ঋষ্যশৃঙ্গ

এক হরিণীর গর্ভজাত বিভাণ্ডক মুনির পুত্র। উর্বশীকে দেখে কামাবিষ্ট বিভাণ্ডক মুনির শুক্র স্খলিত হলে এক তৃষিতা হরিণী জলের সঙ্গে সেই শুক্র পান করে ঋষ্যশৃঙ্গকে প্রসব করে। এই মুনিকুমারের মস্তকে একটি শৃঙ্গ ছিল বলে ওঁর এই নামকরণ হল। অঙ্গদেশের রাজা লোমপাদ ব্রাহ্মণদের প্রতি অসদাচারণ করায় ইন্দ্র অঙ্গদেশে বারিবর্ষণ করা বন্ধ করেছিলেন। এক মুনি লোমপাদকে বলেন তিনি যদি প্রায়শ্চিত্ত করে ব্রাহ্মণদের প্রসন্ন করেন এবং ঋষ্যশৃঙ্গকে রাজ্যে আনতে পারেন – তাহলে আবার বৃষ্টিপাত শুরু হবে। লোমপাদ তখন রাজ্যের বেশ্যাদের সাহায্য চাইলেন। ঋষ্যশৃঙ্গ যখন আশ্রমে একা আছেন, তখন এক বয়স্থা বেশ্যা তাঁর সুন্দরী কন্যাকে আশ্রমে পাঠালেন। ঋষ্যশৃঙ্গ পিতার সঙ্গে থেকে তপস্যা করতেন – পিতা ভিন্ন অন্য কোনও মানুষকে তিনি দেখেন নি। তাই এই কন্যাকে দেখে তিনি বিস্মিত ও মুগ্ধ হলেন। বেশ্যাকন্যার ক্রীড়া-কৌতুকাদিতে প্রলোভিত হয়ে তিনি ঠিক করলেন যে, এঁর সঙ্গেই তিনি তপস্যা করবেন! বিভাণ্ডক আশ্রমে ফেরার আগেই বেশ্যাকন্যা বিদায় নিলেন। আশ্রমে ফিরে বিভাণ্ডক সব কিছু জেনে পুত্রকে সাবধান করলেন – বললেন,এঁরা তপস্যাবিঘ্নকারী রাক্ষস। কিন্তু পরের দিন বিভাণ্ডক যখন আশ্রমের বাইরে – তখন আবার সেই বেশ্যাকন্যা আসতেই ঋষ্যশৃঙ্গ তাঁর সঙ্গে আশ্রম ত্যাগ করলেন। ঋষ্যশৃঙ্গ অঙ্গদেশে এসে পৌঁছলে আবার সেখানে বারিবর্ষণ শুরু হল। রাজা লোমপাদের চেষ্টা সার্থক হল। ঋষ্যশৃঙ্গ পরে লোমপাদের কন্যা শান্তাকে বিবাহ করেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *