২১. ন্যায়-অন্যায় ও আইন

ন্যায়-অন্যায় ও আইন

১. সন্তানকে প্রতিদিন একবার করে পেটাও; কেন, তা তুমি না জানলেও তোমার সন্তান ঠিকই জানে।

চীনা প্রবাদ

২. যা করা উচিত তা করা ন্যায়, আর করতে অপরাগ হওয়া বা একদিকে সরিয়ে রাখা অন্যায়।

–ডেমোক্রিটাস

৩. ন্যায়বিচার হচ্ছে প্রত্যেককে তার প্রাপ্য প্রদান করার দৃঢ় ও বিরামহীন আকাঙ্ক্ষা।

জাসটিনিয়ান

৪. যে যুক্তিতর্কের বা বিচারবুদ্ধির মধ্যে যাবে না, তাকে নিজ মত ও বিশ্বাসের প্রতি অন্ধ অনুরাগী বলা যায়; যার বিচারবুদ্ধি নেই সে হল বোকা এবং যে বিচারবুদ্ধি বা যুক্তিতর্কের মধ্যে যেতে সাহস করে না সে হল ক্রীতদাস।

উইলিয়াম ডুমেন্ট

৫. চারটি জিনিস বিচারকের নিজস্ব থাকতে হবে : বিনয়সহকারে শোনা, জ্ঞানীর মতো উত্তর দেয়া, সংযত হয়ে বিবেচনা করা, কোনোদিকে পক্ষপাতিত্ব না করে বিচার করা।

সক্রেটিস

৬. কাউকে লাথি মারলে সেও ফিরতি লাথি মারবে তোমাকে। কাজেই অন্যায়ভাবে কাউকে আঘাত কোরো না।

–বেটেন্টি ব্রেখট

৭. বিচারে দেরি করার অর্থ অচিবার করা।

লেন্ডর

৮. কথা আইনসম্মত হলেও কখনো কখনো তা কারুর জন্য নির্মম হয়ে দাঁড়ায়।

সুইনবার্ন

৯. বিনষ্ট কোরো না এবং অতিরিক্ত চেয়ো না–এটাই প্রকৃতির আইন।

জন প্লান্ট

১০. খোলাখুলিভাবে অপরাধ স্বীকারের মধ্যে অপরাধ না করার সমতুল্য নিষ্পপতা রয়েছে।

সাইরাস

১১. ন্যায়বিচারের রূপ একটি আর অন্যায় বিচারের শতরূপ। এই কারণেই ন্যায়বিচার করা অপেক্ষা অন্যায় বিচার করা সহজ।

প্লেটো

১২. আমাকে দেখে নয়, জেনে আমার বিচার করো।

বিয়ন

১৩. যখন আইন থাকে না, তখনও তো বিবেক থাকে।

সাইরাস

১৪. দলিলে সাক্ষ্যের সঙ্গে উকিলের ব্যাখ্যা জড়িত হয়ে যে জিনিসটা দাঁড়ায় সেটাকে প্রমাণ বলে গণ্য করা চলে না। কেননা অন্য পক্ষের উকিলও সেই একই দলিলকে বিপরীত কথা বলিয়ে থাকেন; তার কারণ, বাছাই করা বাক্যের বিশেষ অর্থ নির্ভর করে বিশেষরূপে বাছাই করার উপরেই।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৫. শীতল নিরপেক্ষতাই একজন পক্ষপাতিত্ববিহীন বিচারকের ধর্ম।

–এডমন্ড বার্ক

১৬. বিবেকহীন মানুষকে অস্বীকার করে যে কাজ করে, খুব শীগ্রই সে বিবেকের কাছে নতি স্বীকার করে।

–এড্রিউ কলিন্স

১৭. মিথ্যে কথা শেষ পর্যন্ত কারো ক্ষতি করতে পারেন।

সুবোধ ঘোষ

১৮. মিথ্যাবাদীর শাস্তি এই নয় যে, তাকে কেউ বিশ্বাস করে না, সে নিজেই কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না।

জর্জ বার্নার্ড শ

১৯. নরহত্যা করিও না, ব্যভিচার করিও না, চুরি করিও না, মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না, প্রবঞ্চনা করিও না, তোমার পিতামাতাকে সমাদর করিও।

বাইবেল

২০. অন্যায় নরক আর সততা স্বর্গ তৈরি করে।

মেরি বেকার

২১. অন্যায় করে লজ্জিত না হওয়া আর এক অন্যায়।

সক্রেটিস

২২. যে-ব্যক্তি অন্যায় করে, সে না পায় সুখ, না পায় শান্তি।

জুভেনাল

২৩. আমার অধিকার স্বীকার না করলে তোমার অধিকারও স্বীকার করবো না– একথার মধ্যে কোনো অন্যায় গোয়ার্তুমি নেই।।

ড. আহমদ শরীফ

২৪. অধিকারসচেতন অথচ দায়িত্ব বোঝে না, এমন মানুষ মূঢ়।

প্রতিভা বসু

২৫. সমাজসেবার নামে মানুষকে ঠকিয়ো না। এর চেয়ে বড় অপরাথ আর নেই।

অলস্টন

২৬. সঙ্গীসাথিরা খারাপ হলে অপরাধপ্রবণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে।

–আর. ই. শেরউড

২৭. ভালো আইন মান্য না হলে তা ভালো সরকারকেও অক্ষম করে তোলে।

অ্যারিস্টটল

২৮. কৌশলের মধ্যে দিয়ে মিথ্যা যেন না জয়ী হয়।

ইস্কিলাস

২৯. অকর্মা আইন দরকারি আইনকে দুর্বল করে ফ্যালে।

মঁতেঙ্কু

৩০. ভালো আইন এগোয় আরও ভালো গড়ার দিকে। খারাপ আইন টেনে আনে আরও খারাপটাকে।

রুশো

৩১. যেখানে আইনের শেষ, সেখানে স্বৈরতন্ত্রের শুরু।

জন লক

৩২. যারা আইন তৈরি করেছে আইন মেনে চলায় তাদের চেয়ে বেশি পবিত্র দায় আর কারও নেই।

–অজ্ঞাত

৩৩. মামলাকারী সেই ব্যক্তি যে তার হাড়গুলো বাঁচানোর আশায় গায়ের চামড়া দান করে।

অ্যামব্রোস বিয়ার্স

৩৪. অত্যাচারীর বিরুদ্ধে অত্যাচারিতের অন্তরে যে-বিদ্বেষাগ্নির জন্ম হয়, তা অত্যাচারীকে ভস্ম করেই ক্ষান্ত হয় না, সে-আগুনের শিখায় অনেককিছুই দগ্ধীভূত হয়।

–হযরত আলি (রা.)

৩৫. কিছু-কিছু আইন লিপিবদ্ধ হয়নি, কিন্তু লিখিত আইনের চেয়ে অনেক বেশি দৃঢ়।

–সেনেকা

৩৬. আইন মাকড়সার জালের মতো, খুদে কেউ পড়লে যায় আটকে, বড়রা ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে।

সলোন

৩৭. একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে ভোগানোর চেয়ে দশজন দোষী ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া ভালো।

ব্ল্যাক স্টোন

৩৮. চাবুক তত বেশি আঘাত করে না, যতটা করে অনুশোচনা।

–এডগার ওয়াটসন হাউ

৩৯. ছেলেপিলেদের আরও ভীরু আর ও ন্যুজ করে তোলা ছাড়া চাবুকের অন্য কোনো প্রতিক্রিয়া আমি দেখিনি।

মতেইন

৪০. সাধারণভাবে বলতে গেলে, শাস্তি করে তোলে কঠিন আর অসাড়, তৈরি করে মনোযোগ, ধারালো করে একাকীত্বের বোধ, বাড়িয়ে দেয় প্রতিরোধের সামর্থ্য।

নিৎসে

৪১. শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৪২. যারা আইনের শাসনের কথা বলে বেশি তারাই আইন মান্য করে না। তারাই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রধান প্রতিবন্ধক।

ড. আহমদ শরীফ

৪৩. যে আইনের মধ্যে বাস করে, তার জন্য সব জায়গাই নিরাপদ।

হেনরি জর্জ

৪৪. যে-আইন জনগণকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দান করবে, সেটাই সর্বোচ্চ আইন।

–এরন মুর

৪৫. আইনের প্রতি যে চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন করছে, জানবে তার দুর্ভোগ অত্যান্ন।

–বেন জনসন

৪৬. বিনষ্ট কোরো না, অতিরিক্ত চেয়ো না–এটাই প্রকৃতির আইন।

জন প্লন্ট

৪৭. উগ্রতা আইনকে অত্যাচারের পর্যায়ে নিয়ে যায়।

টমাস ফুলার

৪৮. যে-মানুষ অন্যায় করে না, সে আইনের প্রয়োজন বোঝে না।

রবার্ট বার্টন

৪৯. যে-আইন প্রকৃতির বিরুদ্ধে, সে-আইন জাতির বিরুদ্ধে।

–মিলটন

৫০. আইনের আশ্রয় নেওয়ার অর্থ হল একটি বিড়ালের জন্য একটি গরু হারানো।

চীনা প্রবাদ

৫১. মানুষের ইচ্ছাই সবচেয়ে বড় আইন।

–উইলিয়াম এস গ্রান্ট

৫২. তুমি আমাকে আইনসম্মতভাবে মারো তাতে আমার কিছু বলার থাকবে না।

–জন সেলডেন

৫৩. আইন মান্য করতে না জানলে আইন ভাঙাটা সমীচীন নয়।

জর্জ ইলিয়ট

৫৪. আত্মরক্ষা করা প্রকৃতির প্রথম আইন।

বাটলার

৫৫. দেশে যত বেশি অনাচার দেখা দেয় তত বেশি আইনও দেখা দেয়।

–টেসিটাস

৫৬. স্বভাবতই আইন শক্তিমানের সহায়।

ডেমোক্রিটাস

৫৭. সভ্যসমাজে ব্যক্তিস্বাধীনতার জন্ম হয় আইন থেকে।

–জেমস স্মিথ

৫৮. আইন জানি না–আইন মানতে না পারার পক্ষে এটা কোনো যুক্তি নয়। ধরে নিতে হবে আইন সবাই জানে। আইন জানতাম না–এ-কথা আদালতে গ্রাহ্য হয় না।

–গাজী শামছুর রহমান

৫৯. আইন হল ইঁদুর মারার কলের মতো, এর শরণাপন্ন হওয়া খুব সহজ, কিন্তু এর থেকে বের হওয়া তত সহজ নয়।

বালফোর

৬০. পারস্পরিক ন্যায়বিচারই আইনের নিশ্চয়তা।

ডেমোক্রিটাস

৬১. জনগণের নিরাপত্তাই হচ্ছে সর্বোচ্চ আইন।

সিসেরো

৬২. অন্যায় আদেশ পালন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়। সৎ লোক কখনো অন্যায় আদেশ পালন করে না।

–গোল্ডস্মিথ

৬৩. যার আত্মবিশ্লেষণী শক্তি আছে, সে কখনো অন্যায় করতে পারে না। তার সাফল্য সম্মান অবশ্যম্ভাবী।

পানিন

৬৪. দুষ্কর্মের প্রকৃত অনুতাপকারী এবং যে কখনো দুষ্কর্ম করে নাই ইহাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই।

–আল-হাদিস

৬৫. নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হলেই দোষমুক্ত হওয়া যায়।

কল্টন

৬৬. রবি শশী তারা প্রভাত সন্ধ্যা
তোমার আদেশ কহে–
এই দিবারাতি আকাশ বাতাস
নহে একা কারো নহে।
এই ধরণীর যা সম্বল–
বাসে-ভরা ফুল, রসে-ভরা ফল–
সুস্নিগ্ধ মাটি, সুধাসম জল
পাখীর কণ্ঠ গান–
সকলের এতে সম অধিকার,
এই তার ফরমান।

কাজী নজরুল ইসলাম

৬৭. অন্যায় যে করে
আর অন্যায় যে সহে
তব ঘৃণা তারে যেন
তৃণ সম দহে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৬৮. বিচারের ভয়ে যে পালিয়ে বেড়ায় সে তার নিজের অপরাধ স্বীকার করে।

সাইরাস

৬৯. তারাই বড় অপরাধী যারা মারণাস্ত্র বিক্রি করে বা কিনে ব্যবহার করে।

রবার্ট ই. শেরউড

৭০. আমার অপরাধের শক্তি যত, ক্ষমার শক্তি তোমার আরো অনেক গুণ বড়ো।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৭১. অবিচার করার চেয়ে অবিচার সহ্য করা অধিক অসম্মানজনক।

প্লেটো

৭২. অবিচারের শিকার হওয়া ভালো; কিন্তু অবিচার করা ভালো নয়।

লংফেলো

৭৩. রেখে দাও তব আপনার রচা
আইন-কানুন তাকে,
ভঙ্গুর যে তাহা, যদি সে আইনের
ধর্ম নাহিকো থাকে।

আবু বকর

৭৪. কোনো পাপী যদি সুখী হয়, তবে বুঝতে হবে তার মধ্যে অপরাধপ্রবণতা নেই।

–বেন জনসন

৭৫. লোকদের ইচ্ছাই সবচেয়ে বড় আইন।

ইউলিসাস এস. গ্রান্ট

৭৬. কোনো শুভ যখন মহত্তর কোনো শুভের উপভোগে বাধা দেয়, সত্যি করে বলতে গেলে, সেটি অশুভ।

–স্পিনোজা

৭৭. যদি দেখ সকল অশুভই বেরিয়ে আসছে শুভ থেকে, তখন আর কী করা!

লুইগি পিরান্দেল্লো

৭৮. শুভ আর অশুভ যাক জড়িয়ে। চরিত্রের শৈল্পিক কোনো ঐক্য খুঁজো না।

লর্ড এক্কন

৭৯. শুভ আর অশুভ কিংবা শুভতর আর অশুভতরের মানে সহজভাবে বোঝায় সাহায্য বা আঘাত করা।

ইমারসন

৮০. আইন ভাঙার জন্যই আইন তৈরি হয়।

জন উইলসন

৮১. আইন বড়ই নির্মম। সেখানে মা নেই, সন্তান নেই, প্রেম নেই, মমতা নেই, প্রীতি নেই–আইন আইনই।

নীহাররঞ্জন গুপ্ত

৮২. আইন পাপকে তুলে ধরতে পারে; কিন্তু পাপ রোধ করতে পারে না।

–জেরিমি টেলর

৮৩. অপ্রয়োজনীয় আইন ভালো নয়; এগুলো কখনো কখনো টাকা রোজগারের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

রিচার্ড বেন্টলি

৮৪. আইনের মাধ্যমে অত্যাচার করার চেয়ে বড় অত্যাচার আর নেই।

বেকন

৮৫. আদালতে যত বেশি লোকের সমাগম হয়, তত বেশি অদ্ভুত দৃশ্যের অবতারণা হয়।

জর্জ হার্বার্ট

৮৬. উকিল ও কোকিল হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণীর জীব–যদিও উভয়েই বাচাল। এর এককে দিয়ে অপরের কাজ করানো যায় না।

–প্রমথ চৌধুরী

৮৭. পারস্পরিক ন্যায়বিচারই আইনের নিশ্চয়তা।

–ডেমোক্রিটাস

৮৮. যে-দেশে মন্দ লোক নেই, সে-দেশে ভালো উকিলও নেই।

চার্লস ডিকেন্স

৮৯. আদালত হল অভিজ্ঞ এবং বিশিষ্ট ভিক্ষুকদের সমাবেশালয়।

স্ট্যালির্যান্ড

৯০. সামাজিক নিরাপত্তার অভাব মানুষকে চোর বানায়।

–জন ফ্লেবল

৯১. চুরি করলে হাত কেটে দেওয়ার আগে চোরের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করতে

আবুল ফজল

৯২. যেখানে অধিকাংশ চোর, সেখানে সততা নিশ্চয়ই দণ্ডনীয় বিবেচিত হয়।

–এমিল ক্ৰটকি

৯৩. চোরকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয় না। যে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে তাকেই ফাঁসিতে যেতে হয়।

–চেকোস্লাভ প্রবাদ

৯৪. অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেহাদ করাই প্রকৃত ন্যায়ধর্ম।

–ড. আহমদ শরীফ

৯৫. সূর্য এবং চন্দ্র যেমন কখনো কুপির আলোকে ভয় পায় না, তেমনি সত্য কখনো মিথ্যাকে ভয় পায় না।

–আবুল ফজল

৯৬. উকিলের শরণাপন্ন হলেই মামালায় জিতে যাবে–নির্বোধেরা এমনটা আশা করে।

–টেরেন্স

৯৭. নৈতিকতা মানুষের জন্য সৃষ্ট, মানুষ নৈতিকতার জন্য সৃষ্ট নয়।

জ্যাঙ্ক উইল

৯৮. পৃথিবীতে ধর্ম অনেকগুলো, কিন্তু নৈতিকতা একটিই।

–রাসকিন

৯৯. যে ন্যায়ের পক্ষে, সে সত্যেরও পক্ষে।

–রাহুল সংকৃত্যায়ন

১০০. যেটাকে ন্যায় মনে করবে, সেটাতেই স্থির থাকবে। ন্যায়ের পক্ষে যে, তার জয় হবেই।

–গুন্টার গ্রাস

১০১. যেখানে ন্যায়বিচার রাজত্ব করে, সেখানে আজ্ঞা পালন করাই স্বাধীনতা।

–জেমস মন্টোগোমারি

১০২. ন্যায়বিচারের মতো প্রকৃত মহৎ ও ঈশ্বরতুল্য সদৰ্ণ আর নেই।

এডিসন

১০৩. পক্ষপাতহীন বিচারকই ন্যায়বিচার করতে পারে।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

১০৪. অন্য মানুষের পাপ দর্শনে ও বর্ণনে বিরত থাকো, উহা তোমাদের মধ্যেও আছে।

–আল-হাদিস

১০৫. সৎস্বভাব ও সুন্দর আচরণই পুণ্য আর যে বিষয় সম্পর্কে তোমার মনে দ্বিধা জাগে এবং লোকসমাজে যা প্রকাশ হওয়া তুমি অপছন্দ কর, তা-ই পাপ।

–আল-হাদিস

১০৬. পাপকে ঠেকাবার জন্য কিছু না করাই তো পাপ।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১০৭. সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য প্রতিপন্ন করার মানসেই মানুষ উকিলদের কাছে যায়। তাতে উকিলদের দুটো পয়সা হয়।

জরাসন্ধ

১০৮. সবাইকে বিশ্বাস করা একটি নৈতিক অপরাধ, সমপরিমাণ নৈতিক অপরাধ হচ্ছে কাউকে বিশ্বাস না করা।

–সিনেকা

১০৯. উত্তেজিত অবস্থায় কোনো সিন্ধান্ত গ্রহণ সঙ্গত নয়। উত্তেজনা শীতল হলে ঠাণ্ডা মস্তিষ্কে ভেবেচিন্তে অগ্রসর হওয়া ভালো।

–বিল বিশার

১১০. দুই উকিলের মধ্যে একটি গ্রাম্য লোককে দুই বিড়ালের মধ্যে একটি মাছের সাথে তুলনা করা যায়।

ফ্রাংকলিন

১১১. বৃহত্তম অভিশাপের অন্যতম হচ্ছে-ঘুষ ও দুর্নীতি। এটা বিসদৃশ; বজ্রকঠিন হস্তে আমরা এটা দমন করব।

–এম. এ. জিন্নাহ্

১১২. জীবন নিজে শুভ বা অশুভ নয়; এটি শুভ বা অশুভের দৃশ্যপট, যেভাবে একে সাজাও।

–মতেইন

১১৩. অতি নির্বোধও অত্যাচারের প্রতিবাদ করে।

সুইনবার্ন

১১৪. অন্যায়ের প্রতি বিদ্রূপ করা অপেক্ষা মহৎ কাজের জন্য সংগ্রাম করা ভালো।

–টেনিসন

১১৫. অন্যায়কারী অন্যায় কৃতের চাইতে অধিক দুর্ভাগা।

ডেমোক্রিটাস

১১৬. যদি কেহ তব মন্দ বলে,
তুমি কিছু বোলো নাকো।
অন্যায় যদি কেহ করে তব–
চুপ করে সয়ে থাকো।
চেষ্টা নাও অন্যায় হতে
মানুষেরে ফিরাবার।
নাও তুমি ভাই অপরাধীর
যতেক ক্ষমার ভার।

মির্জা গালিব

১১৭. মন্দ লোকেরা তাদের অপরাধগুলো লুকোতে এবং ভালো লোকেরা সেগুলো পরিত্যাগ করতে সচেষ্ট থাকে।

স্যামুয়েল জনসন

১১৮. ঈশ্বর আমাদের পাপকে ক্ষমা করলেও বিবেকের কাছে আমরা অপরাধী।

–উইলিয়াম জেমস

১১৯. ক্ষমতাপ্রাপ্ত রাজপুরুষের অত্যাচার ও বিচারাসনে বসিয়া বিচারকের অবিচারের মতো মন্দ কর্ম আর নেই।

–হযরত আলি (রা.)

১২০. সকল বিষয়েই আমার কর্মপন্থা থাকবে সুপারিশ করার মতো কিছু, জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কার্যকর করার জন্য একটাও না।

–উইলসন এস. গ্রান্ট

১২১. সংসারের শ্রেষ্ঠ জিনিস মাত্রেই নিজের নিয়ম নিজেই সৃষ্টি করে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১২২. যারা নিজেদের নিয়ে ভাবতে পারেন মন্থর আর আরামদায়কভাবে এবং হতে পারেন তাঁদের নিজের বিচারক, তাঁরা আইন মেনে চলেন। অন্যেরা নিজেদের ভেতরেই নিজেদের আইন টের পায়।

হেরমান হেসে

১২৩. অকর্মা আইন দরকারি আইনকেও দুর্বল করে ফেলে।

১২৪. অজ্ঞ মানুষেরা নিয়ম মেনে চলে, আর জ্ঞানীরা নিয়ম সৃষ্টি করে। ক্লাউডিয়ান ১২৫. নিষ্ঠুর লোক ঈশ্বরের দুশমন।

টমাস ফুলার

১২৬. তুমি যত নিষ্ঠুর হবে মানুষের কাছে তত রহস্যময় হয়ে উঠবে।

ই. বি. ব্রাউনিং

১২৭. যুক্তিতে না পারলে শক্তিতে দেখে নেব, এটাই বর্বর নীতি।

–শেখ সাদি

১২৮. নীরবতা মঙ্গল না করলেও ক্ষতি করে না।

জর্জ রিচার্ড

১২৯. জালেমকে শাস্তি দাও, মজলুমকে রক্ষা করো ও আদর্শের তরবারি ধরো, প্রয়োজন হইলে মরো; কিন্তু ইসলামের তরকারি নিরপরাধকে আঘাত করিবার জন্য নয়।

–আল-হাদিস

১৩০. সারাজীবন ভগবানের নাম করে মানুষ যে-সুফল পায় না, একটা মুহূর্তের ন্যায় কাজে হয়তো তুমি তা পাবে।

পারস্য প্রবাদ

১৩১. সূর্যের আলো যেমন সকলকে সমান উত্তাপ দেয়, ন্যায়বিচারও তেমনিভাবে সবার জন্য অপেক্ষা করে।

স্যার টমাস মুর

১৩২. ন্যায়বিচারের মতো এমন প্রকৃত মহৎ ও ঈশ্বরতুল্য সদ্‌গুণ আর নেই।

–এডিসন

১৩৩. আইনজ্ঞ আর চিত্রকরেরাই পারেন সাদাকে দ্রুত কালো করে ফেলতে।

–ডেনিস প্রবচন

১৩৪. লোকে বলে আইন,বোঝে সম্পত্তি।

–ইমারসন

১৩৫. যত বেশি আইন, তত কম ন্যায়।

জার্মান প্রবচন

১৩৬. আপনি কৌসুলি, আপনার দায়িত্ব মিথ্যে বলা, লুকিয়ে ফেলা, যে কোনোকিছুকে বিকৃত করা আর সবাইকে কাত করে ফেলা।

জাঁ জিরাদু

১৩৭. প্রতিটি নতুন সময়ই তার আইন জন্ম দেয়।

ম্যাক্সিম গোর্কি

১৩৮. মানুষের উচিত তাদের আইনের জন্যে লড়াই করা, যেমন উচিত তাদের নগরপ্রাচীরের জন্যে।

হেরাক্লিটাস

১৩৯. বিচারালয় খোদার দরবার, বিচারের মালিক খোদা। মানুষ তাহার প্রতিনিধি হিসাবে বিচারাসনে বলে। সেখানে মিথ্যার স্থান নাই।

–এ. কে. ফজলুল হক

১৪০. প্রভু, দণ্ডিতের সাথে
দণ্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে
সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার; যার তরে প্রাণ
কোনো ব্যথা নাহি পায় তারে দণ্ডদান
প্রবলের অত্যাচার।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৪১. বাঁচো এবং বাঁচতে দাও–এই হল সাধারণ বিচারের কথা।

রোজার এল. ডাটেন্স

১৪২. পণ্ডিতদের অনেকে বলেন পাপ-পুণ্য মানসিক বিচার–এ-পৃথিবীতে পাপ-পুণ্য বলে কোনোকিছুর অস্তিত্ব নেই, মানুষের সুবিধার জন্য, সমাজের শৃঙ্খলা বজায় রাখবার জন্য পাপ-পুণ্য, ধর্ম, অধর্ম, সত্য-অসত্য–এই কথাগুলোর সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এর উত্তরে আমি বলব, আমরা যখন কোনো কাজে অগ্রসর হই তখন কখনো পাই বিবেক আর মনের সমর্থন, আবার কখনো মনের মধ্য থেকেই আসে বাধা। আমি এটাকে শুধু সংস্কার বলে উড়িয়ে দিতে চাই না–তা হলে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীতে ধর্ম আর সত্যের জয়ধ্বজা উড়ত না।

–জি, কে, চেস্টারটন

১৪৩. শিশু এবং বোকারা মিথ্যা বলে না।

জন হেউড

১৪৪. সত্যিকারের সমতা পৃথিবীতে কোনোদিন আসেনি এবং আসবে না। কিভাবে আমরা এখানে সকলে সমান হতে পারি? মানুষে যে ভেদাভেদ তা মস্তিষ্কের পার্থক্য। একমাত্র পাগল ব্যতীত কেউ বলবে না যে, আমরা সকলে একই মস্তিষ্কের শক্তি নিয়ে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করি।

–স্বামী বিবেকানন্দ

১৪৫. অধিকারলাভের যে মর্যাদা আছে, সে মর্যাদা রক্ষা করিতে হইলে অধিকার প্রয়োগকে সংযত করিতে হয়।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৪৬. মানুষের বড় পুণ্য হচ্ছে–যতই মূল্য দিতে হোক না কেন, অন্যায়ের সাথে যুদ্ধ করা।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

১৪৭. অন্যায়কারী তার দুষ্কর্মের রশিতেই বাঁধা পড়বে এবং একদিন-না-একদিন তাকে কৃতকর্মের ফলভোগ করতেই হবে।

হযরত সোলায়মান (আ.)

১৪৮. আমার মনে হয়, অন্যায় করার চেয়ে অন্যায় সহ্য করাটা ভালো।

ইমারসন

১৪৯. কৃত অপরাধ স্বীকার না করার অর্থ অপরাধটি দুবার করা।

টমাস ফুলার

১৫০. একজন আহত ব্যক্তি তার ক্ষতস্থানের ব্যথা যত শীঘ্র ভুলতে পারে, একজন অপমানিত ব্যক্তি তার অপমানের জ্বালা তত সহজে ভুলতে পারে না।

–লর্ড চেস্টারফিল্ড

১৫১. আমাদের সমস্ত নিয়মকানুন আমাদের মঙ্গল কামনাকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে।

থিওডোর পার্কার

১৫২. নীতিবানদের রাজ্যে রাজনীতি অচল।

ওয়েনডেল ফিলিপাস

১৫৩. নীতিবোধ কিংবা আরো স্পষ্ট করে বললে চারিত্রিক মূল্যবোধ সমাজ সংগঠনের প্রধান শক্তি।

–মোঃ মোর্তজা

১৫৪. যারা নীতিতে বিশ্বাসী নয়, বিশ্বাসী একমাত্র স্বার্থে, তাদের উন্নতি হয় বটে, কিন্তু পতনও আসে অপ্রতিরোধ্য গতিতে।

–লর্ড আর্থার

১৫৫. যেখানে বিচার আছে, সেখানে স্বাধীনতাও আছে।

টাস

১৫৬. যেদেশে বিচার নেই, সেদেশে সমস্যার কোনো সমাধান নেই। ম্যাসিঞ্জার ১৫৭. যে দুর্বল, সে সুবিচার করতে সাহস করে না।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৫৮. আমাদের নিজেদের সম্বন্ধে বিচার করার সময় আমরা ভবিষ্যতে কী করতে পারব তা ধরে নিজেদের বিচার করি। অন্যেরা যখন আমাদের সম্বন্ধে ভাবে বা বিচার করে তখন তারা আমাদের শুধু অতীত কার্যাবলির উপর দৃষ্টি রেখে বিচার করে থাকে।

লংফোলো

১৫৯. কৌশলের মধ্য দিয়ে মিথ্যে যেন না জেতে।

ইস্কিলাস

১৬০. যারা আইন তৈরি করেছে আইন মেনে চলায় তাদের চেয়ে বেশি পবিত্র দায় আর কারও নেই।

–জা আনুই

১৬১. ভালো আইন মানা না হলে তা ভালো সরকারকেও অক্ষম করে তোলে।

অ্যারিস্টটল

১৬২. আইন ভালো যদি আইনগতভাবে মানুষ একে মানে।

বাইবেল

১৬৩. আইন কেবলমাত্র তাদের জন্যেই তৈরি করা হয় যারা আইন বোঝে না, অথবা তাদের জন্যে যারা নগ্ন প্রয়োজনে তাকে মেনে চলে না।

–বের্টোল্ড ব্রেখট

১৬৪. আমি মানুষকে চোখ দিয়ে বিচার করি না, বিচার করি মন দিয়ে এবং আমার মনে হয় এটাই বিচারের সর্বোত্তম পথ।

–সেনেকা

১৬৫. অপরাধীর বিবেক সর্বদাই আতঙ্কের শিকার।

ন্যাথানিয়েল লী

১৬৬. মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের উপস্থিতিটাই হলো বিবেক।

