ঋগ্বেদ ০৬।০৭

ঋগ্বেদ সংহিতা ।  ৬ মণ্ডল । ৭ সুক্ত

বৈশ্বানর অগ্নি দেবতা । ভরদ্বাজ ঋষি ।

১। বৈশ্বানর অগ্নি স্বর্গের শিরোভূত, পৃথিবীর ব্যাপক যজ্ঞার্থ জাত, জ্ঞানসম্পন্ন, সম্যক দীপ্তিসম্পন্ন, মানবগণের অতিথিভূত, দেবগণের মুখস্বরূপ ও রক্ষণকারী। দেবগণ তাহাকে উৎপাদিত করিয়াছেন ।

২। স্তোতৃবর্গ যজ্ঞের বন্ধনকারী, ধনের আধারভূত, হবাসকলের আশ্রয়স্বরূপ, অগ্নির সম্যকরূপে স্তব করেন । দেবগণ যজ্ঞীয় দ্রব্য সকলের বহনকারী ও যজ্ঞের কেতু স্বরূপ বৈশ্বানরকে উৎপাদিত করেন।

৩। হে অগ্নি ! তোমা হইতেই হব্য প্রদাতা জ্ঞানসম্পন্ন হয়। বীরগণ তোমা হইতেই শক্র বিজেতা হয়। অতএব হে দীপ্তিশালী বৈশ্বানর ! তুমি আমাদিগকে বাঞ্ছিত ধন প্রদান কর ।

৪ । ছে অবিনশ্বর অগ্নি ! তুমি পুত্রের ন্যায় অরণিদ্বয় হইতে উৎপন্ন ; সমস্ত দেবগণ তোমাকে স্তব করেন। হে বৈশ্বানর ! যৎকালে তুমি পালনকারী অন্তরিক্ষ ও পৃথিবী দ্বয়ের মধ্যে দীপ্ত হও, তৎকালে তাঁহারা ত্বদীয় যাগ কার্য্য দ্বারা অমরত্ব লাভ করেন ।

৫ । হে বৈশ্বানর অগ্নি ! কেহই তোমার সেই সমস্ত মহৎ কার্য্যের বাধা দিতে সমর্থ হয় না । তুমি মাতা ও পিতার ক্রোড়ভূত অন্তরিক্ষে উৎপন্ন হইয়া দিবসের কেতু স্বরূপ সূৰ্য্যকে অস্তরিক্ষ পথে সংস্থাপিত করিয়াছ ।

৬। বৈশ্বানরের বারি প্রজ্ঞাপক দীপ্তিদ্বারা অস্তরিক্ষের উন্নতপ্রদেশ সকল পরিমিত হইয়াছে। সেই বৈশ্বানরেরই শিরঃস্থানীয় মেঘরূপে পরিণত ধূমে বারিরাশি অবস্থান করে এবং তাহা হইতেই সাতটা নদী শাখার ন্যায় উদ্ভূত হইয়াছে (১) ।

৭ । শোভন কৰ্ম্মকারী যে বৈশ্বানর ভুবন সকল নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন, যিনি জ্ঞানসম্পন্ন হুইয়া অন্তরিক্ষের দীপ্তিশালী নক্ষত্রাদির স্বষ্টি করিয়াছেন এবং সমস্ত ভূতজাতকে চতুদিকে ব্যাপ্ত করিয়াছেন ; অজেয়, পালক ও বারিরক্ষক সেই বৈশ্বানর বিরাজ করিতেছেন।

————
(১) এখানেও সপ্ত নদীর উল্লেখ আছে।