বিশ্বামিত্র

কান্যকুব্জরাজ কুশিকের পৌত্র ও রাজা গাধির পুত্র। একবার সসৈন্যে মৃগয়ায় গিয়ে রাজা বিশ্বামিত্র বশিষ্ঠ মুনির আশ্রমে আসেন। বশিষ্ঠ মুনি সৎকারের জন্য তাঁর কামধেনু নন্দিনীর সাহায্য চাইলেন। নন্দিনী তখন রুচিকর নানান খাদ্য পানীয় বসন রত্নাদি উত্পাদন করল। নন্দিনীকে দেখে মুগ্ধ হয়ে বিশ্বামিত্র বশিষ্ঠকে বললেন যে, নন্দিনীকে তাঁর চাই, তার জন্য বশিষ্ঠকে তিনি নিজের রাজ্য দান করতেও প্রস্তুত। বশিষ্ঠ রাজি হলেন না। তখন বিশ্বামিত্র নন্দিনীকে সবলে হরণ করার চেষ্টা করলেন। বশিষ্ঠ যে তাঁকে ত্যাগ করতে চান না সেটা বুঝতে পেরে নন্দিনী ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে বিশ্বামিত্রের সৈন্যদের বিতাড়িত করলেন। বিশ্বামিত্র স্বয়ং বশিষ্ঠকে নানান অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করলেও বশিষ্ঠের কোনও ক্ষতি করতে পারলেন না। তখন তিনি বুঝলেন যে, ক্ষত্রিয় বলের থেকে ব্রহ্মতেজ অনেক বড় – তপস্যাই পরম বল। বিশ্বামিত্র রাজ্যত্যাগ করে তপস্যায় নিরত হলেন। ক্ষত্রিয়কুলে জন্ম গ্রহণ করে দেহান্তর প্রাপ্ত না হয়েও ঋচীকের (অন্য মতে ভৃগুর) ঋষিবাক্যের ফলে তিনি ব্রাহ্মণত্ব লাভ করেছিলেন। বিশ্বামিত্রের পুত্রদের মধ্যে শকুন্ত যাজ্ঞবল্ক্য, শিলাযূপ, জাবালি, সুশ্রুত, মুদ্গল, প্রভৃতির নাম মহাভারতে দেখতে পাওয়া যায়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *