ফেরার পর

কেন এলাম? বৃথাই এলাম
বুকের মধ্যে যে বাড়িটা জ্বলছিল খুব
আপন হয়ে, তারা হয়ে
তার নিকটে কেন এলাম? বৃথাই এলাম।

শুধুই কি আজ
আকাশ-ছেঁড়া করুণ আলো
মাখতে এলাম চোখের পাতায়,
স্টেনের ডগায়, শিরন্ত্রাণে?
কবরখনার শূন্যতাকে
ধীরে-সুস্থে চাখতে এলাম
এমন নিঝুম বেলাশেষে?

কেন এলাম? বৃথাই এলাম।
ডালিম গাছের ছায়ায় ঘোরে তরাস-ছাড়া
শুবরেপোকা।
একদা এই গাছতলাতে মোয়া হাতে
চলতো বেজায় হেলেদুলে
টেবো খোকা। এবং ঢাকাই শাড়ি হঠাৎ
উঠতো ভেসে টলমলানো রোদমুকুরে।
দরগা-দোরে মানৎ রাখা, কুমারীদের
পুণ্যি পুকুর-সব কিছুরই চলন ছিলো,
ছিলো মানে গেরস্থালির
এখানে এই মিশ্র পাড়ায়, বলতে পারি।
কেন এলাম? বৃথাই এলাম।
বেলাশেষের রোদ পড়েছে ভাঙা ভিটের
ফজুল ঘাসে। ফুটোফাটা তোরঙ্গটার
অতীত আছে বোকা-সোকা
দৃষ্টি মেলে, ফতুর ফাঁকা।
তালচটকের ঈষৎ জেদি চঞ্চলতায়
চমকে ওঠে গোছালো এই নীরবতার
কোমল কেশর।

ভাবছি যখন আজকে মৃদু সাঁঝ বাতিটা
কাঁপবে না তো কারুর হাতে,
হঠাৎ তখন ভুঁই-কামড়ি এগিয়ে এসে প্রিয়ংবদা
হলো যেন সানুকম্প
লৌকিকতায়।
ঘুঘু-চরা ভিটেয় তবে বৃথাই এলাম?