৩৯. বচন-প্রবচন

বচন-প্রবচন

১. সত্যের নিত্য রূপ সর্বত্র এক। সূর্য সর্বত্রই সূর্য।

২. প্রতিভা মানুষকে আকর্ষণ করার এক অন্তহীন রহস্য।

 ৩. পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সর্বজনবোধ্য ভাষার নাম হাসি।

৪. হাসি মানুষের শ্রেষ্ঠ অস্ত্র ও অলংকার হতে পারে।

৫. সময় সবসময় কথা বলে না। কখনো কখনো ভয়ঙ্কর নীরবতা পালন করে থাকে।

৬. সময়ের বাণী সবাই শুনতে পায় না। তাই কেউ এগিয়ে যায় কেউ পিছিয়ে পড়ে।

৭. চরম এবং পরম কোনো অবস্থাই দীর্ঘস্থায়ী হয় না- শেষ পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থাই দীর্ঘায়ু লাভ করে।

৮. মানুষ আজ তার নিজেরই তৈরি প্রতাঁকের কাছে জিম্মি হয়ে আছে।

৯. মানুষ শুধু মানুষ চিনতে ভুল করে না। কখনো কখনো নিজের সম্পর্কেও ভুল ধারণা পোষণ করে।

১০. শক্তি ও সৌন্দর্যের প্রতি মানুষের একটা সহজাত আকর্ষণ রয়েছে। সে-আকর্ষণ অনেককে বিপথগামীও করে।

১১. মানুষ যখন স্বার্থে অন্ধ হয়ে যায় তখনই ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় এবং বিবেকের চেয়ে বুদ্ধির, সত্যের চেয়ে মিথ্যার মূল্য দেয় বেশি।

১২. দু-ধরনের মানুষকে নিয়ে মানুষের মধ্যে দলগত বিভেদ ও বিতর্ক চলতে পারে। এক, সুচতুর স্বার্থপর দ্বৈত চরিত্রের লোক; দুই, ক্ষণজন্মা প্রতিভাধর ব্যক্তি।

১৩. সংকীর্ণচিত্ত মানুষ উদারতার আনন্দ কাকে বলে জানে না। স্বার্থপরতা মানুষের দৃষ্টিকে উদার আকাশ থেকে ফিরিয়ে আনে, গৃহকোণে বন্দিত্ব স্বাধীনতাকে দূরে সরিয়ে দেয়। একমাত্র বীরেরাই স্বাধীনতার মহিমা বোঝে, স্বাধীনতার ব্যাখ্যা দিতে পারে এবং স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারে।

১৪. শত্রুকে শত্রুতা করার সুযোগ তো সৃষ্টি করে দেয় মানুষ নিজেই।

১৫. মানুষের ভুল সিদ্ধান্ত গোটা সভ্যতাকেই কলঙ্কিত করতে পারে, পারে নিন্দার ঝড় বইয়ে দিতে, মানবতার চূড়ান্ত সর্বনাশ করতে।

১৬. কর্মের ক্ষেত্রে দ্বিধাই মানুষকে ক্রমাগত পিছিয়ে দেয়। দ্বিধা শুধু দ্বিখণ্ডিত করে, অস্তিত্বের বিনাশও ঘটায়।

১৭. সৃষ্টিশীল মানুষের স্বপ্ন থাকে, আর বৈষয়িক মানুষের নির্দিষ্ট গন্তব্য।

১৮. মানবজন্মের আদিতে মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল শয়তান। কিন্তু সভ্যতার চূড়ান্ত বিকাশপর্বে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও শত্রুতা করছে মানুষ।

১৯. মানুষের জন্য উত্তরাধিকার কখনো আশীর্বাদ, কখনো-বা অভিশাপ হিসেবে আসে। উত্তরাধিকারকে পুরোপুরি অতিক্রম করতে পারে খুব কম লোকেই।

২০. সব শয়তানই ভালো মানুষের ভান করে।

২১. স্বার্থন্বেষী মানুষমাত্রই সুযোগসন্ধানী। আর সুযোগসন্ধানীদের মধ্যেই জন্ম নেয় পৃথিবীর ছোট-বড় সব ষড়যন্ত্রকারী।

২২. আত্মমর্যাদাশীল কোনো মানুষই স্বার্থোদ্ধারের জন্যে ছোট হতে পারে না, স্বার্থান্ধ মানুষই পারে আত্মমর্যাদাকে যে-কোনো মূল্যে বিকিয়ে দিতে।

২৩. জীবনাচরণ ও উচ্চারণের মধ্যে বিরোধ পরিলক্ষিত হয় না এমন মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে খুবই কম।

২৪. মানুষ তার সময় ও নিজের শ্রেষ্ঠ পরিচয় রাখতে পারে শিল্পকর্ম ও মুদ্রিত বাক্যাবলিতে।

২৫. আধিপত্যকামিতাই মানবসমাজের সব অসন্তোষ ও বিরোধের উৎস।

২৬. সমাজ এখন প্রতিভার চেয়ে প্রশংসাপত্রের মূল্য দেয় বেশি। তাই সাধনার চেয়ে সুপারিশলাভের দিকেই সকলের ঝোঁক।

২৭. সচ্চরিত্র ও চরিত্রহীন হওয়ার সুবিধে-অসুবিধে এই যে, সৎচরিত্র ব্যক্তি যতটা চরিত্রবান তার চেয়েও বেশি তিনি খ্যাতি পেয়ে থাকেন, আর চরিত্রহীন লোক যতটা চরিত্রহীন তার চেয়ে বেশি দুশ্চরিত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

২৮. টাকা এবং যৌনতা এমন এক ক্ষমতা যা সব মানুষকেই স্পর্শ করে।

২৯. সুখের সব চেয়ে বড় সম্পদ শরীর। একমাত্র সুস্থ শরীরই পারে টাকা এবং যৌনতাকে ভোগ করতে।

৩০. বিত্তহীন ও বিত্তবানদের জীবনে দুটি শব্দের প্রভাব বরাবরই বাড়তে থাকে–শব্দ দুটি হচ্ছে অভাব এবং আতঙ্ক।

৩১. জনতা ও ক্ষমতার কাছে এলেই মানুষের আসল রূপ বেরিয়ে যায়, তখনই বোঝা যায় সে কত সৎ, শক্তিধর ও নিরপেক্ষ।

৩২. জনগণ-নন্দিত একজন সাহসী নেতার কণ্ঠস্বর সহস্র বুলেটের চেয়ে শক্তিশালী।

৩৩. রাজনৈতিক নেতৃত্বের উত্থান-পতন বরবরই নাটকীয়। সময়ের নায়ক কে হবে, কে প্রস্থান করবে ইতিহাসের মঞ্চ থেকে, কেউ বলতে পারে না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *