পুত্র বা কন্যাদের বৈচিত্র্য

মহাভারতে অনেক পুত্র ও কন্যাই অযোনীজ – তাঁরা মাতার গর্ভজাত নন। এঁরা অনেকে মানস পুত্র (সাধারণত এঁরা ঋষি ও দেবতা), অথবা যজ্ঞাগ্নি বা যজ্ঞবেদী থেকে উত্থিত হয়েছেন (ধৃষ্টদ্যুম্ন, কৃষ্ণা প্রমুখ), কিংবা অপ্সরাদের দেখে মুনিঋষিদের স্খলিত শুক্র থেকে (দ্রোণ, কৃপ, শুকদেব প্রমুখ) জন্ম নিয়েছেন। অযোনীজ পুত্র ছাড়া বিভিন্ন প্রকারের পুত্রের কথা শাস্ত্রে উল্লেখিত হয়েছে – স্বয়ংজাত (ঔরসজাত), ক্ষেত্রজ (সাধারণত, পতির সম্মতিতে পরপুরুষের ঔরসজাত। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে, যেমন পূর্ব-বিবাহিত উলুপীর নিজ-ইচ্ছায় অর্জুনের সন্তান ধারণ), কানীন (কুমারী অবস্থায় জাত) স্বৈরিনীজ (গূঢ়োত্পন্ন), দত্ত, ক্রীত, অপবিদ্ধ, কৃত্রিম, পৌনর্ভব, সহোঢ় (অধ্যোঢ়) স্বয়ংদত্ত ও হীন-যোনিধৃত (শৌদ্রা)। মহাভারতের কাহিনীতে এক জীবের সন্তান অন্য জীবের গর্ভে জন্ম নেওয়াটা অস্বাভাবিক ছিলে না। দেবতা, রাক্ষস ও মানুষের মধ্যে সন্তানাদি তো সব সময়েই হয়েছে। মনুষের সন্তান মৎস্যে (সত্যবতী), হরিণে (ঋষ্যশৃঙ্গ), নাগে (ইরাবন) – এমন কি পক্ষীতেও (মন্দপাল-পুত্র) জন্ম নিতে দেখা গেছে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *