যখন তুমি শোকের বাড়ি থেকে ফিরে এলে

তখন তুমি বিষাদে আছো, তখন তোমাকে
লেহন করছে শোকের বাড়ির ভারী ছায়া, তখন তোমার
সত্তায় লোবানের ঘ্রাণ, সদ্য কেনা মার্কিন
কাপড়ের কেমন গন্ধ, কোরানের
আয়াতের সুর, অনেকের বিলাপধ্বনি; তখন সেই
দুপুরে জলধারা,
কোনো মৃত মুখ দেখতে তোমার ভালো লাগে না।

শোকের বাড়ি থেকে ফিরে এসে তুমি
আমার সঙ্গে কথা বললে টেলিফোনে। তোমার
কণ্ঠস্বরে আমি বিষাদের মুখ দেখলাম,
শুনতে পেলাম চাপা হাহাকার। সেই মুহূর্তে তুমি
মৃত্যুর ছায়ার দাঁত-নখের আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত।
আমি তোমাকে ক্যামেলিয়া আর
থালাভর্তি স্বর্ণচাঁপা আর সযত্নে গাঁথা
বেলফুলের মালার কথা স্মরণ করিয়ে দিলাম।
তোমার চেতনার প্রান্তরে ছুটিয়ে দিলাম এক পাল
হরিণ, তোমাকে স্নাত করলাম
ঝর্ণাতলার গানে, আমি তোমার মতো ক’রে
তোমাকে ভালোবাসার কথা শোনালাম।

মৃত্যুর থাবার নিচে ছিল যে-বাড়ি, যে বাড়ি আমি
কখনো দেখব না, যে বাড়ির প্রতিটি ঘরে
কলরব করছিল শোকের কালো অক্ষরসমুদয়,
সে বাড়ির ছায়া তোমার মন থেকে
সরিয়ে ফেলার উদ্দেশ্যে আমি তোমার কানে
অর্পণ করলাম জীবনের স্তব। আখেরে
সব কিছুই মৃত্যু আর অবলুপ্তির অধীন ভেবে
তুমি বিষাদকেই প্রাধান্য দিলে সেই প্রাণবন্ত দুপুরে।
২১/৫/৯৫