বিদুর

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিদুর

বিদুর

অণীমাণ্ডব্য ঋষির শাপে স্বয়ং ধর্ম কৃষ্ণদ্বৈপায়নের (ব্যাসদেব) ঔরসে বিচিত্রবীর্যের এক শুদ্রা দাসীর গর্ভে জন্মান। পুত্র বিচিত্রবীর্যের মৃত্যুর পর, সত্যবতী তাঁর কুমারী জীবনের পুত্র ব্যাসদেবকে বিচিত্রবীর্যের ভার্যাদের গর্ভে সন্তান উৎপাদন করতে আদেশ করেন। বিচিত্রবীর্যের প্রথমা ভার্যা অম্বিকা ব্যাসদেবের বিকট রূপ ও উগ্র দেহগন্ধ সহ্য না করতে পেরে চক্ষু নিমিলীত করে ছিলেন বলে পুত্র ধৃতরাষ্ট্র জন্মান্ধ হন। সেই কারণে সত্যবতী আবার অম্বিকাকে ব্যাসদেবের সঙ্গে মিলিত হতে বলেন। অম্বিকা তাতে ভীতা হয়ে তাঁর এক দাসীকে নিজের বসনভূষণে অলঙ্কৃত করে পাঠিয়ে দেন এবং বিদুরের জন্ম হয়। ব্যাসদেবের বরে বিদুর-মাতা দাসীত্ব থেকে মুক্তি পান এবং বিদুর বিচিত্রবীর্যের পারসব (শূদ্রা মাতার গর্ভে ব্রাহ্মণ পিতা হইতে জাত) পুত্র বলেই পরিচিত হন। বিদুর কৌরবদের আমত্য হলেও পাণ্ডবদের হিতাকাঙ্খি ছিলেন। দুর্যোধন যখন পাণ্ডবদের জতুগৃহে পাঠিয়ে অগ্নিদগ্ধ করে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন, তখন বিদুরই পাণ্ডবদের সতর্ক করেন এবং পালাতে সাহায্য করেন। পাণ্ডবদের বিধবা মাতা কুন্তি সৎপরামর্শের জন্য বিদুরের ওপরই নির্ভর করতেন। পণদ্যূতে পরাজিত হয়ে পাণ্ডবরা যখন অরণ্যে বাস করতে যান,তখন তিনি বিদুরের আশ্রয়েই ছিলেন। বিদুর ছিলেন ধার্মিক ও স্পষ্টবক্তা। তিনি বহুবার ধৃতরাষ্ট্রকে উপদেশ দিয়েছিলেন দুর্মতি দুর্যোধনকে পরিত্যাগ করতে, কিন্তু ধৃতরাষ্ট্র প্রতিবারই তা অগ্রাহ্য করেছেন। পরে ধৃতরাষ্ট্র তার জন্য যথেষ্ঠ অনুতাপ করেছিলেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের শেষে – যুধিষ্ঠিরের হস্তিনাপুরে পনেরো বছর রাজত্বের পর -ধৃতরাষ্ট্র, গান্ধারী ও কুন্তিকে নিয়ে অরণ্যযাত্রা করেন। বিদুর সঞ্জয় (ধৃতরাষ্ট্রের এক প্রাক্তন আমত্য) সহ তাঁদের সঙ্গ নেন। এর কিছুকাল পরে যুধিষ্ঠির খুঁজতে খুঁজতে বিদুরের দেখা পান। দুজনের দৃষ্টির যখন মিলন হল তখন যোগবলে বিদুর যুধিষ্ঠিরের দেহে প্রবেশ করলেন, এবং তাঁর প্রাণহীন দেহ পরে রইলো। যুধিষ্ঠির ছিলেন ধর্মের পুত্র আর বিদুর ছিলেন ধর্মের অংশ। তাই ধর্মই ধর্মে লীন হল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *