অবসর

যদি কোনো মধ্যরাতে আমার বিস্মিত জানালার
ভেতরে গলিয়ে গলা ফিসফিসিয়ে কেউ
হঠাৎ ফিগ্যেস করে, ‘তোমার কি আছে অবসর’,
আমি কি থাকবো নিরুত্তর?

আমার কিসের অবসর
এই জ্যোৎস্নাহীন স্তব্ধ মধ্যরাতে? আমি তো যাবো না
এখন তারার ডাকে অথবা বৃক্ষের ডাকে; আমি
এমন মুহূর্তে ঘর ছেড়ে
বেরিয়ে পড়ার লোভ বুক-পকেটের
গহ্বরে গচ্ছিত রেখে নিশ্চিন্তের তাঁবুর ভেতর
একটু ঘুমোতে চাই। স্বপ্ন এলেবেলে
খেলুক আমার সঙ্গে অথবা আড়াল থেকে জেব্রা
ছুটে গেলে একপাল, স্তব্ধতার কাছে
কৃপা ভিক্ষা করে নেবো। তবে কি আমার
তেমন সৌন্দর্যবোধ নেই?
কোন ডাকঘর থেকে কোকিল এনেছে টেলিগ্রাম
এত রাত? টেলিগ্রামে ডালপালা উদ্ভিদের ঘ্রাণ,
পলাশের ছোপ
লেগে থাকে কিংবা অলৌকিক
সিলমোহরের ছাপ? আমার শৈশব
কোথায় যে রইলো কুয়াশা জড়ানো কোন্‌
বকুলতলায়? খুব বেশি পথে পদচিহ্ন আঁকিনি কখনও,
তবু কোনো কোনো পথ শৈশবের কেমন
চিহ্ন হয়ে থাকে।

আমার কিসের অবসর
এই জ্যোৎস্নাহীন স্তব্ধ মধ্যরাতে? শৈশবে ফেরার?
মনিং স্কুলের ঘণ্টা শুনতে শুনতে
বাক্সের ভেতরকার বাঁশিটির জন্যে মন কেমন করার?
অথবা শিরায়
বখাটে ছোকরার মতো রক্ত শিস দিলে
কান পেতে শোনার গোপন অবসর?

স্বর্ণপদকের লোভে বিচারবোধের চিতা জ্বেলে
কোটাল আমার অবসর চুরি করে
বানায় রাজার বাড়ি। হাওয়াই বাড়ির নিধিরাম সর্দারেরা
আমাকে অবধ্য দূত ভেবে খুব হেলায় প্রান্তরে রেখে আসে।