গরুড়

কশ্যপ ও বিনতার পুত্র। বিনতার ভগিনী কদ্রু (কশ্যপের আরেক স্ত্রী) একবার কশ্যপের কাছে বর প্রার্থনা করেন যে, ওঁর এক হাজার নাগ-সন্তান হোক। বিনতা সেই শুনে কশ্যপের কাছে বর চান যে, ওঁর মাত্র দুটি সন্তান হলেই চলবে, কিন্তু তারা যেন কদ্রুর সন্তানের থেকে বেশি বলশালী হয়। বিনতার সেই দুই সন্তানের এক হলেন সর্প-ভোজী গরুড়। ঘটনা চক্রে বিনতা কদ্রুর দাসী হয়েছিলেন। কদ্রুর সর্প-পুত্ররা গরুড়কে বলেছিলেন যে, তিনি যদি তাদের জন্য অমৃত নিয়ে আসতে পারেন – তাহলে বিনতার দাসীত্ব মোচন হবে। গরুড় তাঁর অমিত বাহুবলে ইন্দ্রাদি দেবতাদের পরাস্ত করে অমৃত নিয়ে যখন ফিরছেন তখন বিষ্ণু তাঁকে অমৃতলোভী না দেখে বর দিতে চাইলেন। গরুর বর চাইলেন যে, অমৃত পান না করেও তিনি অজেয় অমর হতে পারেন। বিষ্ণু গরুড়কে বরদান করে তাঁকে নিজের বাহন হিসেবে চাইলেন। গরুড় রাজি হলেন। ফেরার পথে ইন্দ্রের সঙ্গে গরুড়ের আবার যুদ্ধ হল। ইন্দ্র তাঁর বজ্র দিয়ে আঘাত করেও গরুড়ের ক্ষতি করতে পারলেন না। গরুর ইন্দ্র ও তাঁর বজ্রের সন্মানার্থে একটা পালক শুধু ফেলে দিলেন। সেই সুন্দর পালক দেখে সকলে আনন্দিত হয়ে ওঁর নাম দিলেন সুপর্ণ। গরুড় অজেয় বুঝে ইন্দ্র গরুড়ের সঙ্গে সখ্যতা স্থাপন করে অমৃত ফেরত চাইলেন। গরুড় বললেন যে, বিশেষ উদ্দেশ্যে তিনি অমৃত নিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু যেখানে তিনি অমৃত রাখবেন সেখান থেকে ইন্দ্র সেটা হরণ করতে পারেন। ইন্দ্র তাতে খুসি হয়ে গরুড়কে বর দিতে চাইলেন। গরুড় বর চাইলেন যে,মহাবল সর্পরা গরুড়ের ভক্ষ্য হোক। গরুর অমৃত এনে কুশের ওপর রাখতেই সর্পরা বিনতাকে দাসীত্ব থেকে মুক্তি দিল, কিন্তু অমৃত খাবার আগেই ইন্দ্র তা হরণ করলেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *