০৮. জয়দ্রথের নিকট পাণ্ডবদিগের পরাভবের বৃত্তান্ত

মুনি বলে, পূর্ব্বকথা শুনহ রাজন।
যুধিষ্ঠির রাজা যবে প্রবেশেন বন।।
কত দিনে জয়দ্রথ গেল সেই বনে।
দ্রৌপদীরে একা তবে দেখিল ভবনে।।
দেখিয়া দুর্ম্মতি হৈল সিন্ধুর নন্দন।
দ্রৌপদীরে রথে তুলি করিল গমন।
লইয়া আপন দেশে চলিল দুর্ম্মতি।
হাহাকার শব্দ করি ডাকয়ে পার্ষতী।।
তবে ভীম কোপে ধায় ভীম পরাক্রম।
ক্রোধ-মূর্ত্তি দেখি যেন যুগান্তের যম।।
এক লাফে ধরি বীর তাহার চিবুক।
এক চড়ে দন্তপাটি করিলেক চূর।।
যুধিষ্ঠির-বাক্যে ছাড়ি দিল বৃকোদর।
দেশেতে না গেল বীর লজ্জায় কাতর।।
আপনি প্রবেশ করি বনের ভিতরে।
দ্বাদশ বৎসর সেবা করিলে শঙ্করে।।
বিবিধ প্রকারে করে শিবের সেবন।
দর্শন দিলেন তথা দেব পঞ্চানন।।
শিব বলে, বর মাগ সিন্ধুর তনয়।
ইহা শুনি জয়দ্রথ হরে প্রণময়।।
অনেক করিয়া স্তুতি বলয়ে বচন।
অবধান কর প্রভো মম নিবেদন।।
এই বর দেহ মোরে দেব শূলপাণি।
পাণ্ডবগণেরে যেন রণে আমি জিনি।।

শিব বলিলেন, শুন সিন্ধুর তনয়।
জিনিবে সবারে কিন্তু বিনা ধনঞ্জয়।।
ইহা বলি অন্তর্ধান হৈল পঞ্চানন।
জয়দ্রথ নিজ দেশে করিল গমন।।
এই হেতু সবাকারে জিনিল সৈন্ধব।
ভীম আদি পরাজিত যতেক পাণ্ডব।।
হাতে ধনু ধরি বীর করে মহারণ।
একা জয়দ্রথ সব করিল বারণ।।
এক রথে জয়দ্রথ সিন্ধুর তনয়।
মহাগর্ব্ব করি বুলে নির্ভয়-হৃদয়।।
ভীমেরে করিল দশ বাণে পরাজয়।
আর দশ বাণে বিন্ধে সাত্যকি-হৃদয়।।
ধৃষ্টদ্যুম্নে নিবারিল মারি দশ বাণ।
দশ বাণে বিরাটেরে করিল অজ্ঞান।।
এইমত জয়দ্রথ করে ঘোর রণ।
ব্যুহ প্রবেশিতে নাহি পারে যোদ্ধাগণ।।