সুইডেন বোর্গ

১৬৭. বিবেকই হল মানুষের সবচেয়ে বেশি বিশ্বাসী বন্ধু।

–ক্রাবি

১৬৮. মিথ্যাবাদী বলি যারে
সকলেই জানে,
তার সত্য, সত্য বলি
কেহই না মানে।
দুঃখের পিছনে সুখ,
ভাল অতিশয়,
আগে সুখ পরে দুঃখ
সহনীয় নয়।

–শেখ সাদি

১৬৯. হাকিম খুব জবরদস্ত, আইন খুব কঠিন, শাসন খুব কড়াকড়ি, কিন্তু এমন করিয়া স্থায়ী শান্তি স্থাপিত হয় কি না সন্দেহ। এমন করিয়া যেখানে বিরোধ নাই সেখানে বিরোধ ওঠে, যেখানে বিদ্বেষের বীজমাত্র আছে, সেখানে তাহা অঙ্কুরিত ও প্লাবিত হইয়া উঠিতে থাকে। প্রবল প্রতাপে শান্তি স্থাপন করিতে গিয়া মহাসমারোহে অশান্তিকে জাগ্রত করিয়া তোলা হয়।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৭০. কোনো মিথ্যাই পুরানো হয় না।

–ও. ডব্লিউ. হোমস

১৭১. স্বচ্ছ বিবেক এমন একটা আয়না, যার মধ্যে তুমি তোমার সকল কর্মের প্রতিবিম্ব দেখতে পাবে। বিবেকের চাইতে বড় উপদেষ্টা কেউ নেই। অন্যের মধ্যে যে আচরণ দেখলে তোমার অন্তরে ঘৃণা বা বিরক্তি উৎপাদন হয়, তোমার নিজের সংশোধনের জন্য সেগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করাই যথেষ্ট।

–হযরত আলি (রা.)

১৭২. ক্রোধের বশে মানুষ মানুষকে হত্যা করে–সে হয়তো মানুষের ভুল, তার মধ্যে গভীর আক্ষেপ আছে স্বীকার করতে হয়; কিন্তু এই যে মানুষ মানুষের বিচার করে প্রাণদণ্ডের বিধান দেয়–এর মধ্যে যে চরম দীনতা, তার চেয়ে দুর্ভাগ্য বোধ করি মানুষের আর কিছু নেই। সমান অন্যায় করে অপরের কৃত অন্যায়ের প্রতিকারতার নাম ন্যায়।

–তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

১৭৩. বিবেক সম্পূর্ণরূপে সুশিক্ষিত এবং এর কথায় যে কর্ণপাত না করে অচিরেই সে তার নিকট কোনোকিছু বলা বন্ধ করে।

স্যামুয়েল বাটলার

১৭৪. ন্যায়বিচার অত্যাচারীর জন্য জাহান্নামতুল্য।

–হযরত আলি (রা.)

১৭৫. আইনের চেয়ে অধিকার অনেক ভালো।

–স্যার লিউস মরিস

১৭৬. আমার হাত প্রত্যেকের জন্য এবং অন্যের হাত আমার জন্য।

টমাস পিকক

১৭৭. যে-আইন প্রকৃতির বিরুদ্ধে সে-আইন জাতির বিরুদ্ধে।

–মিল্টন

১৭৮. পাপ করে অনুতপ্ত না হওয়া এমন এক রোগ যার কোনো চিকিৎসা নেই।

–ইবনে আরবি

১৭৯. অসৎ মানুষের হৃদয়ের উত্তাপ পেয়ে পুলকিত হয়ো না।

জন ফ্লোরিও

১৮০. প্রতারণা হচ্ছে বিষাক্ত জলের মতো, যেদিকে যাবে সেদিকেই ক্ষতি করবে।

নিকোলাস রাউ

১৮১. যে মনকে সংযত করতে জানে সে-ই পাপ হতে দূরে থাকতে পারে।

ব্রান্টন

১৮২. অনায়ের প্রতি বিদ্রূপ করা অপেক্ষা মহৎ কাজের জন্য সংগ্রাম করা ভালো।

–টেনিসন

১৮৩. অন্যায় করে লজ্জিত না হওয়া আরেক অন্যায়।

সক্রেটিস

১৮৪. খারাপ লোকেরা তার অন্যায় কাজকে বারবার ক্ষমা করে, আর ভাল লোকেরা তা পরিত্যাগ করে।

–বেন জনসন

১৮৫. আমি দোষ বর্জিত মানুষ নই, আমিও অন্যায় করতে পারি এ চিন্তা সর্বক্ষণ করতে হবে।

ডাব্লিউ জি বেনহাম

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *