সুজাতা

তিনি মাতৃগর্ভ থেকেই বলেন যে, কহোড়ের বেদপাঠ ঠিক হচ্ছে না। মহর্ষি কহোড় তাতে ক্রুদ্ধ হয়ে গর্ভস্থ পুত্রকে শাপ দিলেন যে, তার দেহ অষ্টস্থানে বক্র হবে। অষ্টাবক্র তখনও ভুমিষ্ট হন নি; ওঁর পিতা অর্থোপার্জনের আশায় জনক রাজার কাছে যান। সেখানে বন্দী নামে এক পণ্ডিত থাকতেন, যাঁর সঙ্গে তর্কে পরাস্ত হলে রাজ আজ্ঞায় পরাজিতদের জলে ডুবিয়ে দেওয়া হত। কহোড় তর্কে বন্দীর কাছে পরাস্ত হওয়ায় তাঁরও সেই গতি হল। অষ্টাবক্র শিশু অবস্থায় জানতেন না যে, তাঁর পিতার মৃত্যু হয়েছে – তিনি উদ্দালককেই পিতা বলে জানতেন। বালক বয়সে তিনি যখন মাতা সুজাতার কাছে পিতার মৃত্যুর কারণ জানতে পারলেন, তখন তিনি মাতুল শ্বেতকেতুকে নিয়ে জনক রাজার কাছে গেলেন। সেখানে বন্দীকে তর্কে পরাস্ত করে তিনি বললেন যে, বন্দী যেরকম পরাজিত ব্রাহ্মণদের জলে ডুবিয়েছিলেন, এবার সেই ভাবে বন্দীকে জলে ডোবানো হোক। বন্দী তখন নিজেকে বরুণের পুত্র বলে পরিচয় দিয়ে বললেন যে, তিনি ব্রাহ্মণদের জলের মধ্যে পিতা বরুণের যজ্ঞ দেখতে পাঠিয়েছিলেন। তাঁরা এখন সবাই ফিরে আসবেন। তবে উনি অষ্টাবক্রের সন্মানে জলের মধ্যে অন্তর্ধান করে পিতার সঙ্গে মিলিত হবেন। কহোড় ও অন্যান্য ব্রাহ্মণরা ফিরে এলে বন্দী সমুদ্রে প্রবেশ করলেন। কহোড় পুত্র গর্বে পরম প্রীত হয়ে অষ্টাবক্রকে একটি নদীতে প্রবেশ করতে বললেন। সেই নদী থেকে উঠতেই অষ্টাবক্রের দেহ আর বক্র রইলো না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *