৩২. বিভীষণের কৈলাসে গমন

লঙ্কাছাড়ি ব্যোমপথে যাইতে যাইতে।
মন্ত্রিগণে বিভীষণ লাগিলা কহিতে।।
উপস্থিত বিপদ করিয়া নিরীক্ষণ।
করিলাম আমিহ অগ্রজে উপেক্ষণ।।
তাহে যদি রাম কাছে করি হে গমন।
অখ্যাতি করিবে যাবতীয় অজ্ঞ-জন।।
অতএব মনে করি এবে না যাইব।
রাবণ-বিনাশ পরে প্রস্থান করিব।।
এক্ষণে থাকিয়া কোন নির্জ্জন কাননে।
শ্রীরাম-চরণপদ্ম ধ্যান করি মনে।।
এই পরামর্শ করি, কিন্তু নিজ মন।
সুস্থির করিতে নারি পাইয়া যাতন।।
রাম-পাদপদ্ম মন করিতে সেবন।
চঞ্চল হয়েছে মন না মানে রাবণ।।
অতএব কি করিব না হয় নিশ্চয়।
তোমা সবে কহ ইথে কি কর্ত্তব্য হয়।।
করিয়াছি আমি ইথে পরামর্শ আর।
তাহাও কহি যে শুনি করহ বিচার।।
মোদের অগ্রজ ভ্রাতা হন ধনপতি।
সুশীল পরম বিজ্ঞ অতি শুদ্ধমতি।।
কি কহিব আর তাঁর গুণের বিস্তার।
সখা হয়েছেন শম্ভু গুণেতে যাঁহার।।
তাঁরে জিজ্ঞাসিলে যে করিবে আজ্ঞাপন।
করিব তাহাই এই হয় মোর মন।।
বিভীষণ-বাণী শুনি চারি মন্ত্রী কয়।
করেছেন এই যুক্তি সুন্দর নিশ্চয়।।
অতএব সেই স্থানে চলহ এক্ষণ।
করিবে পরেতে তিনি কহিবে যেমন।।
এতেক বচন শুনি আনন্দিত মন।
ব্যোমপথে কৈলাসে চলিলা বিভীষণ।।