অতি পুরাতন বৃষ্টি

মেঘে-ঢাকা রাত্রি নয়, ভরা-দুপুরেই
যখন পরীর মতো গান গেয়ে ওরা আসে এই
বাংলার আকাশ থেকে নিচে
দিগন্তের ঘাসে দক্ষিণের শান্ত বিলে শহরের পিচে
আমারও প্রাণের ভাষা সুর হয়ে ঝরে
এ মাহ ভাদরে।
আবার তোমাকে পাই হৃদয়ের সৃজনী-উত্তাপে
সমস্ত শরীর হয় দীপ্ত শিখা, অন্ধকারে কাঁপে।

মেঘে-ঢাকা এই ভরা-দুপুরের কাছে
হয়তো তোমার কিছু রহস্য-নিবিড় কথা আছে
শুধুবার, তাই চোখে অপার বিস্ময়
তরঙ্গের তরণীর মতো কাঁপে, মনের নিঃশব্দ লোকালয়
দূরগামী উত্তরমেঘের
নিত্যপথে ভাষা পায় বেদনার ব্যাপ্ত আনন্দের।

যে-পথে হাঁটিনি আমি কোনো দিন, সেখানে এখন
স্তব্ধতার সুরে সুরে নেমেছে বর্ষণ
শ্রাবণের। পথের যে-কোনো গাছ, পশু, একা পাখি, সারি সারি বাড়ি
মহাশ্চর্য মেঘ হয়ে যায়
বৃষ্টির ধোঁয়ায়।

কখনো যাবে না চেনা কে ছিল ঘুমিয়ে
না-দেখা পল্লীর
মাটির দেয়াল-ঘেরা দূর ঘরে স্বপ্ন মুড়ি দিয়ে
এমন বৃষ্টির
আচ্ছন্ন দুপুরে মিশে। পাশে তার কেউ
ছিল না কি জেগে একা রমণীর ঘুমের সৌরভে?

যখন প্রাণের সব ঢেউ
জেগে ওঠে, কথা বলে, রক্তের আশ্চর্য কলরবে
বৃষ্টির দুপুরে মনে পড়ে
বর্ষার মতন গাঢ় চোখ মেলে তুমি আছ দু’দিনের ঘরে।