২২. পর্নো কুটিরে কুটিরে

২২. পর্নো কুটিরে কুটিরে

ক.

নগরকেন্দ্রিক জীবনের আরেকটি দিক, যা দারিদ্রের নয়। পুঁজিবাদ বা বিত্তবাদ যাই বলা যাক।

এই জীবনের সঙ্গে জড়িত লক্ষপতি, কোটিপতি, যারা আপার ক্লাস। নিরাপত্তা প্রহরী-ঘেরা প্রাসাদতুল্য আধুনিক স্থাপত্যশিল্পের সৌন্দর্য ও শোভামণ্ডিত নয়নাভিরাম আবাসনে যারা থাকে। যাদের গ্যারেজে একাধিক এস.ইউ.ভি, ইম্পোর্টেড এবং অবশ্যই ব্র্যান্ড নিউ। এয়ারকন্ডিশন অফিসে যাদের বিদেশি ডেলিগেটরা পর্যন্ত এল.সি. কিংবা ফরেন এক্সচেঞ্জ কমিশনের পলিসি নিয়ে কোনও বাঙালির কৃপাধন্য হতে ভৃত্যের মতো করুণ মুখ করে বসে থাকে। পানির বদলে ইম্পোর্টেড জার্মান বিয়ার কিংবা প্রাচীন দামি স্কচ অথবা ইম্পোর্টেড বয়স্ক চিজ সঙ্গে রাশ-শ্যান কেভিয়ার! মহাখালী সিগনাল থেকে অদূরেই গুলশান, বনানী, বারিধারা। জি-হ্যাঁ, আমি সেই এলাকার সব ভাগ্যবান বাঙালি বিত্তশালী যুবাদের কথাই বলছি, যারা সংখ্যায় স্বল্প তবে সেক্রেটারিয়েট টু সংসদ এবং আরও অনেক কিছুই যাদের নাগালে।

প্রধানত গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকাগুলোই বেছে নেন এইসব বিত্তশালী এবং গজিয়ে-ওঠা আরো নব্য বিত্তশালী বা বিদেশ থেকে যেসব কোটিপতি দেশে আজকাল বাড়িঘর কিনতে চান বা ব্যবসা করেন, তারাও এই তিনটে এলাকাকেই টার্গেট করেন। এবং এই এলাকার বাসিন্দাদের চলাফেরা এবং তাদের আনুষঙ্গিক অন্য ব্যাপার স্যাপারগুলো দেখলে বুঝতে কিছুতেই কষ্ট হবে না-ওরা আপার ক্লাস। এবং নিরঙ্কুশ আপার ক্লাস, যেখানে পশ্চিমি হাওয়া, অর্থনৈতিক বিপ্লব-পাল্টে যাওয়া সমাজ ও তার রুচি, নাগরিক সভ্যতা এবং সংস্কার তার নব্য অঙ্গসজ্জার অলঙ্করণে কাজ করে চলেছে।

যাদের জীবনযাত্রা বাংলাদেশের মিডল ও লোয়ার ক্লাসের মানুষদের সম্পূর্ণ বিপরীত। কিন্তু একটি মূল আধ্যাত্মিক জায়গায় এসে সবার সঙ্গে তাদের অভিযান তীব্রভাবেই লক্ষণীয়। তাদের যৌনজীবন এবং যৌনজীবনে ক্রাইসিস। পার্থক্য তার-স্বাতন্ত্র, শোভা ও অলঙ্করণে, ক্লাস বুঝে। –কাম ও রতির অনিবার্য ক্ষুধা-কামার্ত শরীরের প্রহরে প্রহরে পীড়ন। পেষণের আকাক্ষা, অনুভূতি। দ্রুত ক্রিয়াশীল হৃদয় ও মন, লিঙ্গবিশেষে, জায়গামতো গজে-ওঠা দুটি সুউচ্চ পর্বত চূড়া-একটি যযানি ও একটি লিঙ্গ। এই নেটওয়ার্কটি, যার কেন্দ্রস্থল হলো দশ বিলিয়ন কোষ সমৃদ্ধ মস্তিষ্কের নার্ভাস সিস্টেম, সেখানে ক্লাস বলে কিছু নেই। না বিত্ত, না ক্ষমতা। এখানে সঙ্কেত ধ্বনি পড়লে অবস্থা সবার জন্যেই এক, ও একরকম জরুরি।

সুতরাং সেক্স ক্রাইসিস সব ক্লাসের মধ্যেই একরকম। এবং ক্রাইসিসের নিরাময়ও এক। শুধু রাস্তা ভিন্ন। একজন রিকশাচালক বা দিনমজুরের জন্যে যদি হয় সস্তায় ভাসমান পতিতা, তবে একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের চাকরিজীবী পুরুষটির জন্যে আজকাল শহরের মধ্যেই গজে-ওঠা যে-কোনও সুবিধেমতো একটি গেস্ট হাউজ। কিন্তু যারা উচ্চবিত্ত? সো-কলড-আপার ক্লাস?

শুধুই কি মিডলাইফ? আর্লি-ওল্ড, ক্রাইসিস কার হয় না? এমনকি চৌদ্দ বছরের কিশোর-কিশোরী–পঁয়তাল্লিশের বিবাহিত যুবক-যুবতী এবং পঁয়ষট্টির বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। হতে পারে বিধবা বা বিপত্নীক। এক কথায় যে-কোনও মানুষ, যে-কোনও বয়সের, যতক্ষণ তাদের মন-অনুভূতি ও শরীর, ক্রিয়া ও সংবেদনশীল থাকছে, যতক্ষণ তাদের শরীরের প্রয়োজনীয় সেক্সজনিত হরমোন রক্তে বইছে এবং যতক্ষণ তারা সুস্থ, কাম এবং রতির তাড়না ততক্ষণ জীবন্ত। আর এই তাড়নাগুলো পরিস্থিতি ও পরিবেশ বুঝে কখনো কখনো বিবাহিত জীবন ছাড়িয়ে চলে যায় বিবাহের বাইরে। এবং গিয়ে তারা প্রাণ পায় ক্রাইসিস বুঝে অবৈধ প্রণয়ে কিংবা পতিতালয়ে। তবে আভিজাত্য যেখানে, যারা আপার ক্লাস। তাদের বেলায় আর্লি মিড বা ওল্ড লাইফ ক্রাইসিসের নিরাময় আসে অন্যান্য ক্লাসের চেয়ে ভিন্ন ক্যাপসুলে এবং এই ক্যাপসুলগুলো বেশ দামি বলে ওরা রিকশাওয়ালা বা কেরানি বাবুদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু সব সত্ত্বেও মাঝে মধ্যে যে এই আপার ক্লাসের বাবুরা ভাসমানদেরকে একেবারেই যে ধরে বা ছোঁয় না সেকথাও ঠিক নয়। তবে দামি ক্যাপসুলই তাদের জন্য অধিক প্রযোজ্য।

বছর কুড়ি আগেও যার অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ। বছর দশেক আগে যে হাওয়া উত্তরে হাওয়ার বসন্ত মত্ততায় আভিজাত্যের জানালা দিয়ে শা-শা করে ঢোকে আর আজ, যে হাওয়া প্রায় সব স্তরের ধনী মানুষগুলোর জীবনযাত্রার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে, সেই হাওয়া, পশ্চিমের সেই উতলা হাওয়া দখিনে বয় আমাদের মুক্ত বাতাসে। ফ্রি সেক্স লাইফ। আজ তাই বাংলাদেশের রাজধানী শহর যার মডেল কন্যা, সেই ফ্রি সেক্স লাইফ–অল্প বা মাঝবয়সী সুন্দরী বঙ্গললনা দেশি-বিদেশি প্রশ্নবোধক সব ‘ভায়েগ্রা’ এবং সম্প্রতিকালে ব্যাংকক থেকে আমদানিকৃত ইয়াবা ট্যাবলেট আর অবাধ যৌন ক্ষুধাদগ্ধ সব-সব বয়সের বিত্তশালী পুরুষ এবং তাদের সন্তানেরা, এই জোয়ার লেগে গ্যাছে বাংলাদেশের সব-সবখানে। বিত্তশালীদের আবাসনগুলো আজ একেকটা-পর্নো কুটির, ঘরে ঘরে পর্নো কুটির। বিশেষ করে রাজধানীর গুলশান বনানী-বারিধারা যেখানে আইন তার কোমর সোজা করে দাঁড়াবার স্পর্ধা রাখে না, যেখানে আইন প্রয়োগকারীদেরকে কিনে গোলাম বানিয়ে ছাড়া হয়। ওরা দেখলেও, পকেট ভর্তি হয়ে, চোখ বুজে এড়িয়ে বেরিয়ে যায়।

শুধু পুরুষ কেন–যৌবনের এই ‘পশ্চিমিকরণের’ বসন্ত মত্ততায় কি নারীরা পিছিয়ে? মোটেও নয়। পশ্চিমিকরণের জোয়ারে অনেক পর্নো কুটিরে, নারী ও পুরুষের ক্রাইসিস সমানতালে চলছে। আর আজ –পশ্চিমি হাওয়ায় ভাসা বঙ্গদুহিতাদের অবস্থা এমন যে, কখনো কখনো দ্রুত যেন তারা খোদ পশ্চিমা নারীদেরকেও অতিক্রম করে যাচ্ছে তাদের পোশাক, চালচলন, ব্যভিচার, নেশা এবং মুক্ত অবাধ যৌনতার চালচিত্রে।

ঘরে ঘরে গড়ে উঠছে পর্নো কুটির চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে। ঘরে ঘরে আজ অশান্ত অবাধ যৌবন জোয়ারে টালমাটাল। আজ কি যুবা, কি যুবতী, ইন্টারনেট সেক্স পর্নো কুটির–ভায়াগ্রা বা ইয়াবা ট্যাবলেট যাদের হাতের নাগালে–অতীতের সংরক্ষণশীল রাখঢাক যৌনজীবনের আইডিয়ায় আজ যারা বিশ্বাসী নয়–অবাধ অর্থের আশীর্বাদে গাঁজা-চরস বিদেশি মদ যেখানে ফেনসিডিলকেও পুরোনো করে দিচ্ছে আজ সব দেখে সব শুনে মিডিয়ার পাতা ভর্তি এইসব চমক লাগানো পর্নো জীবনের পর্নোঘটিত সংবাদ কি একথাই বলছে না, ক্রাইসিস চলছে তার নব অলঙ্করণে পশ্চিমা স্টাইলে আজ বাংলাদেশের আপার ক্লাসের পর্নো কুটিরে কুটিরে।

.

খ.

মূলত তিনরকমের পর্নো-আবাস।

পৌরাণিক সময়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, পতিতা এবং তার পতিতালয় যা নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের অবাধ গমনাগমনের জায়গা। স্থানবিশেষে একেক জায়গার একেক নাম তার। রেডলাইট এরিয়া, বেশ্যাপাড়া, খানকিপাড়া।

আধুনিকতার বিপ্লবের যুগে প্রয়োজন ও পরিস্থিতিসাপেক্ষে গেস্ট হাউজ বা মধ্য বা উচ্চবিত্তদের।

পশ্চিমিকরণের হাওয়ায় নতুন সহস্রাব্দের নব্য মনমানসিকতায়–পর্নো কুটির যা উচ্চবিত্তদের প্রয়োজনে এখন ব্যাঙের ছাতার মতোই গজিয়ে উঠছে বিলাসবহুল সুরম্য প্রাসাদে।

.

গ.

একটি পর্নো কুটিরের গল্প নতুন কিছু নয়। আরবের ঘরে ঘরে এর উপস্থিতি এক অন্য কারণে। সেখানকার ইসলামিক আইন, যৌনজীবনের পক্ষে রুদ্ধশ্বাস। একচুল হেরফের হলেই, পরকীয়ার কোনরূপ গন্ধ হলেই, মুণ্ডপাত। যৌবন বা যৌনাঙ্গ, সে ভয় কি মানে? সে কি বসে থাকে? বিকল্প পথ খুঁজে নেয় না? নেয়। এবং নেয় বলেই আরবের ঘরে ঘরে এই গোপন পর্নো কুটিরে চলে চাকরির ছদ্মবেশী, রক্ষিতার সঙ্গে মাস্টার। আর রক্ষিতের সঙ্গে ঘরের নারীদের।

তবে আমাদের দেশে পর্নো কুটিরের আবির্ভাবের সঙ্গে জড়িত অন্য কিছু। আধুনিকতা-অর্থ-ক্লাস-প্রয়োজন।

একটি পর্নো কুটিরের প্রয়োজন হয়ে পড়া আপার ক্লাসের মানুষদের পক্ষে আজকাল খুব স্বাভাবিক। এবং গুলশান, বনানী ও বারিধারার মতো এলাকায় হোক সে বাড়ির মালিক বা ভাড়াটিয়া-যারাই এখানে বাস করে তাদের সবাই মালদার বিত্তশালী। সুতরাং যৌন সম্ভোগের জন্যে এদের কোনও বাজেটের প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজনে এরা চলে যায় সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, হংকং। কিংবা এমনকি বলিউড, টালিউড ও ঢালিউডের চিত্র তারকাঁদেরকেও ভাড়া করে নিয়ে আসে। কিংবা নিয়ে আসে সমাজের নেইম ব্র্যান্ড ম্যাডাম, বা ক্রাইসিসে আক্রান্ত যে-কোনও বন্ধু বা পরিচিতের মুক্তমনা স্ত্রী। আনে ঘর থেকে। আনে বাইরে থেকে। প্রয়োজনে এমনকি রাস্তা থেকেও। ওদের অগাধ অর্থবিত্ত। সুতরাং ওদের কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই। পর্নো কুটিরের নিরাপত্তা, নিরাপত্তা ক্ষমতা ও অর্থের ক্ষমতায় ক্লাস সিস্টেমের প্রভাব। প্রতারণা, অপরাধ, অত্যাচার বিকার এবং ক্রাইসিস সব, সবকিছুতেই উতরে যায় এসব। আভিজাত্যের পর্নো কুটিরে তারাও আসে অর্থের প্রয়োজন যাদের, অতৃপ্ত দৈহিক সম্পর্ক যাদের, জীবনে ঝড় চলছে যাদের। যারা বিশ্বাস করে ফ্রি সেক্স, মুক্ত জীবন, পাটি, মদ, এক-একধরনের উদ্ধৃঙ্খল আপার ক্লাস কিন্তু অত্যন্ত আনন্দদায়ক জীবন, হোক সে দ্বিধাগ্রস্ত বা রোগগ্রস্ত। হোক সে বিপর্যয়ের শ্বাপদসঙ্কুল রাস্তা। সেক্স, ড্রাগ, মদ, পার্টি, মিউজিক এও একধরনের কাক্ষিত জীবন হতে পারে, যা সাময়িক হলেও সুন্দর। ভুলিয়ে দেয় জীবনের সকল গ্লানি মন খারাপ। স্বাধীনতা ও অর্থ হলে এগুলো এত সহজলভ্য যে তখন এই বিপর্যয়ের ভাবনা ভেবে কেউ সময় নষ্ট করে না। করলে কি আর হিপ্পিজীবন এত জনপ্রিয় হয়?

পর্নো কুটিরের বিকল্পই-বা কী? একজন ফরেন ডিপ্লোম্যাট বা সেক্রেটারিয়েটে বসেন যিনি বা মধুমতী প্লাজার মালিক তিনি কি ভাসমানে যাবেন? এর উত্তর না। যেতে পারেন কোনও পতিতালয়ে? এমনকি গেস্ট হাউজ? পর্নো কুটিরের নিরাপদ পরিবেশে না হলে এতগুলো ফরেন ডিপ্লোম্যাটদেরই-বা গতি কী? আর হাইফাই মুখ চেনা সাহেব? তার স্ত্রী? কিংবা সাহেবের ছেলেমেয়ে? বা তাদের সম্মানীয় অতিথি! লিস্টে কে নেই? পলিটিশিয়ান-হাইফাই সরকারি কর্মচারী, বেসরকারি এবং নেইম ব্র্যান্ড ঝানু ব্যবসায়ীরা কিংবা বিদেশি মেহমান!

অপরাধের স্বর্গরাজ্যে কত অপরাধের নেটওয়ার্কে জড়িত কিছু মানুষ। তাদের খানাপিনা আনন্দ-ফুর্তি, লেনদেন, ব্লু-ফিল্ম, বিকৃত কাম, নারী, মদ, গাঁজা, মারিজুয়ানা, ট্ৰিব, এর উত্তর পর্নো কুটির।

