• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • লেখক
  • My Account
  • লেখক
  • My Account
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা PDF ডাউনলোড

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

০১. ভূমিকা : পদাবলী-মাধুর্য্য

লাইব্রেরি » দীনেশচন্দ্র সেন » পদাবলী মাধুর্য্য » ০১. ভূমিকা : পদাবলী-মাধুর্য্য

আমার বয়স যখন ১৩ বৎসর, তখন আমার পিতার পুস্তকশালায় চণ্ডীদাস ও বিদ্যাপতির একখানি ছাপা পুঁথি আমি পাইয়াছিলাম, ইহা ১৮৭৮ সনের কথা। পিতা ইংরেজীনবীশ এবং ব্রাহ্মধর্ম্মে আস্থাবান্‌ ছিলেন। সেকালের ব্রাহ্ম-মতাবলম্বীরা চৈতন্য-ধর্ম্মের, বিশেষ করিয়া বংশীধারী কৃষ্ণের বিদ্বেষী ছিলেন। তথাপি আমাদের ঢাকা জেলায় কৃষ্ণকমল গোস্বামী তাঁহার ‘রাই-উন্মাদিনী’ ও ‘স্বপ্ন-বিলাস’ যাত্রায় কৃষ্ণ-প্রেমের যে বন্যা বহাইয়া দিয়াছিলেন, তাহা তথাকার ব্রাহ্মদিগের আঙ্গিনায়ও ঢুকিয়াছিল,–পৌত্তলিকের এই বৈপ্লবিক অভিযানে তাঁহাদের নিরাকার চৈতন্য-স্বরূপ ব্রহ্ম-ব্যূহ ঠেকাইয়া রাখিতে পারে নাই।
আমাদের বাড়ীতে বৈষ্ণব-ভিখারীরা আনাগোনা করিত এবং পিতামহাশয় কখনও কখনও সেই ভিখারীদের মুখে “শুন ব্রজরাজ, স্বপনেতে আজ, দেখা দিয়ে গোপাল কোথায় লুকালো” ইত্যাদি গান শুনিতে ভালোবাসিতেন। আমি সেই কিশোর বয়সে নিবিষ্ট হইয়া সারেঙ্গের সুরের সঙ্গে গায়কের কণ্ঠস্বরের আশ্চর্য্য মিল ও একতান ঝঙ্কার শুনিয়া মুগ্ধ হইতাম। সারেঙ্গ নানা লীলায়িত ছন্দোবন্ধে কখনও ভ্রমরগুঞ্জনের মত, কখন অপ্সরী-কণ্ঠ-নিন্দিত সুরে বিনাইয়া বিনাইয়া–মিষ্ট মৃদু তানে “ঋ-ঋ” করিয়া কানে মধু ঢালিয়া দিত, সেই সঙ্গে
“আহা মরি, সহচরি, হায় কি করি, কেন এ কিশোরীর সুশর্ব্বরী প্রভাস হ’ল”–
পদের “রি”গুলি যে কি অদ্ভূত সঙ্গত করিত, তাহা আমি বুঝাইতে পারিব না, মনে হইত, যেন কবি কৃষ্ণকমল কণ্ঠস্বর ও সারেঙ্গের এই অপূর্ব্ব একতান সঙ্গত করিবার জন্যই এই পঞ্চ ‘রি’-রণিত পদটি রচনা করিয়াছিলেন, গানটি যেন সারেঙ্গের মর্মান্ত করুণ সুরের সঙ্গে বিলাপ করিতে থাকত।
আমি ইহাও পূর্ব্ব হইতে বৈষ্ণব-পদের অনুরাগী হইয়াছিলাম আমার অষ্টম বৎসর বয়সে একদিন এক বৃদ্ধ বৈরাগী তাঁহার পাঁচ বৎসর বয়স্ক শিশু পুত্রকে কৃষ্ণ সাজাইয়া একতারা বাজাইয়া মিলিত-কণ্ঠে-
“যদি বল শ্যাম হেঁটে যেতে চরণ ধূলায় ধূসর হবে,
গোপীগণের নয়নজলে চরণ পাখালিবে।”
গাহিতেছিল, সেই আমার প্রথম মনোহরসাই গান শোনা। আমার মনে হইয়াছিল, স্বর্গের হাওয়া আসিয়া আমার বুক জুড়াইয়া গেল;–কেহ যেন আক মুঠো সোনা দিয়া আমাকে আশীষ করিয়া বলিয়া গেল, “এই তোকে রত্নের সন্ধান দিয়া গেলাম।”
এই ঘটনার কিছুদিন পরে মাণিকগঞ্জের বাজারের অনতিদূরে দাসোরার খালের কাছে এক চতুর্দ্দশ বৎসর-বয়স্কা রমণী কাহিতেছিল–
“কত কেঁদে মর্‌বি লো তুই শ্যাম অনুরাগে–
নব-জলধররূপ বড় মনে লাগে–
ভেবেছিলি যাবে দিন তোর সোহাগে সোহাগে”–
একটা খোলা জায়গায় বাজারের লোকেরা সতরঞ্চি পাতিয়া আসর তৈয়ারী করিয়া দিয়াছিল; বহু শ্রোতা–কেহ দাঁড়াইয়া, কেহ বসিয়া গান শুনিতেছিল। আমার সেই আট বৎসর বয়সের কথা এখনও মনে আছে। রমণীর বর্ণ গাঢ় কৃষ্ণ, তদপেক্ষা গাঢ়তর কৃষ্ণ কোঁকড়ান কুন্তল পুঞ্জ পুঞ্জ ভ্রমরের মত তাহার পৃষ্ঠে ও কর্ণান্তে দুলিতেছিল,–সেই কৃষ্ণবর্ণের মধ্যে একটা লাবণ্য ও তাহার সুরে একটা আপনা-ভোলা আবেশ ছিল, তাহা আমি এখনও ভুলিতে পারি নাই–কালেংড়া রাগিণীর চূড়ান্ত মিষ্টত্ব দিয়া সে গাইতেছিল “ভেবেছিলি যাবে দিন তোর সোহাগে সোহাগে”–এখনও সেই নীল-বরণী নবীনা রমণীর কণ্ঠস্বরের রেশ কখনও কখনও আমার কানে বাজিয়া ওঠে। সে আজ ৬২ বৎসরের কথা; যে তিন ছত্র পদ উদ্ধৃত করিয়াছি, তাহা তখনই শুনিয়াছিলাম, তাহা আর শুনি নাই। কত বড় বড় ঘটনা–সুখ-দুঃখ–এই দীর্ঘকাল জীবনের উপর বহিয়া গিয়াছে, তাহাদের স্মৃতি ধুইয়া মুছিয়া গিয়াছে; কিন্তু সায়ংকালে সরিৎস্পৃষ্ট মলয়ানিলে আন্দোলিত নিবিড়-কেশদামশোভিতা নীলোৎপল-নয়নার আকুল কণ্ঠের সেই অসমাপ্ত গীতিকা আমি ভুলিতে পারি নাই। আমার স্মৃতিশক্তি প্রখর, কেহ কেহ এরূপ মন্তব্য করিতে পারেন; কিন্তু তাহা নহে। ঐ পদে আমার প্রাণ যাহা চায় তাহা পাইয়াছিল, এজন্য স্মৃতি তাহা আঁকড়াইয়া ধরিয়া রাখিয়াছে। আমি স্মৃতি অর্থে বুঝি ভালবাসার একটা প্রকাশ; কষ্ট করিয়া রাত জাগিয়া পড়া মুখস্ত করিলে যাহা আয়ত্ত হয় তাহা স্মৃতির ব্যায়ামমাত্র–উহা স্মৃতির স্বরূপ নহে। সন্তান-হারা জননী বিনাইয়া বিনাইয়া মৃত শিশুর জীবনের কত খুঁটি-নাটি কথাই বলিয়া বিলাপ করিয়া থাকেন, শ্রুতিধর কোন স্মার্ত্ত পণ্ডিতেরও হয়ত এর কথা মনে থাকিত না। যাহা ভালবাসা যায়, তাহাই স্মৃতির প্রকৃত খোরাক, তাহা একবার শুনিলে বা দেখিলে আর ভোলা যায় না।

গোড়ায় সুরু করিয়াছিলাম চণ্ডীদাস-বিদ্যাপতির মুদ্রিত পুস্তকের কথা লইয়া। বাবার আল্‌মারীতে জন্‌সনের র‍্যাম্‌ব্লার, এডিসনের স্পেক্‌টেটার ও থিওডোর পার্‌কারের গ্রন্থাবলীর মধ্যে শিক্ষিত-সমাজের অবজ্ঞাত এই চণ্ডীদাসের পদাবলী কি করিয়া স্থান পাইল? আমি নিশ্চিত বলিতে পারি, বৈষ্ণবগায়কের মুখে দুই একটি ‘স্বপ্ন-বিলাসে’র গান শুনিয়া প্রীত হইলেও, পিতৃদেব চণ্ডীদাসের পদ কখনও পড়েন নাই–তথাপি চণ্ডীদাসের পদাবলী তাঁহার আল্‌মারীতে প্রবেশ করিল কি সূত্রে?
বৈষ্ণব-চূড়ামণি স্বর্গীয় জগদ্বদ্ধু ভদ্র মহাশয় এই পুস্তকখানি সম্পাদন করিয়াছিলেন; শিক্ষিত-সমাজে চণ্ডীদাসের এই সর্ব্ব-প্রথম আবির্ভাব। ভদ্র মহাশয় উত্তর-কালে ত্রিপুরার গর্ভর্ণমেণ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষিক হইয়াছিলেন; তখন সেইখানেয়ামি কতকদিন পড়িয়াছিলাম–কিন্তু পিতৃদেবের সঙ্গে তাঁহার আলাপ ছিল না। ঢাকা জানার মত্ত গ্রামবাসী স্বর্গীয় উমাচরণ দাস মহাশয় পিতৃদেবের দূর সম্পর্কে আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। উমাচরণ দাসের মত ইংরেজী-সাহিত্যবিৎ পণ্ডিত এবং সঙ্গীতজ্ঞ ব্যক্তি তখন পূর্ব্ববঙ্গে কেহ ছিলেন না। ভদ্র মহাশয় তাঁহার সম্পাদিত চণ্ডীদাসের ভূমিকার বিশেষ করিয়া ইঁহার কথা উল্লেখ করিয়াছিলেন। তিনি লিখিয়াছিলেন, উমাচরণবাবু তাঁহার অগ্রজপ্রতিম ছিলেন এবং তাঁহার পূর্ণ সাহায্য ভিন্ন তিনি পুস্তকখানি সম্পাদন করিতে পারিতেন না। আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, উমাচরণবাবু সেকালের ইংরেজী-জানা শিক্ষিত সম্প্রদায়ের শীর্ষস্থানীয় হইলেও, গ্রাম্যকবি চণ্ডীদাসের অনুরাগী ছিলেন। পিতামহাশয়কে উমাচরণবাবুই চণ্ডীদাসের পদাবলী উপহার দিয়া থাকিবেন।
এইভাবে চণ্ডীদাস ও বিদ্যাপতির সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় এবং পদাবলী-সাহিত্যে আমার প্রথম প্রবেশ। আমি বইখানি আদ্যন্ত পড়িলাম। ১২।১৩ বৎসর বয়সেই আমি বাইরণ ও শেলীর কাব্য, এমন কি মিল্টনের প্যারাডাইস লস্ট লইয়াও নাড়াচাড়া করিতাম। আমার শিক্ষত পূর্ণচন্দ্র সেন আমাকে বিদ্যাপতির পদ পড়িয়া শুনাইতেন। তিনি প্রথমতঃ ব্রাহ্ম ছিলেন, তার পর উলটা খোঁজ দিয়া একবার গোঁড়া হিন্দু হইয়াছিলেন। তিনি সর্ব্বপ্রথম আমাকে বলেন–এই বৈষ্ণব-কবিদের ভাব আধ্যাত্মিক জীবনের গূঢ় রহস্যপূর্ণ। তিনি অবশ্য বৈষ্ণব-কবিদের ভাব কতকটা উপলব্ধি করিয়াছিলেন, কারণ “নিজ করে ধরি দুঁহু কানুক হাত। যতনে ধরিল ধনি আপনার মাখ” প্রভৃতি পদ পড়িতে পড়িতে তিনি আবিষ্ট হইয়া পড়িতেন। কিন্তু স্কুলে ছিলেন শাক্তের অবতার–সাক্ষাৎ মায়ের মূর্ত্তি; আমরা সকলেই তাঁহার প্রহারে জর্জ্জিরিত হইয়াছি।
কৈশোরান্তে যখন আমার জীবনে নব অনুরাগের ছোঁয়াচ লাগিয়াছিল, তখনও বৈষ্ণব পদ আমি ভোগের রাজ্যের অভিধান দিয়া বুঝি না–ইহা পূর্ণবাবুর কৃপায়।

Category: পদাবলী মাধুর্য্য
পরবর্তী:
০২. “এ কথা কহিবে সই এ কথা কহিবে” »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