একলব্য

নিষাদরাজ হিরণ্যধনুর পুত্র। ইনি দ্রোণের কাছে অস্ত্রশিক্ষা করতে এসেছিলেন, কিন্তু দ্রোণ একলব্য ম্লেচ্ছজাতিতে জন্মেছেন বলে অস্ত্রশিক্ষা দিতে সন্মত হন নি। একলব্য তখন দ্রোণের মৃন্ময় মূর্তি তৈরী করে ঔ সেই মূর্তিকেই আচার্য-রূপ জ্ঞান করে অস্ত্রাভ্যাস শুরু করলেন। কিছুদিনের মধ্যেই অস্ত্রচালনায় তিনি অতিশয় পারদর্শী হলেন। একদিন পাণ্ডবরা একটি কুকুর নিয়ে বনে মৃগয়া করতে এসেছিলেন। সেই কুকুর ঘুরতে ঘুরতে একলব্যকে দেখে চিৎকার করছিল বলে একলব্য সাতটি শর নিক্ষেপ করে কুকুরটির মুখ বন্ধ করে দিলেন। পাণ্ডবরা তাই দেখে বিস্মিত হয়ে একলব্যের পরিচয় জানতে চাওয়ায়,একলব্য নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন যে, তিনি দ্রোণাচার্যের শিষ্য। অর্জুন ফিরে গিয়ে দ্রোণের কাছে অনুযোগ করলেন যে, তিনি যদি দ্রোণের প্রিয় শিষ্য হন, তাহলে ওঁর অন্য শিষ্য একলব্য কি করে অর্জুনকে অতিক্রম করতে পারেন! দ্রোণ সেই শুনে অর্জুনকে নিয়ে একলব্যের কাছে এলেন। একলব্যকে দ্রোণ বললেন যে, তিনি যদি ওঁর শিষ্য হন,তাহলে ওঁকে গুরুদক্ষিণা দিতে হবে। একলব্য তাতে সানন্দে সন্মত হলেন। তখন দ্রোণ গুরুদক্ষিণা-স্বরূপ একলব্যের দক্ষিণ অঙ্গুষ্ঠটি চাইতেই একলব্য সঙ্গে সঙ্গে নিজের দক্ষিণ অঙ্গুষ্ঠ ছেদন করে দ্রোণের হাতে তুলে দিলেন। ফলে একলব্যের সেই শরক্ষেপণ নৈপুন্যতা আর রইলো না। অর্জুন প্রীত হলেন, কিন্তু দ্রোণ ও অর্জুনের চরিত্রে এটি একটি কলঙ্ক হয়ে রইলো।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *