ঈশ্বরের সংগে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার
মাননীয় ঈশ্বর, আসুন না একবার
আমাদের সুবর্ন ব্রোথেলে অর্থাৎ পৃথিবীতে।
শুনেছি শৈশবে, আপনিই একক স্রষ্টা নাকি
যাবতীয় সৃষ্টির য্যামোন সৌর এলাকা
পৃথিবী নামক ব্রোথেলে।
ইদানিং বিশ্বাসের লাইটপোস্ট
ভগ্নপ্রায় পড়ে আছে জাগতিক রাস্তার পাশে
কাজেই একবার আসুন মাননীয় ঈশ্বর
বিশ্বাসের বাজার বড়ো মন্দা যাচ্ছে এ্যাখোন।
আপনার সেই প্রাক্তন জনপ্রিয়তা ক্রমহ্রাসমান
কাজেই বিশেষভাবে আয়োজিত জনসভায়
কমপক্ষে একটি জরুরি ভাষন তো দিতেই হবে
অন্যথায় আগামী নির্বাচনে নির্ঘাৎ হবেন ব্যর্থ।
আপনার কালাকানুন কিছু কিছু অন্তত:
সংশোধন করাও আবশ্যক কেননা
রমনীকুল ইদানিং ইভকে অতিক্রম করেছে
এবং সমস্যার অক্টোপাস নিয়মিত চলাচল করে
আমাদের ঘরদোরে মগজে এখন।
গাঁজা খাওয়ার অভ্যাস বোধহয় করেননি
মাইরি, ওটা বড়ো চমৎকার জিনিস।
হে ঈশ্বর একবার আসুন আপনারি নিয়ন্ত্রিত
সুরম্য সুখের অসুখের এই আধুনিক ব্রোথেলে
সংগে কিছু স্বর্গীয় বেশ্যা আনাও আবশ্যক
(কারন পৃথিবীর রমনীরা আদৌ রমণী কিনা
করোটিতে এরকম সন্দেহ নড়াচড়া করে সারাক্ষন।)
যদিও বুকের গম্বুজে প্রেম এবং ছলনা ও
অন্যান্য গুনাগুন ঢেকে রেখে তারা নিশ্চিন্ত
হে চালক অন্তত একবার আসুন আমাদের এখানে
একটু পর্যবেক্ষন বৈ তো নয় এবং বিশেষভাবে
আয়োজিত জনসভায় একটি জরুরি বক্তৃতা মাত্র–
কথা দিচ্ছি বক্তৃতা শেষে আপনি ফিরে গেলে
আমরা স্বর্গীয় আশীর্বাদের অবিশ্বাস্য ভয়ে
যার যার নিজস্ব আশীর্বাদের ব্রোথেলে ঢুকবো
এবং হতাশার স্তন চুষে চুষে
নির্বিঘ্ন কাটিয়ে দেবো সমস্ত রাত।
আমি একজন ঈশ্বর
আমায় যদি তুমি বলো ঈশ্বর;
আমি বলব হ্যাঁ আমি তাই।
আমায় যদি বলো পাপী শয়তান।
আমি বলব হ্যাঁ আমি তাই-ই।
কারণ আমার মাঝে যাদের অস্তিত্ব
তার একজন ঈশ্বর; অপরজন শয়তান,
তাই যখন শয়তানের ছবিটি ভাসে
আমার মানব অবয়বে– তখন আমি পাপী।
আর সত্যের পূর্নতায় আমি
মানবের কল্যানে আমার ধর্ম–
ঠিক তখনই আমি ঈশ্বর, কারণ
সত্য, পুন্য আর মানবতাই ঈশ্বর।
যাকে তোমরা বলো ঈশ্বর–
আমি তাকে বলি সত্য, ন্যায়;
অতএব আমার পক্ষে একজন
ঈশ্বর হওয়া বিচিত্র নয়।
ঈশ্বর তুমি পাপী
ঈশ্বর তুমি পাপাচারী শয়তান;
অনাথের শেষ সম্বল কেঁড়ে নিয়ে
তুমি মদের পেয়ালায় রক্ত ঢালো
প্রাসাদের স্বপ্ন-চূড়ায় নির্বিঘ্নে
পান কর; চোখে রকনেশা মেখে।
তুমি নাকি ভগবান!
কল্যানময়; মানবের হিতাকাংখী!
করুনাময় বিশ্বের অধীশ্বর!
এর কৈফিয়ত কে দেবে ঈশ্বর?
কেন, কেন আজ এখনও
কাঙ্গাল অনাহারী বুকের উপর
সোনার তাজমহল গড়ে ওঠে?
কেন বুভুক্ষুর সম্মুখে নিবিড় আনন্দে
ভোদে মত্ত তোমার হাউণ্ড অথবা এ্যালসেসিয়ান
আমরা বাঁচতে চাই, শান্তি চাই–
তাই কি আমরা পাপী?
শয়তান অন্যায়ী আর কেউই নয়–
সে তুমি– মুখোশধারী ঈশ্বর!
তাই এবার আকাশ স্বর্গ থেকে তোমায়
পথে নামিয়ে ছিঁড়ে খাব
তোমার বিলাসিত দেহ।
মাংশের মুখোশ
একটি মানুষ খুন কোরে এই তো এলাম আমি
প্রার্থনা ঘরে,
দ্যাখো শরীরে আমার কি মধুর আতরের ঘ্রান
কি মোহন স্বর্গীয় শোভা সারা অবয়ব জুড়ে,
আহা ঈশ্বরই সব মঙ্গল করেন!
এই দ্যাখো একজন কুমারীর যোনির মাংশ
আমার বুক পকেটে,
আমি কি বিশ্বাসযোগ্য নই, এখনো কি আমি নই ত্রাতা?
চোখে মুখে তোমরা কি দ্যাখো না আমার সেই অপূর্ব ছবি?
ঈশ্বরের শেষতম রক্ষক আমি এই কলুষিত পৃথিবীতে
আমাকে অবজ্ঞা কোরো না।
হে নরকবাসীগণ নিশ্চয়ই তোমাদের পথ ভুল।
এখনো হত্যার রক্তে করোনি স্নান, পূর্ন হওনি ঘৃণাবোধে?
এখনো সত্যের মতো ভ্রান্ত শবদেহ নিয়ে রয়েছো মুখর?
নিশ্চয়ই তোমরা নরকবাসী হবে।
এই দ্যাখো শিশুদের মাংশ কি সুস্বাদু, আহা
কি চমৎকার অসহায় মানুষের বেদনার্ত হৃদয়।
যতোটুকু পারো কেড়ে নাও মানুষের প্রাপ্যের ফল
যতো পারো যন্ত্রনা বিদ্বেষে ভরে তোলো পৃথিবীর জলবায়ু।
হে পুন্যার্থী মানুষেরা
মনে রেখো, ঈশ্বরই সব মঙ্গল করেন, তাঁর প্রতি নিবেদিত হও।
এই দ্যাখো, একজোড়া কাটা মাথা, একজন কুমারীর যোনির মাংশ
আমার বুক পকেটে,
আমি কি বিশ্বাসযোগ্য নই?
রবীন্দ্রনাথ তোমার কবিতা উয়িদড্র করো
রবীন্দ্রনাথ তোমার কবিতা তুমি
ফিরিয়ে নাও।
বড্ড বেশি মিথ্যে কথা ফেলেছো লিখে
তোমার কবিতা তুমি ফিরিয়ে নাও।
মানস সুন্দরী বলে কাউকে তো
দেখি না কোথাও কোনো খানে…
ওরা মানস সুন্দরী নয়– ওরা ফানুস
ভালবাস নয় ওরা কসমেটিকসের
জঘন্যতম পুজারী
ও কবিতা ফিরিয়ে নাও রবীন্দ্রনাথ।
যেতে নাহি দেবো বলে না তো কেউ
ঘৃনার নৃশংস কন্ঠে বলছে সবাই
যেথা পারো চলে যাও যেথা খুশি।
সোনার খাটে ঘুমাচ্ছে রাজারকুমার ঘুমোক–
তুমি তোমার কবিতা ফিরিয়ে নাও।
কাকে তুমি বলেছো সন্ধার মেঘমালা
ও তো সাপ উদ্যত বিষাক্ত ফনা,
কোন বিশ্বাসে ওকে ছোঁবো
কি বিশ্বাসে রাখবো ওকে বুকের সিন্দুকে
কোন অপভ্রমে চোখে ওর রাখবো চোখ
ও তো চোখ নয় ওটা এক সুরম্য ফাঁদ।
কবিতাগুলো ফিরিয়ে নাও রবীন্দ্রনাথ
যন্ত্রনার নরকে হচ্ছি নিঃশেষ
ক্ষুধার্ত মাটিতে তোমার কবিতাগুলো
বড়ো অবাস্তব।
আজ থেকে ওসব বাতিল– সব বাতিল
এই তুমুল ঘোষনা ঘোষিত হলো।
চেয়ে দ্যাখো এ চোখে স্বপ্ন নেই
কোন কল্পনার শিশুগাছ হচ্ছে না বড়ো
দেখো কোন প্রেম নেই হতাশা ছাড়া
এ দুটি চোখ শুধু সাক্ষী হয়ে আছে।
রবীন্দ্রনাথ তোমার কবিতা ফিরিয়ে নাও
নয়তো গাঁজার আসরে তোমাকেসহ
তোমার সমগ্র রচনাবলীকে
জঘন্যভাবে হত্যা করবো।
Leave a Reply