স্যানাটোরিয়াম

কী এক অসুখ আজ আমাদের অস্থিমজ্জায় বেঁধেছে বাসা।
সত্তায় ধরেছে ঘুণ, এতদিনে জেনে গেছি, বস্তুত এ রোগ
সহজে সারার নয়। চৈতন্যের এলাকায় এ কেমন ওলটপালট
চলছে সর্বদা বেলা-অবেলায়-দেখি, সব বৃক্ষ খর বানে
যাচ্ছে ভেসে শিকড় সমেত; পাখিগুলো মুখ থুবড়ে প’ড়ে আছে
কাদা জলে। একরাশ পচে-যাওয়া পাতা, কতিপয় ভাঙা ডাল,
একদা যা ছিল বৃক্ষ তার করুণ ভগ্নাংশ, মৃত্তিকাস্থ;
আমি সেই বৃক্ষটিকে বৃক্ষের চেয়েও বেশি ঋদ্ধ কিছু ভাবতাম।

দীঘল ঘোমটা টানা বউ, বরযাত্রী, সাপুড়ে, জুয়াড়ী আর
ভবঘুরে ধোপা আর নব্য যুবা ইত্যাদি সমেত এক সাঁকো
কোথায় তলিয়ে যায় অকস্মাৎ। দেবতুল্য মানুষের মুখ
কুকুরের অবয়বে হতেছে বিলীন। বার বার অনুরূপ
দৃশ্যাবলি ওঠে ভেসে চতুর্দিকে-এ রোগের এই তো লক্ষণ।

আমি তো কাদায় আজ ভীষণ ডুবিয়ে পদযুগ কী ব্যাপক
শূন্যতায় চেয়ে থাকি আর আলো বিশ্বাসঘাতক বলে খল
অন্ধকারে মশানের অভ্যন্তরে থেকে যাই, মাথায় আগুন
নিয়ে ঘুরি, পোড়া কাঠ অথবা করোটি বেজে ওঠে পায়ে লেগে
ইতস্তত, ফিরি শোক গাঁথা হয়ে; ব্যাপ্ত অস্থিমজ্জায় বীজাণু।
অসুখ সারাব বলে যেতে চাই নিরঞ্জন স্যানাটোরিয়ামে।

অথচ পাহাড়ে কিংবা নদীতীরে কোনো স্যানাটোরিয়াম নেই।