খেঁদি

তখন সবে সন্ধ্যা।–মালতী ঘরে এসে প্রদীপটা জ্বালতেই তার স্বামী বলে উঠল–“লতি…আমি একটা নাম ঠিক করেছি।”
“কি?”
“ওই যে তুমি বল্লে–‘কি’।”
“তার মানে?”
“ইংরিজি key মানে চাবি আর বাঙলা ‘কি’–একটা প্রশ্ন। মেয়ে মানুষের পক্ষে বেশ মানানসই নাম হবে।”
“এখন কোথায় কি তার ঠিক নেই–এখন থেকেই নামকরণ! আর আমার মেয়েই হবে তুমি জান্‌লে কি করে? ও জ্যোতিষীর কথায় আমার একটুও বিশ্বাস নেই।”
“না–না ঠিক মেয়ে হবে–দেখো তুমি। আমাদের শ্যামবাবু জাগ্রত জ্যোতিষী!”
“ধর যদি মেয়েই হয়–তা বলে ওই নাম রাখতে হবে? কত সব ভাল নাম আছে–”
“যথা–শরৎশশী, নিভাননী, ইন্দুবালা, প্রভা, প্রতিভা, সুধা, আশালতা–এই সব ত? সব বাজে–পুরানো, সেকেলে, এক ঘেয়ে! আমার মেয়ের নাম হবে একেবারে নতুন।”

মালতীর প্রসব হবার দুমাস পূর্বে তার স্বামী কলেরায় মারা গেল। প্রসব হতে গিয়ে মালতীও মারা গেল। জ্যোতিষীর কথা ফলেছিল–মালতীর মেয়েই হয়েছিল। সে এখন তার মামার বাড়ী সোনারপুরে মানুষ হচ্ছে। তাঁরা তার নাম রেখেছেন “খেঁদি!”

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *