১৫. মাইনে ও পদমর্যাদা দিয়ে গুরুত্ব বিচার করা

মাইনে ও পদমর্যাদা দিয়ে গুরুত্ব বিচার করা যায় কল-কারখানায়, সওদাগরী অফিসে ও সাধারণ সরকারি দপ্তরে। হয়তো আরো কিছু কিছু জায়গায়। সর্বত্র নিশ্চয়ই নয়। বিশেষ করে গোয়েন্দা বিভাগ ও কূটনৈতিক দুনিয়ায় তো নয়ই। একবার পরীক্ষায় পাস করে দু-চারটে প্রমোশন পেয়ে কিছুটা উপরে উঠলেই এই দুটি দপ্তরে গুরুত্ব বাড়ে না। পুলিশের এসপি বা ডি-এস-পি-র চাইতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গোয়েন্দা বিভাগের সাব-ইনস্পেক্টর ও ইস্পেক্টরদের গুরুত্ব ও প্রাধান্য বেশি। ডিপ্লোম্যাটিক মিশনগুলিতেও ঠিক এমনি হয়।

বিগ পাওয়ারদের কথাই আলাদা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অ্যাম্বাসেডরের চাইতে প্রায় অজ্ঞাত এক থার্ড সেক্রেটারির গুরুত্ব অনেক বেশি। অনেক ক্ষেত্রে এই থার্ড সেক্রেটারির গোপন রিপোর্টের ভিত্তিতেই অ্যাম্বাসেডরের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। ভারতবর্ষ বিগ পাওয়ার হয়নি বলেই হয়তো এখনও কনফিডেনশিয়্যাল রিপোর্টে অ্যাম্বাসেডরের দস্তখত প্রয়োজন হয়। তবে ভারতীয় মিশনগুলিতেও শুধু মাইনে ও পদমর্যাদা দিয়েই ডিপ্লোম্যাটদের গুরুত্ব বিচার করতে গেলে অন্যায় ও ভুল হবে।

বন-এ ইন্ডিয়ান এম্বাসীর পলিটিক্যাল কাউন্সিলার হয়েও রাজনৈতিক ব্যাপারে মিঃ আহুজার বিশেষ কোনো গুরুত্ব বা প্রাধান্য নেই। যখন প্রায় রাতারাতি ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসের জন্ম হয়, তখন মিঃ আহুজা ডি-এ-ভি কলেজের দর্শনশাস্ত্র অধ্যাপনার কাজে হঠাৎ ইতি দিয়ে ডিপ্লোম্যাট হন! প্লটো, সক্রেটিস বা ভগবান বুদ্ধের সংস্পর্শ ত্যাগ করেও আহুজা সাহেবের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েনি। বরং বছর বছর মাইনে বেড়েছে ও কয়েক বছর পর নিয়মিত প্রমোশনও পেয়েছেন। তবুও ওঁর ওপর ঠিক নির্ভর করা যায় না এবং ক্ষেত্রবিশেষে নির্ভর করাও হয় না।

প্রত্যেক শুক্রবার আহুজা সাহেব তার পলিটিক্যাল রিপোর্ট অ্যাম্বাসেডরকে দেন এবং অ্যাম্বাসেডর একটু চোখ বুলিয়েই তা বন্দী করে রাখেন নিজের ড্রয়ারে। সেকেন্ড সেক্রেটারির রিপোর্টটাই কেটেকুটে পাঠিয়ে দেন দিল্লি।

এবার পশ্চিম জার্মানীর নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক বেশি। উনপঞ্চাশ থেকে প্রতি নির্বাচনে যা হয়েছে এবার ঠিক তা হবে কিনা কেউ জানে না! অনেকের মনেই অনেক রকম সন্দেহ। বার্লিন নিয়ে দুটি সুপার-পাওয়ারের ঠান্ডা লড়াই নেহাত হঠাৎই জমে উঠেছে বলে এই নির্বাচন আরো বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাই তো অ্যাম্বাসেডর তলব করেছেন তরুণকে।

তরুণকে টেলিফোন করার পরদিন সেকালের কনফারেন্সে অ্যাম্বাসেডর নিজেই বললেন, আওয়ার ওয়েস্ট ইউরোপীয়ান ডেস্ক ওয়ান্ট ডিফারেন্ট স্টাডিজ অ্যাবাউট ইলেকশন এবং সেইজন্যই আমি বার্লিন থেকে তরুণকেও আসতে বলেছি।

এই নির্বাচনের কেন্দ্রবিন্দু কোনার্দ আদ্যেনুর। ডিপ্লোম্যাট তরুণ সেনগুপ্তের কাছে আদ্যেনুর অপরিচিত নাম হয়। বরং সে জানে রসিক কূটনীতিবিদরা আদর করে এর নাম রেখেছেন জন ফস্টার আদ্যেনুর!

অরণ্যেও দিন-রাত্রি হয় কিন্তু আদ্যেনুরের কাছে নয়। বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ সমাজবাদ প্রতিষ্ঠা হবার পরও এই মহাপুরুষ রাশিয়াকেও ঠিক স্বীকৃতি দিতে রাজি নন! ইন্দ্রাণীর সব স্মৃতি, সব কথা দূরে সরিয়ে রেখে তরুণ আদ্যেনুরের চিন্তায় ডুবে গেল।

উনিশশো চোদ্দয় যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হয়, তখন আদ্যেনুরের বয়স একত্রিশ। কোলোনের লর্ড মেয়র হন আরো দশ বছর পর। নাজীদের সময় এঁকে বনবাসে যেতে হয়। যুদ্ধের পর আমেরিকানরা আবার একে মেয়র করলেও ইংরেজ সেনাবাহিনীর আঞ্চলিক প্রধান, অকর্মণ্যতার জন্য একে পদচ্যুত করেন। চাকা ঘুরে গেল। তিয়াত্তর বছরের বৃদ্ধ হলেন পশ্চিম জার্মানির সর্বেসর্বা-চ্যান্সেলার! তারপর এক যুগ ধরে চলেছে দাদুর রাজত্ব। একচ্ছত্র আধিপত্য! এবারও কি তার পুনরাবৃত্তি হবে?

তরুণ জানে দাদুকে এককালে সবাই ভয়-ভক্তি করলেও আজ নিন্দায় মুখর বহুজনে। প্রকাশ্যে, মুক্তকণ্ঠে।

নির্বাচনের উত্তেজনায় কটা সপ্তাহ কোথা দিয়ে কেটে গেল, তরুণ টের পেল না। পনের দিনে দশটি প্রদেশে ঘুরে ঘুরে কত অসংখ্য মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছে। বড় বেশি ক্লান্ত বোধ করছিল। অ্যাম্বাসেডর বড় খুশি হয়েছিলেন তরুণের রিপোর্ট। তাই তো সবকিছু মিটে যাবার পর অ্যাম্বাসেডর তরুণকে বললেন, বড্ড পরিশ্রম করতে হয়েছে তোমাকে। টেক সাম রেস্ট রিটার্নিং টু বার্লিন!

তরুণ ধন্যবাদ জানাল, থ্যাঙ্ক ইউ ভেরী মাচ স্যার!

প্রথম দু তিন-দিন তো কোলোনেই কেটে গেল। দিনে মিউজিয়ামে ও রাতে নাইট ক্লাব রোমান্টিকাতে। রোজ রোজ যেতে ভালো না লাগলেও চ্যাটার্জীর পাল্লায় পড়ে যেতেই হতো, আর ওই দোতালার কোণার টেবিলে বসে রাইন ওয়াইন খেতে খেতে শুনতে হতো ওর ইন্দোনেশিয়ার কাহিনি।

তরুণের এসব কোনোকালেই ভালো লাগে না। বিশেষ করে যারা নিজের অধঃপতনের কাহিনি বলতে গর্ব অনুভব করে, তাদের তরুণ মনে মনে দারুণ ঘৃণা করে। তবুও চ্যাটার্জিকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে না। হাজার হোক এককালের সহকর্মী ও সমসাময়িক। দিল্লিতে রোজ একসঙ্গে লাঞ্চ খেয়েছে, সন্ধ্যায় কনট প্লেস-এ ঘুরেছে, সাঞ্জ হাউসে ওডিসি নাচ দেখেছে। আরো কত কি করেছে।

চ্যাটার্জির প্রথম ফরেন পোস্টিং হলো ইন্দোনেশিয়া। নিষ্ঠাবান, আদর্শবান, ধর্মভীরু সন্তোষ চ্যাটার্জি অত্যন্ত খুশি হয়েছিল এই ভেবে যে ভারতবর্ষ থেকে বহুদুরে গিয়েও অতীত দিনের ভারতীয় সংস্কৃতির স্পর্শ অনুভব করবে প্রতি পদক্ষেপে। প্রায় দুহাজার বছর আগে ভারতীয় সওদাগরের দল হিন্দু সভ্যতা-সংস্কৃতি এনেছিলেন এই দেশে, তার চিহ্ন আজও সযত্নে সসম্মানে দেখতে পাওয়া যাবে। কীর্তন ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের রেকর্ড আর বান্ডিল ধূপকাঠি নিয়ে যে সন্তোষ চ্যাটার্জি একদিন ভোরবেলায় বোম্বে থেকে পি-অ্যাভ-ও কোম্পানির জাহাজে চড়ে ইন্দোনেশিয়া রওনা হয়েছিল, সে সন্তোষ আর ফিরে আসেনি। হোটেল ইন্দোনেশিয়ার জাভা রুমে আর কেবাজোরান মডেল টাউনের ওই ছোট্ট কটেজের বেডরুমে অসংখ্য ক্ষণিক বান্ধবীদের উষ্ণ সান্নিধ্যে সে চ্যাটার্জির মৃত্যু হয়েছে।

রাইন নদীর শোভা না দেখে রোমান্টিকাতে বসে বসে সেই সর্বনাশা নোংরা কাহিনি শুনতে শুনতে বিরক্তবোধ করে তরুণ। হাতে দিন তিনেক মাত্র সময় ছিল, কিন্তু তবুও সেকেন্ড সেক্রেটারি হাবিবকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল ব্ল্যাক ফরেস্টের দিকে।

নির্বাচনের পরিশ্রম আর চ্যাটার্জির সান্নিধ্যে বড় ক্লান্তবোধ করছিল তরুণ। ব্ল্যাক ফরেস্টের নির্জন কটেজে বেশ লাগল দুটি দিন। তাছাড়া অনেক দিন পর হাবিবের গান শুনতে আরো ভালো লাগল। নিজে গান শেখেনি, তবে বাড়িতে গানের চর্চা ছিল। হাজার হোক রামপুরের খানদানি বংশের ছেলে তো! হাবিদের দরবারী কানাড়া শুনতে রাত জাগতে হতো না। সন্ধ্যার পর সাপার শেষ করে কটেজের বারান্দায় বসেই শোনা যেত। ঘড়ির কাটায় মাত্র আটটা বাজলেও মধ্যরাত্রির গাম্ভীর্যভরা ব্ল্যাক ফরেস্টের মধ্যে তরুণ যেন ফেলে আসা বাংলাদেশের স্মৃতি খুঁজে পেতো।

সঙ্গে সঙ্গে মনটা ভয়ানক ভাবে হাহাকার করে উঠত। দরবারী কানাড়ার মিষ্টি সুর কানে ভেসে এলেও বুকটা বড় বেশি জ্বালা করত।

হাবিবের গান থামত কিন্তু তরুণ যেন তখনও বিভোর হয়ে থাকত। আত্মমগ্ন থাকত।

কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর হাবিব একটু ঘুরিয়ে প্রশ্ন করত, কিয়া দাদা, কোনো কষ্ট হচ্ছে?

একটা চাপা দীর্ঘনিশ্বাস বেরিয়েই আসত। মুখে বলত, না না, কষ্ট হবে কেন?

ব্ল্যাক ফরেস্টের নির্জনতা আবার দুজনকে ঘিরে ধরে। বেশ কিছুক্ষণ কেউই কোনো কথা বলে না।

হাবিব পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা বের করে এগিয়ে দেয়, দাদা, হ্যাভ এ সিগারেট।

সিগারেট?

নিজেই যেন নিজেকে প্রশ্ন করে। মাথাটা হেঁট করে একবার নিজেকেই নিজে দেখে নেয়। আবার একটা চোরা দীর্ঘনিশ্বাস! হাবিব! বেটার গিভ মি সাম ড্রিংক!

তরুণ সেনগুপ্ত ড্রিংকস চাইছে? হাবিব স্তম্ভিত হয়ে যায়। পার্টিতে, রিসেপশনে বা ককটেলে দু এক পেগ খেলেও ড্রিংকের প্রতি কোনো আগ্রহ বা দুর্বলতা নেই ওর। একথা ফরেন সার্ভিসের সবাই জানেন। হাবিবও জানে।

ইউ ওয়ান্ট ড্রিংক?

কেন, ফুরিয়ে গেছে নাকি?

না না, ফুরোবে কেন, বাট…।

তবে আবার দ্বিধা করছ কেন?

হাবিব একটু হাসতে হাসতেই বলে, আপনাকে তো কোনোদিন ড্রিংক চাইতে দেখিনি, তাই…।

ওই আবছা অন্ধকারের মধ্যেই তরুণ একবার হাসে। আগে কোনোদিন যা করিনি, ভবিষ্যতে কি তা করা যায় না?

ইন্দ্রাণী সম্পর্কে অ্যাম্বাসেডর যে মেসেজটা দিল্লিতে পাঠিয়েছিলেন তা হাবিবের হাত দিয়েই গিয়েছিল। তাছাড়া কপাল জেনারেল বন-এ এলেও সব শুনেছিল। তাই তো অযথা তর্ক করতে চায় না সে।

ঘর থেকে ওয়াইনের বোতলটা এনে দুটো গেলাসে ঢালে।

চিয়ার্স।

চিয়ার্স।

আবার কিছুক্ষণ আনমনা হয়ে বসে থাকার পর তরুণ জানতে চায়, আচ্ছা হাবিব, তোমার বাড়িতে সবাই আছেন তাই না।

হ্যাঁ, বাবা-মা ভাই-বোন…!

তুমি বিয়ে করবে না?

হ্যাঁ, করাচি যাবার আগেই বিয়ে করে যাব। অনায়াসে জবাব দেয় হাবিব।

পাকিস্তানের নাম শুনেই তরুণ চঞ্চল হয়ে ওঠে। তুমি করাচি যাচ্ছ?

হ্যাঁ দাদা।

কবে?

এইতো তিন সপ্তাহের মধ্যেই আই উইল সেল ফর বম্বে। তারপর সিকস্ উইক দেশে থেকেই করাচি যাব।

ওয়াইন গেলাসটা মুখে তুলতে গিয়েও নামিয়ে রাখল তরুণ। স্বগতোক্তির মতো চাপা গলায় বলল, তুমি করাচি যাচ্ছ?

হাবিবও গেলাসটা নামিয়ে রাখে। একটা সিগারেট ধরিয়ে একটা টান দেয়। দু-এক মিনিট চুপ করে থেকে প্রশ্ন করে, দাদা, করাচিমে কোই কাম হ্যায়?

এবার একটু জোর করেই হাসে তরুণ, কাম? একটু জরুরি কাজ আছে ভাই।

টেল মি হোয়াট আই উইল হ্যাভ টু ডু। মুহূর্তের জন্য একটু চিন্তা করে বলে, যদি আমার দ্বারা না হয় তাহলে আই উইল আস্ক মাই আংকেল টু হেল্প মি।

হু ইজ ইওর আংকেল?

উনি পাকিস্তান ফরেন মিনিস্ট্রির অ্যাডিশন্যাল সেক্রেটারি।

উল্লসিত হয় তরুণ, রিয়েলি?

আর থাকতে পারে না তরুণ। হাবিবের হাত দুটো চেপে ধরে বলে, ইউ মাস্ট হেল্প মি, হাবিব।

নো কোশ্চেন অফ হেল্প দাদা, আপনার কাজ করা আমার কর্তব্য!

ওই রাত্রে দূর থেকে ব্ল্যাক ফরেস্টে সূর্যোদয়ের ইঙ্গিত পেলো ভগ্নমনা তরুণ সেনগুপ্ত।

জলপ্রপাতের জলধারা যেমন দুরন্ত বেগে গড়িয়ে পড়ে, তরুণও প্রায় সেই রকম এক নিশ্বাসে সব কথা বলে ফেললে হাবিবকে।

অত করে বলার কিছু নেই। কিছু কিছু আমিও জানি, বিকজ আই সেন্ট দ্য অ্যাম্বাসের্ডস মেসেজ টু ফরেন অফিস।

এই পৃথিবীতে মানুষের কত কি সহ্য করতে হয়। জরা, দারিদ্র্য, ব্যাধির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা যায়, সান্ত্বনা পাওয়া যায়, কিন্তু প্রিয়হীন নিঃসঙ্গ মানুষের মতো অসহায় আর কেউ নয়। কাজের মধ্যে যখন ডুবে থাকে, যখন বৃদ্ধ আদ্যেনুরের রাজনৈতিক ইতিহাসের ব্যালান্সশীট মেলাতে হয়, তখন বেশ কেটে যায়। কিন্তু যখন কাজের চাপ নেই, যখন ব্ল্যাক ফরেস্টের শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশে নিজেকে বড় বেশি অনুভব করা যায়, যখন নিজের হৃদপিণ্ডের মৃদু স্পন্দনও। দৃষ্টি এড়ায় না, তখন হাবিবের মতো কনিষ্ঠ সহকর্মীর কাছেও আত্মসমর্পণ করতে লজ্জা করে না।

হাবিবের দুটো হাত চেপে ধরে তরুণ বলে, ইউ মাস্ট ডু সামথিং হাবিব। আমি বড্ড লোনলি।

বন-এ ফিরেই অ্যাম্বাসেডারের কাছে আর একটা সুখবর পাওয়া গেল।

দেয়ার ইজ এ গুড পিস্ অফ নিউজ ফর ইউ।

তরুণ মুখে কিছু বলে না, শুধু অধীর আগ্রহে চেয়ে থাকে অ্যাম্বাসেডরের দিকে।

পাকিস্তান ফরেন অফিস হ্যাঁজ ইনফর্মড আওয়ার ফরেন অফিস যে, রায়ট ভিকটিমসদের সমস্ত নাম চেক আপ করেও ইন্দ্রাণীর নাম পাওয়া যায়নি।

রিয়েলি স্যার? তরুণের মুখটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

অ্যাম্বাসেডর ডান হাত দিয়ে তরুণের কাঁধে ঝাঁকুনি দিয়ে বলেন, তুমি ফাইল দেখতে চাও?

অ্যাম্বাসেডর মনে আঘাত পেলেন নাকি? না না, স্যার। ফাইল দেখে কি করব? আপনার মুখের কথাই আমার যথেষ্ট।

অ্যাম্বাসেডর আরো বললেন, তবে পাকিস্তান ফরেন অফিস জানিয়েছে, ইট উইল টেক টাইম টু ট্রেস আউট ইন্দ্রাণী।

টাইম? তা তো লাগবেই। পুলিশের ফাইল ঘেঁটে বর্ডার চেকপোস্টগুলোর রেকর্ড দেখতে হবে, ইন্দ্রাণী সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতবর্ষে চলে গেছে কিনা। বর্ডার চেকপোস্টের রেকর্ড হদিস না পেলে আবার নতুন করে খোঁজ করতে হবে। সময় তো লাগবেই।

…তাছাড়া হাবির ইজ গোয়িং টু করাচি অ্যান্ড হিজ আংকেল ইজ দ্য রাইট পার্সন টু হেল্প আস।

হ্যাঁ স্যার, তাই তো শুনলাম।

সুতরাং তোমার আর চিন্তা কি? বাই দ্য টাইম ইউ লিভ বার্লিন, ইন্দ্রাণী উইল রিজয়েন ইউ।

তরুণ মনে মনে বলে, আপনার মুখে ফুলচন্দন পড়ুক স্যার।

দুঃখে নয়, আক্ষেপে নয়, গোপন খবর সংগ্রহের জন্যেও নয়, নিছক আনন্দে, খুশিতে সে রাত্রে হাবিবের সঙ্গে বোতল বোতল রাইন ওয়াইন ড্রিংক করল তরুণ।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *