কচ

অঙ্গিরার পৌত্র ও দেবতাদের গুরু বৃহস্পতির পুত্র । কচ দেবতাদের অনুরোধে অসুরদের গুরু শুক্রের কাছ থেকে মৃতসঞ্জীবনী বিদ্যা আয়ত্ব করতে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। সেখানে কচের সঙ্গে শুক্রের সুন্দরী কন্যা দেবযানীর পরিচয় হয়। কচের অভিসন্ধি বুঝতে পেরে অসুররা কচকে দুই বার হত্যা করলেও দেবযানী শুক্রকে দিয়ে সঞ্জীবনী বিদ্যা প্রয়োগ করিয়ে তাঁকে বাঁচিয়ে তোলেন। শেষে অসুররা কচকে পুড়িয়ে তাঁর দেহ-ভষ্ম শুক্রের পানীয়ের মধ্যে মিশিয়ে দেন। এইবার দেবযানী বিপদে পরলেন, কারণ কচকে বাঁচাতে গেলে শুক্রের উদর ভেদ করে তাঁকে বেরোতে হবে, তাহলে শুক্রের মৃত্যু হবে। শুক্র তখন উদরস্থ কচ-ভস্মকে সঞ্জীবনী মন্ত্র শিখিয়ে দিয়ে বলেন যে, কচ শুক্রের শরীর থেকে বেরিয়ে আসার পর শুক্রকে বাঁচিয়ে দিতে। এই ভাবে সঞ্জীবনী মন্ত্র শিখে শুক্রের উদর ভেদ করে বেরিয়ে কচ শুক্রকে পুনর্জীবিত করেন। এর কিছুদিন বাদে কচ গুরুগৃহ থেকে বিদায় নিতে চাইলে, দেবযানী কচকে বললেন তাঁকে বিবাহ করতে। কিন্তু কচ দেবযানীকে একবার ভগিনীসমা, আরেকবার গুরুকন্যা হিসাবে মাতৃসমা, ইত্যাদি বলে বিবাহ করতে অসন্মত হলেন। প্রত্যাখ্যাত দেবযানী তখন ক্ষুব্ধ হয়ে কচকে অভিশাপ দিলেন যে, কচ তাঁর অর্জিত বিদ্যা কোনওদিন প্রয়োগ করতে পারবেন না। কচ বললেন, তাই হবে। কিন্তু তিনি নিজে না পারলেও, যাঁদের তিনি এই বিদ্যা শেখাবেন তাঁরা প্রয়োগ করতে পারবেন। কচের সঞ্জীবনী বিদ্যা শেখার জন্য দেবতাদের আর অসুরদের হাতে মৃত্যুর ভয় রইলো না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *