কোনো ঐন্দ্রজালিকের প্রতি

আপনি ঐন্দ্রজালিক, ভুবনের আড়ালে ভুবন দেয় ডাক
মায়াবী সংকেতে, চলে নানা খেলা। স্টেজে স্টেজে সবাইকে তাক
লাগিয়ে দেয়াই কাজ আপনার। হয় কত কী যে
শত শত বিস্ফারিত দৃষ্টির সম্মুখে আর নিজে
আপনি থাকেন অবিচল, বিজ্ঞাপনী হাসি হেসে ক্ষিপ্রতায়
ঘটান বস্তুর রূপান্তর বার-বার। কী প্রথায়
চোখের পলকে ফের দ্বিখণ্ডিত উদ্ভিশন শরীর খেলাচ্ছলে
লাগান নিখুঁত জোড়া, অবিশ্বাস্য বটে। লোকে বলে,
রেখেছন আস্তিনের আড়ালে লুকিয়ে সব যন্ত্রপাতি, সত্যি
আপনি তো অলৌকিক মেকানিক! যে যাই বলুক, একরত্তি
খুশি নই
আপনার ইন্দ্রজাল দেখে, বরং বিষণ্ন হই
রঙিন টিকিট কিনে প্রতিবার। বস্তুত নিশ্চুপ থাকি উল্লোল মেলায়।

চাতুর্য, বিস্ময় আছে খুব এ খেলায়,
ভালবাসা নেই;
তাই শেষে অসামান্য হয় না কিছুই সামান্য তো সামান্যেই
আসে ফিরে। এ তুচ্ছতা নিয়ে মেতে কী আনন্দ পান?
কী লাভ সাজিয়ে ক্ষণিকের এই অলীক বিতান?
পতিত জমিনে কেন হেলায় বাদ্যর তালে তালে অবিরত
ফলান না ফসল অথবা দেশে দেশে আছে যত
অস্ত্রাগার, সেগুলো উদ্যান কেন হচ্ছে না এখনও হায়,
এ বিখ্যাত ইন্দ্রজালে? কেন ট্যাঙ্কগুলো আপনার ইশারায়
হয় না পুষ্পক রথ? রহস্য-ব্রোকেড যাচ্ছে ছিঁড়ে বিজ্ঞানের কী ব্যাপক
হাতে ক্রমাগত আর শুধু রূঢ় ছক
জন্ম নেয় দেশ-দেশান্তরে; এলো বড় বেশি স্বচ্ছতার কাল,
পারলে আমাদের রিক্ত মনে দিন ছড়িয়ে প্রকৃত ইন্দ্রাজাল।