক্তি করিয়াছি আমি।।
জ্ঞাতিগণ বধ মম প্রাণে নাহি সহে।
কুলক্ষয় চক্ষে দেখা কভু যোগ্য নহে।।
দূতমুখে দুর্য্যোধনে কহি পুনঃ পুনঃ।
কদাচিৎ ছাড়িয়া না দিবে রাজ্যধন।।
পূর্ব্বে যে নিয়ম করিলাম পঞ্চ জনে।
ধর্ম্ম হৈতে মুক্ত হইলাম এইক্ষণে।।
তাপস বেশেতে ভ্রমি কাননে কাননে।
তথাপিহ দয়া নাহি জন্মে দুর্য্যোধনে।।
অজ্ঞাত বৎসর এক থাকি পরবশে।
রাজপুত্র হয়ে ‍পার্থ ভ্রমে ক্লীববেশে।।
এত দুঃখ দিয়া ক্ষান্ত না করিল মন।
সমুচিত রাজ্য নাহি দেয় দুর্য্যোধন।।
যাবৎ শরীরে প্রাণ থাকিবে তাহার।
তাবৎ ছাড়িয়া রাজ্য না দিবে আমার।।
বহু কষ্টে পারি যদি করিতে সংহার।
তবে রাজ্য ধন সেই লব পুনর্ব্বার।।
হেন রাজ্য ধনে মম নাহি প্রয়োজন।
কিবা কাজ হবে বল মারি জ্ঞাতিগণ।।
এই হেতু চিত্তে আমি সব ক্ষমা দিব।
তব আজ্ঞা হৈলে পুনঃ বনবাসে যাব।।
তীর্থযাত্রা করি আমি ভ্রমি বনে বন।
ভুঞ্জুক সকল রাজ্য রাজা দুর্য্যোধন।।
পিতৃতুল্য পিতামহ আচার্য্য মাতুল।
আপ্ত বন্ধু সব আর যত জ্ঞাতিকুল।।
এ সকল সংহারির রাজ্যের নিমিত্তে।
হেন রাজপদে সুখ না করিব চিত্তে।।
না যুঝি প্রবৃত্ত হব বীর্য্য অহঙ্কারে।
যদি বা না পারি কৌরবেরে জিনিবারে।।
সংসার যুড়িয়া লজ্জা হবে অতিশয়।
এই হেতু মম চিত্তে হইতেছে ভয়।।
যে বা ভীম ধনঞ্জয় মাদ্রীর নন্দন।
আজন্ম দুঃখেতে গেল, কি করিবে রণ।।
বলহীন দেহ, শুধু আছে আত্মমাত্র।
কৌরব সম্মূখে হবে নাহি মানে চিত্ত।।
বিরাট দ্রুপদ ধৃষ্টদ্যুন্ন শিখণ্ড্যাদি।
দ্রৌপদীর পঞ্চ পুত্র আর সত্যবাদী।।
এই সব বীর আছে আমার সহায়।
ইহারা বা কি করিবে কৌরব দুর্জ্জয়।।
কৌরবের পক্ষে আছে বহু বীরগণ।
এক এক জন হয় দ্বিতীয় শমন।।
ভীষ্ম দ্রোণ অশ্বথামা কৃপ মহামতি।
সোমদত্ত ভূরিশ্রবা সুশর্ম্মা নৃপতি।।
মহারথ মহামতি সবে মহাবল।
শত ভাই দুর্য্যোধন আর বৃহদ্বল।।
শল্য মহাবীর আর রাধার নন্দন।
এ সকল বীর হয় দ্বিতীয় শমন।।
যুদ্ধে কাজ নাহি মম, না পারিব জানি।
বনবাসে যাব, আজ্ঞা কর চক্রপাণি।।
ইহা শুনি হাস্যমুখে কহে নারায়ণ।
না বুঝিয়া হেন বাক্য বলহ রাজন।।
চিরজীবী নাহি কেহ সংসার ভিতরে।
জন্মিলে অবশ্য যায় শমনের ঘরে।।
ক্ষত্রধর্ম্ম নীতি তব নাহিক ‍রাজন।
সন্ন্যাস ধর্ম্মের মত তব আচরণ।।
রাজধর্ম্ম নীতি কিছু কহিব তোমারে।
পূর্ব্বেতে নিষ্পন্ন যাহা হইল বিচারে।।
রাজা হয়ে ক্ষমাবন্ত না হবে কখন।
অতি উগ্র না হইবে, সদা শান্তমন।।
ক্ষত্রমধ্যে যেই জন হয় বলবান।
অহঙ্কারে জ্ঞাতি বন্ধু করে তৃণজ্ঞান।।
ক্ষত্রমধ্যে শত্রু আমি গণি যে তাহারে।
তাহারে করিবে নষ্ট যে কোন প্রকারে।।
বলে ছলে যুদ্ধে তারে যেরূপে পারিবে।
অবশ্য তাহারে রাজা সংহার করিবে।।
ইহাতে অধর্ম্ম নাহি শুন নরবর।
সেই সব দুর্য্যোধন করিল পামর।।
তাহারে মারিলে নাহি পাপের উদয়।
জ্ঞাতিমধ্যে শত্রু সেই মহা দুরাশয়।।
পূর্ব্বের কাহিনী কহি, শুন দিয়া মন।
নমুচি দানব সেই কশ্যপ নন্দন।।
এক পিতা হৈতে হৈল দোঁহার জনম।
ইন্দ্রের বৈমাত্র ভাই বিখ্যাত ভুবন।।
তপোবলে দেবরাজে করে পরাজয়।
ইন্দ্রের ইন্দ্রত্ব জিনি নিল দুরাশয়।।
ইন্দ্রের অমরাবতী বলেতে হরিল।
উপায় না দেখি ইন্দ্র চিন্তিত হইল।।
নমুচির সঙ্গে যুদ্ধে হইয়া পরাস্ত।
পলাইল দেবসেনা হয়ে ব্যতিব্যস্ত।।
পরাজয় মানি ইন্দ্র আদি দেবগণ।
সন্ন্যাসী হইয়া ভ্রমে সকল ভুবন।।
পুত্রগণ কষ্ট দেখি দেবের জননী।
ক্ষীরোদের কূলে আরাধিল পদ্মযোনি।।
প্রত্যক্ষ হইয়া ব্রহ্মা বর দিল তাঁরে।
অচিরেতে পাবে রাজ্য তোমার কুমারে।।
এত বলি অন্তর্দ্ধান হৈল পদ্মাসন।
পুত্রগণে দেবমাতা বলেন তখন।।
জননীর বাক্যে ইন্দ্র আদি দেবগণ।
ব্রহ্মারে কহিল গিয়া সব বিবরণ।।
বিষম সঙ্কটে দেব করহ মোচন।
নমুচির ভয় হৈতে করহ তারণ।।
পিতামহ সুপ্রসন্ন হয়ে দেবগণে।
সান্ত্বনা করেন সবে প্রবোধ বচনে।।
অসময়ে কার্য্যাসিদ্ধি কভু নাহি হয়।
শাস্ত্রেতে বিচার হেন করিল নির্ণয়।।
জ্ঞাতিমধ্যে রিপু শ্রেষ্ঠ যেই মহাবলী।
তাহার সংহার হেতু হৃদয়ে আকুলি।।
বলে ছলে নমুচিরে করিবে নিধন।
ইহাতে অধর্ম্ম নাহি হইবে কখন।।
ব্রহ্মার বচন শুনি দেব সুরপতি।
নমুচির সঙ্গে আসি করিল পীরিতি।।
হীন জন প্রায় হয়ে তাহারে সেবিলি।
নমুচির সহ ইন্দ্র মিত্রতা করিল।।
এইরূপে কত দিন আছে সুরনাথ।
করিল সুদূঢ় প্রীতি নমুচির সাথ।।
কত দিনে শুভকাল ইন্দ্র তবে পায়।
মারিতে দৈত্যেরে ইন্দ্র করিল উপায়।।
কৌশল করিয়া ইন্দ্র নমুচি মারিল।
আপন ইন্দ্রত্ব পদ পুনরপি নিল।।
ক্ষত্রধর্ম্মে এইমত আছয়ে নিয়ম।
পূর্ব্বাপর আছে ইহা না কর সম্ভ্রম।।
দুর্য্যোধন কুলাঙ্গার বড় দুরাচার।
তাহারে মারিলে পাপ নাহিক তোমার।।
নমুচিরে মারি ইন্দ্র সুখে রাজ্য করে।
কৌরব মারিতে কেন পড়িলে বিচারে।।
কৌরবে মারিয়া তুমি সুখে রাজ্য কর।
দ্রৌপদীর মনঃশল্য উদ্ধার সত্বর।।
কহিলাম হিতবাক্য তোমারে রাজন।
এত বলি প্রবোধিলা দেব নারায়ণ।।
ধর্ম্মের ঘুচিল ভয়, আনন্দিত মন।
তবে ভীম ধনঞ্জয় আর মন্ত্রিগণ।।
একে একে নৃপতিরে কহে বিবরণ।
উদেযাগ করহ রাজা করিবারে রণ।।
কৃষ্ণের বচনে রাজা না কর সংশয়।
কৌরবে মারিয়া রাজ্য কর মহাশয়।।
বিনা দ্বন্দ্বে রাজ্য নাহি দিবে দুর্য্যোধন।
তাহারে মারিলে নহে পাপের কারণ।।
