• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • লেখক
  • My Account
  • লেখক
  • My Account
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা PDF ডাউনলোড

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

০৩. প্রায় মিনিট দশ-পনেরো লাগে

লাইব্রেরি » নীহাররঞ্জন গুপ্ত » কিরীটী অমনিবাস (কিরীটী রায়) » বনমরালী » ০৩. প্রায় মিনিট দশ-পনেরো লাগে

প্রায় মিনিট দশ-পনেরো লাগে সুবিনয়ের নিজেকে সামলে নিতে।

ধীরে ধীরে একসময় নিজেকে সামলে সোজা হয়ে দাঁড়ায় সুবিনয়। আবার মেঝের দিকে তাকায়, পরনে গগনবিহারীর পায়জামা ও ড্রেসিংগাউন।

খালি পা। পায়ের চপ্পল জোড়ার একটা খাটের সামনে পড়ে আছে, অন্যটা মৃতদেহের পায়ের অল্প দূরে।

উপুড় হয়ে পড়ে আছেন গগনবিহারী। একটা হাত ছড়ানো, অন্য হাতটা দেহের নীচে। ঘরের মধ্যে সেন্ট্রাল টেবিলটা উল্টে পড়ে আছে। একটা অর্ধসমাপ্ত হোয়াইট হর্সের বোতল, একটা ভাঙা কাচের গ্লাস, গোটা-দুই সোডার বোতলও মেঝের মধ্যে পড়ে আছে।

সুবিনয় ভেবে ঠিক করতে পারে না অতঃপর তার কি কর্তব্য। সব যেন কেমন গোলমাল হয়ে যাচ্ছে।

বাহাদুর পাশেই দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। সে-ই বলে, অব কেয়া হোগা দাদাবাবু!

রামদেও কোথায়? এতক্ষণে যেন নিজেকে অনেকটা গুছিয়ে নিয়ে প্রশ্নটা করে সুবিনয়।

রামদেও!

হ্যাঁ, রামদেও কোথায়?

সে তো রাত্রে পাশের ঘরেই থাকে?

রামদেও নেহি হ্যায়।

নেহি হ্যায়? কোথায় গেল সে জান?

মুঝে মালুম নেহি হ্যায় দাদাবাবু। সুবেসেই উসকা পাত্তা নেহি।

ওর বৌ রুক্মিণী?

উ তো হ্যায়।

কোথায়?

উসিকা কামরামেই হ্যায়, নিদ যাতা হ্যায়।

অভিতক নিদ যাতা হ্যায়! ওকে ডেকে আন।

বাহাদুর চলে গেল এবং একটু পরে রুক্মিণীকে নিয়ে এসে ঘরে ঢুকল। রুক্মিণী ঘরে পা দিয়েই ভূপতিত গগনবিহারীর রক্তাক্ত নিষ্প্রাণ দেহটার দিকে তাকিয়ে অধস্ফুট একটা চিৎকার করে ওঠে, এ মাইয়া—হায় রাম!

এই রুক্মিণী, কাল রাত্রে তুই পাশের ঘরেই ছিলি তো?

হ্যাঁ, ছিলাম।

কোন শব্দ বা চিৎকার শুনিসনি?

হায় রাম! নেহি দাদাবাবু, কুছ নেহি শুনা।

মিথ্যে কথা। সুবিনয় গর্জন করে ওঠে, সত্যি কথা বল?

হায় রাম! সাচ্ বলছি দাদাবাবু, তোর গোড় লাগি, আমি কিছু জানি না, কিছু শুনিনি।

রামদেও কোথায়, তোর স্বামী?

কেন, সে তত বাড়িতেই আছে।

না, তাকে দেখছি না। কোথায় গিয়েছে সে?

কোথায় আবার যাবে! হয়তো বাজারে গিয়েছে।

এত সকালে বাজারে?

তবে কোথায় যাবে?

ঐ সময় সুবীর এসে ঘরে ঢুকল হন্তদন্ত হয়ে। সে বাড়ি ফিরেই নিচে চাকর ও প্রিয়লালের মুখে দুঃসংবাদটা পেয়েছিল।

ঘরে পা দিয়ে সুবীর বলল, এ কি, কখন হল!

সুবিনয় বললে, মাথার মধ্যে আমার যেন কেমন করছে সুবীরদা। চল চল, এ ঘর থেকে বের হয়ে চল—এখানে দাঁড়িয়ে থাকা ভাল নয়।

পুলিসে একটা খবর দিয়েছ? সুবীর প্রশ্ন করে।

পুলিস!

হ্যাঁ, খুন—সর্বাগ্রে আমাদের পুলিসকেই খবর দেওয়া উচিত। এস। এই রুক্মিণী, বাইরে যা!

রুক্মিণী বাইরে চলে গেল।

সুবীরই পাশের ঘরে গিয়ে নিকটবর্তী থানায় একটা ফোন করে দিল এবং থানায় ফোন করার পর যোগজীবনবাবুকেও একটা ফোন করে দিল।

ফোন করে দুজনে নিচে এসে বসল সুবিনয়ের ঘরে।

সুবিনয় বললে, এখন কি হবে সুবীরদা?

পুলিস এসে যা ব্যবস্থা করে তাই হবে।

কিন্তু ঐ ভাবে ব্লুটালি কে মামাকে খুন করল!

যে ভাবে বুড়ো বয়সে মামা মেয়েমানুষ নিয়ে বেলেল্লাপনা শুরু করেছিলেন, এমন যে একটা কিছু হবে আমি বুঝতেই পেরেছিলাম। তা রামদেও রুক্মিণী কি বলে—ওরা তো রাত্রে পাশের ঘরেই থাকে!

রুক্মিণী বললে সে কিছু জানে না।

বললেই অমনি হল? পাশের ঘরে একটা মানুষ খুন হয়ে গেল, আর ওরা কিছুই জানে? রামদেও কি বলে?

রামদেও নেই।

নেই মানে?

পাওয়া যাচ্ছে না তাকে সকাল থেকে।

তবে হয়তো ঐ বেটারই কীর্তি!

কি বলছ তুমি সুবীরদা?

কাকাবাবুর যা চরিত্র ছিল—হয়তো ঐ ছুকরি রামদেওর বৌটার দিকে হাত বাড়িয়েছিলেন, দিয়েছে বেটা খতম করে!

না, না—

নচেৎ বেটা গায়েবই বা হবে কেন?

হয়তো ব্যাপারটা জানতে পেরে ভয়ে নাভাস হয়ে পালিয়েছে।

সুবীর মৃদু হাসল, ভুলে যেও না সুবিনয়, বেটা এককালে মিলিটারিতে চাকরি করত।

কিন্তু ও তো মামার কাছে অনেকদিন থেকেই আছে।

হুঁ, মেয়েমানুষের ব্যাপারে বিশ্বাস! দুনিয়াটা অত সহজ রাস্তায় চলে না হে সুবিনয়। অত্যন্ত জটিল। আমি তোমাকে বলে রাখছি, ঐ রুক্মিণী ছুঁড়ীকে নিয়েই ব্যাপারটা ঘটেছে। তা গতরাত্রে মিস শমিতা সান্যাল আসেনি?

শুনলাম তো এসেছিলেন কাল রাত্রে—

কে বললে?

রামদেওই বলছিল।

ঐ মিস শমিতা সান্যালটি আর একটি চিজ!

.

আধঘণ্টার মধ্যে থানা অফিসার অরূপ মুখার্জী এসে গেলেন। অরূপ মুখার্জী একেবারে ইয়ং নয়–বয়স প্রায় চল্লিশের কাছাকাছি, লম্বাচওড়া চেহারা। সঙ্গে জনাচারেক সিপাইও আছে।

পুলিসের জিপের আওয়াজ পেয়েই সুবীর সুবিনয়কে নিয়ে বাইরের বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছিল।

অরূপ মুখার্জী জিজ্ঞাসা করলেন, থানায় ফোন করেছিলেন কে?

সুবীর বললে, আমি স্যার।

আপনি?

আমি এই বাড়িতেই থাকি, আমার কাকা এক্স-মিলিটারি অফিসার কর্ণেল গগনবিহারী চৌধুরী খুন হয়েছেন।

কি করে খুন হল?

খুব সম্ভব স্ট্যান্ড্র টু ডেথ!

ডেড বডি কোথায়?

দোতলায়।

চলুন।

ঐ সময় হঠাৎ দূরে কোথা থেকে ক্ষীণ একটা কুকুরের ডাক যেন কানে এল সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে থানা-অফিসার অরূপ মুখার্জীর।

ডাকটা সুবীর ও সুবিনয়ের কানেও এসেছিল।

অরূপ মুখার্জী বললেন, একটা কুকুরের ডাক শুনছি যেন! এ বাড়িতে কোন কুকুর আছে নাকি?

সুবিনয় বলে, হ্যাঁ স্যার, একটা আলসেসিয়ান কুকুর আছে।

কুকুরটা কার সুবিনয়বাবু?

মামার পোষা কুকুর।

মানে যিনি খুন হয়েছেন?

হ্যাঁ।

আশ্চর্য! এ বাড়িতে একটা কুকুর ছিল তাহলে? তা কোথায় কুকুরটা?

