ভালোবাসা তুমি

ভালোবাসা তুমি অনাবৃষ্টিতে
কেমন রুক্ষ্ম, কী দগ্ধ আজকাল।
তারা-পাতা নেই, পাখিরা উধাও;
ভীষণ রিক্ত তোমার সলাজ ডাল।

কতদিন তুমি বৈশাখী রোদে
ভেবেছি শ্যামল ছায়ার আদর দেবে।
কিন্তু পালিয়ে বেড়ালাম শুধু
ছায়াকে তোমার প্রেতায়িত ছলা ভেবে।

চক্ষু কোটরে নিশীথ অশ্ব
রেখে গেছে কত দুঃস্বপ্নের আঁধি।
লিবিড়ো-তাড়িত সুনীল গুহায়
নিজেকে সোনালি সাপের শরীরে বাঁধি।
হৃদয়ের ঢের কাঞ্চন মেঘ
বৈরী হাওয়ায় কোথায় পালালো দূরে।
সংশয় যেন কৃষ্ণ বাদুড়,
ওড়ে অবিরত চিত্ত বলয় জুড়ে।

সমৃদ্ধির মায়ামারীচের
সংজ্ঞা-হরণ দারুণ আকর্ষণে
ধনিক যুগের গোধূলিতে ভাসি
যূথছুট ম্লান, নরমুণ্ডের বনে।

যেসব ভাবনা অবচেতনের
পরাণ-ঋদ্ধ গুহার তিমিরে লোটে,
কখনো হঠাৎ আলোর খোঁচায়
আর্তকণ্ঠে তারাও চেঁচিয়ে ওঠে।

স্বপ্ন এখন ছড়ে যাওয়া-দুধ,
আতঙ্কময় সময়ের জের টানি।
সুবিশ্ব মৃত, পাইনিকো টের
হয়ে গেছি কবে সংশয়-বেধা প্রাণী।

ভালোবাসা তুমি ক্ষয়-চিহ্নিত,
পত্রালিছুট, তোমার কী দোষ বলো?
ব্যাপক খরায় বহুদিন আমি
তোমার শিকড়ে ঢালি নি ঈষৎ জলও!