আমরা সহায় সব, কারে কর ভয়।
আজ্ঞা কৈলে সংহারির কৌরব তনয়।।
সহায় সর্ব্বস্ব তব দেব জগৎপতি।
ইহার প্রসাদে জয় হবে নরপতি।।
রাজা বলে, যে কহিলে কভু নহে আন।
সহায় সর্ব্বস্ব মম দেব ভগবান।।
শ্রীকৃষ্ণ প্রসাদে ভয় নাহি ত্রিজগতে।
তথাপিহ চাহে লোক ধর্ম্মেতে তরিতে।।
অন্য দূত-কর্ম্ম নহে, কহি সে কারণ।
কুরুসভা মধ্যে যাও দেবকী নন্দন।।
নীতি ধর্ম্ম কহি জ্ঞান দেহ দুর্য্যোধনে।
জ্যেষ্ঠতাত ধৃতরাষ্ট্র গঙ্গার নন্দনে।।
প্রথমে কহিবে অর্দ্ধ ‍রাজ্য ছাড়ি দিতে।
ধন জন রত্ন যেই ছিল ইন্দ্রপ্রস্থে।।
পূর্ব্বাপর অধিকার ছিল মম যত।
তাহা দিয়া প্রীতি কর পাণ্ডব সহিত।।
যে নিয়ম হয়েছিল, তাহে হৈল পার।
তবে কেন রাজ্য ছাড়ি না দেহ আমার।।
নাহি দিলে ধর্ম্মে বল কেমনে তরিবে।
ভাই ভাই যুদ্ধ হৈলে, কিবা ফল হবে।।
জ্ঞাতিগণ মরিবেক আর বন্ধুগণ।
মহাযুদ্ধ হবে সর্ব্ব কুল বিনাশন।।
সে কারণে এই কার্য্যে নাহি প্রয়োজন।
অর্দ্ধরাজ্য দিয়া তোষ পাণ্ডবের মন।।
এরূপে কহিবে আগে কথা বহুতর।
তবে যদি কদাচ না শুনে কুরুবর।।
তবে সে কহিবে তারে করিয়া বিনয়।
বড় ক্ষমাশীল রাজা পাণ্ডুর তনয়।।
রাজ্য দেশ বৃত্তি যত অশ্ব ধন জন।
সকল ছাড়িয়া দিল তোমার কারণ।।
পঞ্চ ভাই পাণ্ডবেরে পঞ্চ গ্রাম দেহ।
সাগর অবধি রাজ্য সকল ভুঞ্জহ।।
ইন্দ্রপ্রস্থ কুশস্থল বারণানগর।
হস্তিনার উত্তরে সুকান্তি গ্রামবর।।
পাণ্ডব নগর গ্রাম তাহার দক্ষিণে।
এই পঞ্চ গ্রাম দিয়া তোষ পঞ্চ জনে।।
এইরূপে বুঝাইবে রাজা দুর্য্যোধনে।
তোমার বচন যদি না শুনে শ্রবণে।।
আপনার দোষ দুষ্ট হইবে নিধন।
ইথে পাপ কলঙ্ক না হয় নারায়ণ।।
অধর্ম্ম করিলে পাপ হইবে আমার।
লোকে ধর্ম্ম ভাল মন্দ নহিবে বিচার।।
তার পাপে হইবেক জ্ঞাতিগণ ক্ষয়।
শীঘ্রগতি যাহ তুমি কৌরব-আলয়।।
গোবিন্দ বলেন, রাজা যে আজ্ঞা তোমার।
হয়ত উচিত একবার জানিবার।।
যদ্যপি সম্প্রীতে রাজ্য দেয় দুর্য্যোধন।
দুই কুল রক্ষা হয়, জীয়ে জ্ঞাতিগণ।।
ভীমার্জ্জুন বলেন, না লয় ইহা মন।
সম্প্রীতে যে রাজ্য দিবে দুষ্ট দুর্য্যোধন।।
তাহাতে রাধেয় কর্ণ মন্ত্রী দুরাচার।
গান্ধার নন্দন দুঃশাসন দুষ্ট আর।।
এ তিন জনের বুদ্ধি লয়ে দুর্য্যোধন।
আমা সবা সঙ্গে নাহি করিবে মিলন।।
তথাপিহ যাহ তুমি ধর্ম্মের আজ্ঞায়।
সাবধান হয়ে দেব যাবে হস্তিনায়।।
কুবুদ্ধি কুমন্ত্রী খল রাজা দুর্য্যোধন।
একেশ্বর পেয়ে পাছে করে বিড়ম্বন।।
সে কারণে লহ সঙ্গে মহারথিগণ।
এক অক্ষৌহিণী সঙ্গে করুক গমন।।
গোবিন্দ বলেন, মম ভয় আছে কারে।
শত ‍দুর্য্যোধন মম কি করিতে পারে।।
তবে যদি প্রবর্দ্ধিত হয় অহঙ্কারে।
মুহূর্ত্তেকে চক্রে সংহারিব সবাকারে।।
বাতি দিতে না রাখিব কৌরবের গণে।
সবংশে মারিব সেই দুষ্ট দুর্য্যোধনে।।
এত বলি গোবিন্দ করিলেন প্রস্থান।
রথী দশ সহস্র লইয়া ধনুর্ব্বাণ।।
সাত্যকি চলিল সঙ্গে আর চেকিতান।
দুই লক্ষ পদাতিক সঙ্গে বলবান।।
বলেন শ্রীকৃষ্ণ প্রতি ভাই পঞ্চ জন।
বিষম সঙ্কটে ভ্রমিলাম বনে বন।।
তোমার প্রসাদে দুঃখ হইল মোচন।
সান্ত্বাইবে মায়ে, যেন নহে দুঃখমন।।
শুনিয়া গোবিন্দ করিলেন অঙ্গীকার।
দ্রৌপদী কৃষ্ণেরে চাহি বলিছে আবার।।
শুনহ দুঃখের কথা কমললোচন।
বড়ই নিষ্ঠুর শত্রু পাপী দুর্য্যোধন।।
এত কষ্ট দিয়া নহে শান্ত তার মন।
কদাচ না রাজ্য ছাড়ি দিবে দুর্য্যোধন।।
যত দুঃখ দিলেনক সে, জানহ বিশেষ।
সভামধ্যে ধরি দুষ্ট আনে মোর কেশ।।
বিবস্ত্র করিতে ইচ্ছা কৈল দুষ্টগণ।
ধর্ম্ম রক্ষা করিল যে, তেই সে মোচন।।
হেন জন মুখ প্রভু চাহ দেখিবারে।
তব বাক্য কদাচ না রাখিবে পামরে।।
তার সঙ্গে প্রীতি করি কিবা হবে হিত।
সবংশে মারিতে তারে হয়ত উচিত।।
তোমার আশ্রয়ে দেব কেবা বীর্য্যহত।
সবাই যুঝিবে দেব তোমার সম্মতি।।
পিতা মম যুঝিবেন দ্রুপদ সুধীর।
যুঝিবেন সহোদর ধৃষ্টদ্যুন্ন বীর।।
শিখণ্ডী করিবে যুদ্ধ মহাবলবান।
পঞ্চ ভাই যুঝিবেন রণে সাবধান।।
মম পঞ্চ পুত্র আছে সংগ্রামে সুধীর।
দ্বিতীয় বাসব যুদ্ধে অভিমন্যু বীর।।
ভোজবংশে মৎস্যবংশে যত বীরগণ।
এক এক জন হয় দ্বিতীয় শমন।।
কৌরবেরে পরাজয় করিবে সমরে।
কোন প্রয়োজনে প্রভু যাহ তথাকারে।।
স্বপ্নে আজি দেখিলাম শুন মহাশয়।
রথেতে চড়িয়া রণে পাণ্ডুর তনয়।।
রাক্ষস মূরতি ধরি বীর বৃকোদর।
দুঃশাসনে ধরি রণে চিরিল উদর।।
রক্তপান করি বুলে, দেখিনু নয়নে।
ধবল কুঞ্জর চড়ি মাদ্রীর নন্দনে।।
কৌরবের সহ যেন হৈল মহারণ।
ধবল পুষ্পের মালা পরে পঞ্চ জন।।
শ্বেত কৃষ্ণ আরো যত বর্ণ ছত্র বাণ।
কৌরবের সেনা করে রক্ত জলে স্নান।।
স্রোতোধারে মহাবেগে রক্তনদী বয়।
সাক্ষাতে দেখিনু এই স্বপ্ন মহাশয়।।
কৌরবের পরাজয়, পাণ্ডবের জয়।
গোবিন্দ বলেন, দেবি যে বল সে হয়।।
শত্রুমধ্যে যাইবারে উচিত না হয়।
তথাপি যাইব আমি রাজার আজ্ঞায়।।
বুঝাইব নীতিধর্ম্ম দুষ্ট দুর্য্যোধনে।
মৃত্যুকালে ঔষধ না খায় রোগীজনে।।
কদাচিৎ মম বাক্য না শুনিবে কানে।
সবংশে যাইবে দুষ্ট শমনের স্থানে।।
অচিরেতে হবে তব দুঃখ বিমোচন।
হস্তিনায় রাজধানী হইবে এখন।।
এত বলি সান্ত্বাইল দ্রুপদ কন্যায়।
শুভযাত্রা করি হরি যান হস্তিনায়।।
মহাভারতের কথা অমৃত-লহরী।
কাশী কহে, সাধুজন প্রিয় কর্ণ ভরি।।