০৫. মৃতদেহ পরীক্ষান্তে অরূপ মুখার্জী

মৃতদেহ পরীক্ষান্তে অরূপ মুখার্জী তখন ঘরের চারদিকে সবকিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করছিল। যোগজীবন আগে ও পরে কিরীটী ঘরের মধ্যে এসে ঢুকল।

পদশব্দে চোখ তুলে তাকাতেই অরূপের সঙ্গে কিরীটীর চোখাচোখি হল, অরূপের চোখের তারা দুটো যেন আনন্দে চকচক করে ওঠে।

মিঃ রায়, আপনি!

নতুন থানায় বদলি হয়ে এসে অরূপ কিরীটী তার এলাকাতেই আছে জানতে পেরে নিজেই একদিন গিয়ে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে আলাপ করে এসেছিল।

কাজেই পরস্পর পরস্পরের কাছে তারা অপরিচিত নয়।

কিরীটী যোগজীবনকে দেখিয়ে বললে, হ্যাঁ অরূপ, উনি আসবার সময় আমায় ধরে নিয়ে এলেন, ফোনটা যখন যায় আমি ওঁর ওখানে বসে চা খাচ্ছিলাম।

খুব ভাল হয়েছে আপনি এসেছেন। কিন্তু উনিওঁর পরিচয়? অরূপ যোগজীবনকে দেখিয়ে প্রশ্ন করল।

যোগজীবন সান্যাল, রিটায়ার্ড লাইফ লিড করছেন। কাছাকাছিই বাড়ি। গগনবিহারীর দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

আই সি! আপনাকে বুঝি ফোনে সংবাদ দিয়েছিল কেউ? যোগজীবনকে প্রশ্ন করে অরূপ।

হ্যাঁ। ফোন পেয়েই তো আসছি।

কে ফোন করেছিল?

সুবীর, গগনের ভাইপো।

 কিরীটী ইতিমধ্যে ভূপতিত মৃতদেহটার সামনে এগিয়ে গিয়েছিল।

মৃতদেহের সামনে তখন জ্যাকি বসে আছে।

সে তাকালও না। পৃষ্ঠদেশে ছোরাটা আমূল বিদ্ধ হয়ে আছে। খানিকটা বাঁদিক ঘেঁষে ছোরাটা বিদ্ধ করা হয়েছে। বোঝা যায় ঐ ছুরিকাঘাতেই সম্ভবতঃ মৃত্যু হয়েছে গগনবিহারীর।

একটু দুরে দামী খাট, উপরে আধুনিক ডিজাইনের শয্যা, শয্যার চাদর এলোমেলো, বালিশ দুটোও যথাস্থানে নেই। খাটের নীচে খানিকটা জায়গা জুড়ে মেঝেতে দামী একটা কার্পেট বিছানো, বাকি মেঝেটায় কোন কার্পেট নেই।

সাদা কালো ডিজাইনের মোজাইক টাইলসয়ের মেঝে ঘরে। ঝকঝকে পরিষ্কার মেঝে। খাটের হাত পাঁচেক দূরে মৃতদেহটা উত্তর-দক্ষিণ ভাবে কোণাকুণি পড়ে আছে।

বড় সাইজের মিরার বসানো একটা গড়রেজের স্টীলের আলমারির গা ঘেঁষে।

কিরীটী নীচু হয়ে বসল মৃতদেহের সামনে। চোখেমুখে মৃতদেহের যেন একটা সুস্পষ্ট যন্ত্রণার চিহ্ন অঙ্কিত হয়ে আছে।

বুকের ছোরাবিদ্ধ রক্তাক্ত ক্ষতস্থান ছাড়া মৃতের ডানদিককার গালে একটা সরু লম্বা ক্ষতচিহ্ন চোখে পড়ল, ডান হাতটা মৃতের মুঠো করা।

হাতের পাতায় খানিকটা রক্ত জমে আছে কালো হয়ে।

কিরীটী মৃতদেহের বদ্ধ মুঠি খোলবার চেষ্টা করল কিন্তু পারল না। কি যেন একটা চকচক করছে মুঠির মধ্যে, ওর নজরে পড়ে। রাইগার মর্টিস সেট ইন করেছিল মৃতদেহে।

চকচকে বস্তুটি কোনমতে বদ্ধ মুঠি থেকে বের করতে গিয়ে ভেঙে গেল। কিরীটী সেই ভাঙা বস্তুটি নিয়ে উঠে দাঁড়াল। একবার দেখল ভাল করে জিনিসটা কি? ঠিক বুঝতে পারল না।

অরূপ পাশেই দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করছিল, জিজ্ঞাসা করল, কি ওটা মিঃ রায়?

মনে হচ্ছে একটা ভাঙা কাচের চুড়ির টুকরো।

ভাঙা কাচের চুড়ির টুকরো!

তাই তো মনে হচ্ছে।

কিরীটী রেখে দিল পকেটের মধ্যে ভাঙা চুড়ির টুকরোটা।

হাতের মুঠোর মধ্যে কোথা থেকে এল ওটা?

কিরীটী মৃদু হেসে বললে, হয়তো কোন পলাতকা প্রেয়সীর চিহ্ন রয়ে গিয়েছিল ভদ্রলোকের হাতের মুঠোর মধ্যে।

কি বলতে চান মিঃ রায়?

কিরীটী কিন্তু অরূপ মুখার্জীর সে প্রশ্নের কোন জবাব দিল না। সে তখন ঘরের চারদিক তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখছে।

ঘরটা বেশ বড় সাইজের। দক্ষিণ ও উত্তরমুখী দুটো দুটো করে বড় সাইজের ডবল পাল্লার জানালা, জানালার গ্রিলস বসানো। ঘরের সংলগ্ন বাথরুম। ঘরে দুটো দরজা, একটা পাশের ঘরে যাবার তার মধ্যে।

কিরীটী বাথরুমের মধ্যে গিয়ে ঢুকল ঘর থেকে। ইটালিয়ান টাইলস দিয়ে বাথরুমের দেওয়ালের অধের্কটা মোড়া, মেঝে মোজাইকের। মস্ত বড় একটা বাথটব। আয়না বসানো দেওয়ালে। আয়নার নীচে কাচের সেল। সেলফের উপরে সেভিং সেটস্ সেভিং ক্রিম, ব্রাস, টুথপেস্ট, টুথব্রাস, টাংগ ক্লিনার, চিরুনি ও ব্রাস, সেভিং লোসন, ল্যাভেণ্ডার স্প্রে, নেইল কাটার সযত্নে সাজানো।

সবই পরীক্ষা করে দেখল কিরীটী-দামী ও বিলিতি। ব্লু রংয়ের একটা বেসিন। টাওয়েল র‍্যাকে ব্লু রংয়ের একটা টার্কিশ টাওয়েল এলোমেলো ভাবে ঝোলানো। টাওয়েলটা তুলে নেড়েচেড়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে নজরে পড়ল কিরীটীর, ফিকে লালচে অনেকটা ব্রাউন রংয়ের ছোপ ছোপ দাগ টাওয়েলের মধ্যে।

কিরীটী ঝুঁকে পড়ে বেসিনটা দেখতে লাগল। বেসিনের কলটা ভাল করে বোধ হয় টাইট করা নেই, ক্ষীণধারায় জল পড়ে যাচ্ছিল তখনও।

বেসিনের সাইডে সাবান রাখবার জায়গায় সাবানটাও ঠিকভাবে রাখা নেই মনে হয় যেন। সাবানটা তুলে নিয়ে ঝুঁকে দেখল কিরীটী, দামী গন্ধওয়ালা সাবান। সাবানটাও বিলিতি মনে হয়।

বাথরুমের ফ্লোরে এখানে ওখানে জল তখনও জমে আছে। ব্র্যাকেটে একটা ড্রেসিংগাউন ঝুলছে।

পুনরায় কাচের সেলফটা ভাল করে পরীক্ষা করে দেখতে গিয়ে হঠাৎ কিরীটীর নজরে পড়ল মাথার চিরুনির গায়ে কয়েকটা বড় বড় চুল আটকে আছে।

চিরুণি থেকে চুলগুলো ছাড়িয়ে একটা কাগজে মুড়ে কিরীটী পকেটে রেখে দিয়ে বাথরুম থেকে বের হতে গিয়ে থমকে দাঁড়াল।

বাথরুমে মেথরদের যাতায়াতের যে দরজাটা তার পাল্লা দুটো ভেজানো থাকলেও ভিতর থেকে খিল দেওয়া নেই। খোলা।

কিরীটী দরজার পাল্লা দুটো টেনে খুলতেই নজরে পড়ল ঘোরানো লোহার সিঁড়িটা। ঐ সিঁড়িই মেথরদের বাথরুমে আসা-যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।

বাথরুমের দরজাপথেই কিরীটীর নজরে পড়ে বাড়ির পিছনদিকে বেশ খানিকটা খোলা জায়গা, ঘাস ও আগাছায় ভর্তি। দুরে প্রাচীর ঘেঁষে একেবারে ছোট একটা ঘর।

চারিদিকে দেখে কিরীটী দরজাটা টেনে দিয়ে বাথরুম থেকে বের হয়ে এল আবার। ঘরের চারিদিক নজর করে আবার দেখে, একটা দামী সিঙ্গল খাট, একটা গোদরেজের আলমারি, ওয়ারড্রোব, তার উপরে একটা বুদ্ধমূর্তি ও একটা কাঠের হাতী।

অরূপ!

কিছু বলছিলেন? কিরীটীর ডাকে ওর দিকে তাকাল অরূপ কথাটা বলে।

তোমার সব জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়েছে?

না।

তাহলে শুরু করে দাও!

আপনি এখন চলে যাবেন?

না। তোমার জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হোক, তারপর যাব।

তাহলে চলুন পাশের ঘরে যাওয়া যাক।

ডেড বডি সরাবার ব্যবস্থা করেছ?

করেছি, ফোন করে দিয়েছি।

পাশের ঘরে এসে সকলে বসল। ওটাই বসবার ঘর। চমৎকার ভাবে সাজানো। একপাশে ফোনও আছে।

যোগজীবনবাবু কাঁদছিলেন। চোখ দুটো তাঁর লাল হয়ে উঠেছিল। কিরীটী যে সোফাটায় বসে, যোগজীবনবাবু সে সোফাতেই কিরীটীর পাশ ঘেঁষে বসলেন।

রায় সাহেব! যোগজীবনবাবু রুদ্ধ গলায় ডাকলেন।

বলুন?

এ কি হল বলুন তো! গগনকে এমন নিষ্ঠুরভাবে কে হত্যা করল? যোগজীবন যেন কান্না রোধ করতে পারছিলেন না।

আমি বুঝতে পারছি সান্যাল মশাই, বন্ধুর মৃত্যুতে খুব শ হয়েছেন, তবে—

কি তবে?

ওঁর মৃত্যুর–মানে অপঘাত মৃত্যুর জন্য আমার মনে হচ্ছে যেন উনিই দায়ী?

গগন নিজে দায়ী?

তাই তো আপাততঃ মনে হচ্ছে আমার।

কেন?

কিরীটীর জবাবটা আর দেওয়া হল না, সুবিনয় এসে ঘরে ঢুকল।

অরূপ সুবিনয়ের দিকে তাকিয়ে বললে, বসুন সুবিনয়বাবু।

সুবিনয় বসল।

আপনিই তো প্রথম দেখেন মৃতদেহ, তাই না?

না মিঃ মুখার্জী, আমি না, বাহাদুর। সে-ই প্রথমে দেখে, দেখে আমাকে ডেকে আনে।

হুঁ। কাল রাত্রে আপনি তো বাড়িতেই ছিলেন?

হ্যাঁ। কাল শনিবার ছিল, বেলা চারটে নাগাদ অফিস থেকে ফিরে আসি, তারপর আর বের হইনি। নীচে নিজের ঘরেই ছিলাম।

কখন শুতে যান?

আমার বরাবর একটু তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়াই অভ্যাস রাত্রে। দশটা নাগাদ শুয়ে পড়েছিলাম।

আর সুবীরবাবু?

সে বিকেলেই সেজেগুঁজে বের হয়ে গিয়েছিল, আজ সকালে ফিরেছে। রাত্রে বাড়িতে ছিল না।

আর আপনার মামা গগনবাবু? তিনি কাল বের হননি কোথাও?

মামাও কাল বের হননি।

কেউ তাঁর কাছে এসেছিল?

হ্যাঁ। রাত তখন বোধ করি সাড়ে নটা কি পৌনে দশটা হবে–ঠিক সময়টা মনে নেই, আমার খাওয়া হয়ে যাবার পরই শমিতা দেবী এসেছিলেন।

কথাটা সুবিনয় শেষ করল একবার আড়চোখে কিরীটীর পার্শ্বে উপবিষ্ট যোগজীবনের দিকে তাকিয়ে।

অত রাত্রে শমিতা দেবী এসেছিলেন।

হ্যাঁ, প্রায়ই তো আসতেন। তবে ইদানীং হপ্তাখানেক আসছিলেন না, মামাও বের হতেন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে দেখছিলাম।

শমিতা দেবী কে? অরূপ প্রশ্ন করল।

যোগজীবনবাবুর বোন!

অরূপ যোগজীবনবাবুর মুখের দিকে তাকাল।

যোগজীবনবাবু বললেন, হ্যাঁ, আমার বোন। গগন ওকে ছোটবেলা থেকেই চিনত। তাছাড়া শমিতাদের মরালী সঙেঘর পেট্রোন ছিল গগন।

গগনবাবুর সঙ্গে আপনার অনেক দিনের পরিচয় বলুন তাহলে?

হ্যাঁ, দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব আমাদের পরস্পরের।

আচ্ছা, শমিতা দেবী বিবাহিত, না অবিবাহিত?

জবাবটা দিল সুবিনয়ই, বিবাহ করেছিলেন তবে বছর দুই আগে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। মামাবাবুর সঙ্গে বেশ ভাল পরিচয়ই ছিল শমিতা দেবীর।

তা কখন শমিতা দেবী চলে যান আবার রাত্রে?

বলতে পারি না। আমি ঘুমোবার পর হয়তো চলে গিয়েছিলেন। বাহাদুর বলছিল—

কি বলছিল?

রাত এগারোটা নাগাদ নাকি কাল গিয়েছিলেন শমিতা দেবী।

আপনি জানতে পারেননি কখন গিয়েছেন?

না।

আপনি তাহলে জানতেই পারেননি কখন শমিতা দেবী চলে গেলেন? কিরীটীই প্রশ্নটা করে আবার।

না।

আচ্ছা সুবিনয়বাবু–

বলুন।

আপনার মামার একমাত্র ছেলে তো বিলেতেই সেটে। শুনেছিলাম আর ফিরবে না?

সেই রকমই শুনেছি।

আপনার মামাকে তাঁর সম্পর্কে কখনও কিছু বলতে শুনেছেন?

না।

তিনি চিঠিপত্র লিখতেন না তাঁর বাবাকে?

না, শুনিনি কখনও।

তাহলে তো দেখা যাচ্ছে গগনবাবুর যা কিছু আছে, এই বাড়ি ও অন্যান্য সম্পত্তি টাকাকড়ি সব কিছুর ওয়ারিশন আপনি ও সুবীরবাবুই?

তা আমি কি করে বলব, কাকে তিনি সব কিছু দেবেন বা না দেবেন!

উইল-টুইল কিছু করেছিলেন?

মাসখানেক আগে শুনেছি উইল করেছিলেন মামাবাবু।

কার কাছে শুনলেন?

সুবীরদার মুখে।

তিনি কেমন করে জানলেন কথাটা?

জানি না।

জিজ্ঞাসা করেননি?

না।

অরূপ, সুবিনয়বাবুকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করবে?

আপাত না। আপনি সুবিনয়বাবু এখন যেতে পারেন। সুবীরবাবুকে পাঠিয়ে দিন এ ঘরে। সুবিনয় চলে গেল, আর একটু পরেই সুবীর এসে ঘরে ঢুকল।

অরূপই প্রশ্ন শুরু করে, সুবীরবাবু, কাল রাত্রে শুনলাম আপনি এ বাড়িতে ছিলেন না!

না।

কোথায় গিয়েছিলেন?

এক বন্ধুর বোনের বিয়েতে বেলগাছিয়ায় গিয়েছিলাম। রাত্রে ফিরতে পারিনি। সকালে ফিরেই তো ব্যাপারটা জানতে পারলাম।

কিরীটী ঐ সময় বলে ওঠে, সঙ্গে সঙ্গে বোধ হয় থানায় ফোন করেন!

ঠিক তখুনি ফোন করিনি, কিছুক্ষণ বাদে করি।

আচ্ছা সুবীরবাবু, শমিতা দেবীকে আপনি চিনতেন?

চিনতাম বৈকি। তিনি তো এখানে কাকার কাছে প্রায়ই সন্ধ্যায় আসতেন!

দিনের বেলায় আসতেন না?

হ্যাঁ, আসতেন।

আপনার কখনও কোন কৌতূহল হয়নি, কেন ঘন ঘন শমিতা দেবী আপনার কাকার কাছে আসতেন!

শুনেছিলাম ওঁদের ক্লাবের উনি পেট্রোন একজন। তা ছাড়া ওঁদের দীর্ঘদিনের পরিচয়।

দুজনের মধ্যে খুব ঘনিষ্ঠতা ছিল, তাই না?

সুবীর ইতস্ততঃ করে। কিরীটীর পার্শ্বে উপবিষ্ট যোগজীবনের দিকে তাকায়।

বলুন না। ওঁকে দেখে কোন সংকোচের আপনার কারণ নেই। যা বলতে চান বলুন!

আপনি যখন বললেন বলতে বলছি, ওর বন্ধু–আমার পূজনীয় কাকা, তা হলেও বলব তাঁর অল্প বয়সের স্ত্রীলোকদের ওপরে কেমন একটা দুর্বলতা ছিল, প্রশ্রয় ছিল।

আপনার চোখে কখনও কিছু পড়েছে?

না।

তবে? একথা আপনার মনে হয়েছিল কেন?

চোখে না পড়লেই কি সব কথা সব সময় অস্বীকার করতে পারি আমরা! সুবীর বললে।

তা অবিশ্যি ঠিক। তবু বুঝতেই পারছেন আমি আর একটু স্পষ্ট করে শুনতে চাই কথাটা আপনার মুখ থেকে!

সুবীর এবারে একধারে একটা বুক–কেসের উপরে সাজানো ম্যাগাজিনগুলো দেখিয়ে বলে, ঐ ম্যাগাজিনগুলো একবার উল্টেপাল্টে দেখুন, তাহলেই বুঝতে পারবেন। সব নৃড় পিকচার্সে ভর্তি–সর্বক্ষণই ঐসব নিয়ে মশগুল থাকতেন কাকা!

কিরীটী উঠে গিয়ে সযত্নে রক্ষিত ম্যাগাজিনের থাক থেকে একটা ম্যাগাজিন নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখে সেটা পুনরায় যথাস্থানে রেখে দিয়ে সোফায় এসে বসল।

দেখলেন!

হ্যাঁ। সব ম্যাগাজিনগুলোই অমনি জানলেন কি করে আপনি? আপনিও নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে আপনার কাকার অ্যাবসেন্সে ম্যাগাজিনগুলো উল্টেপাল্টে দেখেছেন! তাই কি?

না। ওসব নোংরা জিনিস আমি হাতে ধরি না।