সুবিনয় বললে, তাই তো, কুকুরটা কোথায়?

সুবিনয় ও সুবীর তখন দুজনেই জ্যাকির নাম ধরে ডাকতে শুরু করে, জ্যাকি জ্যাকি!

কিন্তু জ্যাকি আসে না। জ্যাকির দেখা পাওয়া যায় না।

সুবীর বলে, আশ্চর্য, সত্যিই এতক্ষণ আমাদের একবারও জ্যাকির কথা মনে পড়েনি। জ্যাকি কোথায় গেল?

একটা বাঘের মত কুকুর।

জ্যাকির ডাক আবারও শোনা গেল।

ওরা সকলে সিঁড়ি থেকে নেমে এল। একতলাটা তন্নতন্ন করে খুঁজতে খুঁজতে বাড়ির পিছনে মালীর জন্য যে ঘর তৈরি করা হয়েছিল, অথচ কোন মালী না থাকায় এতদিন যে ঘরটা খালি পড়েছিল সেখানে সকলে এসে দাঁড়াল।

বাড়ির পিছনে যে জায়গাটা খালি পড়েছিল সেখানেই ছিল ঘরটা। ঘরটার মধ্যে বাড়ি তৈরির সব জিনিসপত্র, কোদাল, শাবল, চুপড়ি, বালতি, লোহার রড, বাঁশ, দড়ি তূপীকৃত করা ছিল এবং বাইরে থেকে তালা লাগানো ছিল। দেখা গেল সেই ঘরের তালা নেই, একটা দড়ির সাহায্যে কড়া দুটো দরজায় শক্ত করে বাঁধা আর সেই ঘরের ভিতর থেকে কুকুরের ডাক শোনা যাচ্ছে, দরজার গায়ে নখের আঁচড়ের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

ডাকটা এবারে বেশ স্পষ্ট।

অরূপ মুখাজী থমকে দাঁড়ালেন দরজার সামনে এসে।

কুকুরটা আপনাদের চেনে তো! সুবীর ও সুবিনয়ের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন।

হ্যাঁ, স্যার। সুবীর বললে।

তাহলে আপনারাই কেউ দরজাটা খুলুন তো!

সুবীরই এগিয়ে গিয়ে দরজাটার দড়ি খুলে দিল। ঘরটা অন্ধকার, একটা বিশ্রী ভ্যাপসা গন্ধ দরজাটা খুলতেই ওদের নাকে এসে যেন ঝাপটা দেয়।

জ্যাকি ডাকতে ডাকতে ঘর থেকে বের হয়ে এল দরজাটা খুলে দিতেই। কিন্তু তার তেজ ও গতির ক্ষিপ্রতা যেন নেই আর।

কেমন যেন একটা মিয়ানো ভাব।

কুকুরটা কিন্তু ওদের দিকে তাকালও না, একবার অরূপ মুখার্জীর সামনে এসে ওর গন্ধ শুঁকে সোজা ভিতরের দিকে চলে গেল।

সকলে ওরা অনুসরণ করে জ্যাকিকে।

জ্যাকি আগে চলেছে, ওরা তিনজন পিছনে পিছনে।

জ্যাকি ভিতরে ঢুকে সোজা সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যেতে থাকে। পিছনে পিছনে সিঁড়ি বেয়ে ওঠে ওরা তিনজন।

জ্যাকি এসে একেবারে খোলা দরজাপথে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে গগনবিহারীর শয়নঘরে প্রবেশ করল, ওরাও ঘরে গিয়ে ঢুকল।

জ্যাকি ঘরে ঢুকে সোজা গিয়ে ভূপতিত গগনবিহারীর মৃতদেহটার সামনে দাঁড়িয়ে আপাদমস্তক শুঁকলো দেহটা, তারপর হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল মৃতদেহের কাছেই একেবারে।

তারপরই হঠাৎ মুখ তুলে জ্যাকি কয়েকবার ডাকল। ডাকল ক্ষীণ, ক্লান্ত কিন্তু দীঘায়ত। মনে মনে যেন প্রভুর মৃত্যুতে কাঁদছে।

আশ্চর্য, জ্যাকির চোখে সত্যিই জল! সত্যিই জ্যাকি কাঁদছে।

তিনজনেই সেই করুণ দৃশ্য দেখে একেবারে নির্বাক। বোবা যেন!

Share on FacebookShare on TwitterShare on WhatsAppShare on TelegramShare on SMS
Category: বনমরালী
পূর্ববর্তী:
« ০২. নীচের তলায় দুটো ঘরে
পরবর্তী:
০৪. যোগজীবন যখন ফোনটা পেলেন »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