১৬. বারাণসীর উৎপত্তি কথন

মন দিয়া শুন বারাণসীর আখ্যান।
বারাণসী তীর্থ যাহে হইল নির্ম্মাণ।।
এককালে কাটিলেন হর দ্বিজ মাথা।
ব্রহ্মহত্যা পাপ তাঁর না হয় অন্যথা।।
ব্রহ্মহত্যা চাপিলেক গিরিশের স্কন্ধে।
কার্ত্তিক গণেশ আর কাত্যায়নী কান্দে।।
গৌরী কন কেন বা কাটিলে বিপ্র-মাথা।
ব্রহ্মবধ হইল কে করিবে অন্যথা।।
শুনিয়া গৌরীর কথা শিব হাসি ভাষে।
পৃথিবীতে গেল গঙ্গা কত পাপ নাশে।।
বৃষভে চাপিয়া তবে শঙ্করী-শঙ্কর।
দাণ্ডাইল সুরধুনী-তীরেতে সত্বর।।
কুশাগ্রে করিয়া হর কৈল পরশন।
ব্রহ্মহত্যা পাপ তাঁর হৈল মোচন।।
ধূর্জ্জটী বলেন দেখ গঙ্গার পরীক্ষা।
পঞ্চক্রোশ যুড়ি হর দেন গণ্ডী রেখা।।
সেই পঞ্চক্রোশ তীর্থ নাম বারাণসী।
তাহাতে ছাড়িলে তনু শিবলোকে বসি।।
এক রাত্রি গঙ্গা তথা করি অবস্থান।
করিলেন ভগীরথ সহিতে প্রস্থান।।
আগে যায় ভগীরথ শঙ্খ বাজাইয়া।
জহ্নুর নিকটে গঙ্গা মিলিল আসিয়া।।
পাতায় লতায় কৃত জহ্নুমুনির ঘর।
গঙ্গাস্রোতে ভেসে যায় দেখিতে দুষ্কর।।
চক্ষু মেলিলেন মুনি ভাঙ্গিলেক ধ্যান।
গণ্ডূষ করিয়া সব জল করে পান।।
কতদূরে গিয়া ভগীরথ ফিরে চায়।
কোথা গেল গঙ্গাদেবী দেখিতে না পায়।।
অকস্মাৎ গঙ্গাদেবী দেখিতে না পায়।
দেখে মুনি বটতলে বসি আছে ধ্যানে।।
জহুরে জিজ্ঞাসে ভগীরথ বিনয়েতে।
অকস্মাৎ গঙ্গা মোর কেবা নিল পথে।।
মুনি বলিলেন শুন রাজা ভগীরথ।
গঙ্গারে আনিতে তব নাহি ছিল পথ।।
মম ঘর ভাঙ্গে গঙ্গা কেমন মহৎ।
নিকটে ব্রহ্মার গিয়া কহ ভগীরথ।।
আন গিয়া ব্রহ্মা মম করিতে কি পারে।
গণ্ডূষ করিয়া গঙ্গা রেখেছি উদরে।।
মুনির বচন শুনি লাগিল তরাস।
আদিকাণ্ড রচিল পণ্ডিত কৃত্তিবাস।।