২. পরের দিন সকালেই জরুরী তার

০২.

পরের দিন সকালেই জরুরী তার পেয়ে গীতার দাদা শান্তনু প্লেনে কলকতায় ফিরে এল। গীতার আকস্মিক মৃত্যুসংবাদটা যেন তাকে কেবল মর্মাহতই নয়, যেন বিস্ময়ে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। আইলোশনের শিশিটা গীতারই চোখে দেবার জন্য ডাক্তার প্রেসক্রাইব করেছিল।

সবাই বলছে, গীতা সুইসাইড করেছে ঐ বিষাক্ত লোশন খেয়ে। কিন্তু কেন? কোন্ দুঃখে সে সুইসাইড করতে যাবে? বোনকে তো সে কোনদিন এতটুকু অনাদর করেনি, তার কোন কাজে কোনদিন বাধা দেয়নি, কখনও ভুলেও এতটুকু তিরস্কার করেনি তবে?

তাছাড়া গীতার মত বুদ্ধিমতী, বিবেচক, প্রাণচঞ্চল মেয়ে আত্মহত্যা করেছে কথাটা যেন ভাবাও যায় না।

নিজের ঘরের মধ্যে চুপচাপ বসেছিল শান্তনু। দত্তরায় এলেন।

শান্তুনবাবু, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আজ পাওয়া গিয়েছে, কিন্তু রিপোর্টটা সম্পূর্ণ অন্য রকম বলছে।

অন্য রকম!

হ্যাঁ, cause of death—বিষ নয়।

তবে? উৎকণ্ঠিত শান্তনু দত্তরায়ের মুখের দিকে তাকায়।

গীতা দেবী সুইসাইড করেননি। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

হত্যা! কি বলছেন আপনি?

তাই। গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

হত্যা করা হয়েছে তাকে? কে–কে তাকে হত্যা করল?

আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব। মনে হচ্ছে বাড়ির কেউ। কারণ সে-সময় তো বাইরের কেউ ছিল না। আচ্ছা, আপনাদের ঐ চাকর শম্ভুচরণ–

না না, এ আপনি কি বলছেন! শম্ভু একপ্রকার গীতাকে কোলে-পিঠে করে মানুষ করেছে।

তাহলেও পুরনো চাকরবাকরের অমন দুষ্কৃতির নজিরেরও অভাব নেই।

কিন্তু কেন—কেন সে গীতাকে হত্যা করবে?

সে কথা এই মুহূর্তে আমি বলতে পারব না আরও ইনভেসটিগেশন না করে। শম্ভুকে একবার আমি থানায় নিয়ে যেতে চাই। তাকে এরবার ডাকুন।

কিন্তু আশ্চর্য!

শম্ভুকে ডেকে সাড়া পাওয়া গেল না এবং খোঁজ করে জানা গেল, গত রাত থেকেই নাকি শম্ভু নেই।

কোথায় গেল শম্ভু?

মানদা বললে, তা তো জানি না।

আমাকে এ কথা এতক্ষণ জানাওনি কেন? শান্তনু প্রশ্ন করে।

ভেবেছিলাম আপনিই হয়ত তাকে কোন কাজে কোথাও পাঠিয়েছেন দাদাবাবু। মানদা বলে।