সাময়িক আনন্দের নেশাসক্ত কিছু দিশেহারা আধুনিক তরুণী বুঝে না বুঝে আজকাল নিজেরা বিপদ ডেকে আনছে। হঠাৎ তারা ব্লু-ফিল্মের নায়িকা হয়ে যায়। সেই ছবি প্রচার হয়ে যায়। বিভ্রান্ত তরুণীগুলো জানেই না সেই পয়সাআলা তরুণের বিছানায় সঙ্গমরত অবস্থায় কখন তার ছবি তোলা হলো। কে করলো? কখন? ততক্ষণে, ট্যু-লেইট। ততক্ষণে সেই ছবি প্রচার হয়ে গ্যাছে। ভিকটিম নিখোঁজ হয়ে যায়।

রিনা, পপি, দিলরুবার মৃত্যু সংবাদ ছাপা হয়। হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। ব্লু-ফিল্মের প্রডিউসর কিছু ছদ্মবেশী তরুণ যাদের অধিকাংশই এই পর্নো কুটিরের সঙ্গে জড়িত, সাময়িক বিপদ কাটিয়ে উঠতে জানে। এই ছবির বাজার ভালো। এই ব্যবসাও এখন তুঙ্গে। কম খরচে বেশি মুনাফা।

এসব বড়লোকের সন্তানদের বন্ধুর অভাব হয় না। বিশেষ করে যারা ঠিক ওদের মতো বড়লোক নয়। দশজন না হলে পার্টি জমে না। আপার মধ্য বা লোয়ার অনুগত বন্ধুরা ডাকলেই চলে আসে। আর শিক্ষিত সুন্দরী মেয়েরা যারা অফিস নয়, বেছে নিয়েছে বড়লোকদের পার্টিতে ললিতাবৃত্তি, সহজ ও দ্রুত অর্থ পেয়ে পর্নো কুটিরগুলো, সাময়িক আনন্দের জন্যে ওদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। উইকেন্ড বা সান্ধ্যকালীন পার্টি বা উৎসবের সময়ে এরকম মদের আড্ডায় এইসব শিক্ষিত বড় ঘরের মেয়ে কলগার্ল পাওয়া আজ আর অভাব হয় না। এই মেয়েগুলো ভিড়ের মধ্যে এমন মুখ লুকিয়ে থাকে যে দেখে বোঝার উপায় নেই। এদের কেউ মা, কেউ অবিবাহিতা বঙ্গললনা। অনেকেই ভার্সিটি বা কলেজের ছাত্রী। স্বাভাবিক ও সাবলীল সংসার থেকেই এরা আসে। কিন্তু আধুনিকায়ন ও বিশ্বায়নের সাথে সাথে সমাজজীবনের চিত্রপটে দ্রুত যে বদল ঘটে যাচ্ছে তাতে করে, গুলশান বনানী ও বারিধারায় পর্নো কুটিরগুলোতে ক্রমবর্ধমান চাহিদা অনবরত সৃষ্টি করে চলেছে নতুন নতুন হাইফাই গণিকা, রিতু, পাপিয়া, নীলা, সন্ধ্যা, মৃত্তিকা…। এবং ঢালিউড টালিউড ও বলিউডের উঠতি ও পড়তি নায়িকারা তো এই লিস্টের হট-প্রোডাক্ট।

এবং একদিন আমরা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে জানতে পারি যে, আমাদের প্রতিবেশীর মেয়ে রিয়া যে ভার্সিটিতে পড়তো সেও এরকম হাই-সোসাইটির গণিকা। সঙ্গমরত অবস্থায় তার ব্লু-ফিল্ম নিয়ে বাজারে এখন তোলপাড় চলছে। মিডিয়ায় খবর ছাপা হচ্ছে। দু’জন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেকে এ্যারেস্ট করা হলেও গডফাদার নিখোঁজ। সর্বশেষ খবর: মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে।

আসলে সবকিছুর পেছনে রয়েছে অবাধ কামের জোয়ার। আর ঐ যে আরক্ষরোহিনী তারও তো অর্থেরই বশ। রাত একটায় দেখা গেল মধ্যপ্রাচ্যের এক দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

স্যার, জায়গাটা ভালো নয়। বসের গললগ্ন বাঙালি ললনাটির ঝাঁঝাল জবাব। আপনারা আছেন কি করতে। কোথাও যে একটু প্রাইভেসি থাকবে তারও জো নেই। বেশি বাড়াবাড়ি করলে বাধ্য হবো যথা জায়গায় ফোন করতে। ঠ্যালা কিন্তু আপনাকেই সামলাতে হবে!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *